সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দ্বিপাক্ষিক সিরিজ জিতলেই ভারতীয় দলের তারকাদের মুখে শোনা যায় একটা চেনা কথা। ‘আমাদের দল সঠিক পথে এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা সঠিক প্রসেস ফলো করছি।’ আর হারলেই সেই এক ভাঙা রেকর্ডের মতো ওঁরা কানের সামনে এসে বলে দেন, ‘মাঝেমধ্যে হার ভাল। এই হার থেকে শিক্ষা নিয়ে আমরা এগিয়ে যাব। আগামীদিনে আরও শক্তিশালী হব!’ ওয়েস্ট ইন্ডিজের (West Indies) কাছে টি-টোয়েন্টি সিরিজ হেরে বিরাট কোহলি (Virat Kohli), রোহিত শর্মার (Rohit Sharma) মতো সেই একই বুলি আউরে গেলেন হার্দিক পাণ্ডিয়া (Hardik Pandya)।
ক্যারিবিয়ানদের কাছে ৩-২ ব্যবধানে সিরিজ হারের পর টিম ইন্ডিয়ার (Team India) অধিনায়ক হার্দিক অজুহাত দিয়ে বলেন, “ব্যাটিংয়ে ১০ ওভারের পরই পিছিয়ে পড়ি। আমার যেমন ব্যাটিং করা উচিত ছিল, পারিনি। নিজেদের চ্যালেঞ্জ করতে চেয়েছিলাম। সে কারণেই টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিই। আমাদের দীর্ঘ পথ পেরোতে হবে। একটা সিরিজ হার নিয়ে চিন্তিত নই। এখান থেকেই শিখতে হবে। অনেক ক্ষেত্রে হারাটা ভালই। অনেক কিছু শেখা যায়।”
[আরও পড়ুন: WI vs IND: টেস্ট-ওডিআই খোয়ালেও, টি-টোয়েন্টির লড়াইয়ে ভারতকে হারিয়ে সিরিজ ওয়েস্ট ইন্ডিজের]
২০২৪ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। কিন্তু ভারতীয় দলের মাথায় আদৌ কি সেই ব্যাপারটা ছিল? সিরিজের ফলাফল বোঝাল, এখনও অনেকটা পথ হাঁটা বাকি। ক্যারিবিয়ানরা টেস্ট ও একদিনের ফরম্যাটে বিপক্ষকে টেক্কা দিতে না পারলেও, টি-টোয়েন্টিতে যে কোনও দলের বিরুদ্ধে লড়াই দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। দেশের সেরা ব্যাটাররাই ভারতের বিরুদ্ধে খেলেছিলেন। তাঁরাই জেতালেন সিরিজ। ব্রেন্ডন কিং (Brendon King) ও নিকোলাস পুরান (Nicholas Pooran) বাইশগজে দাপট দেখালেন। এদিকে ব্যাটিং, বোলিং দুই বিভাগেই ডাহা ফেল ভারত।
সিরিজ হারের কারণ জানতে যাওয়া হলে হার্দিক ফের যোগ করেন, “এই ম্যাচগুলো আমাদের কাছে ড্রেস রিহার্সাল। এখানে অনেক চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করার জন্যই মাঠে নেমেছিলাম। এর চেয়ে বেশি কিছু জনসমক্ষে বলতে রাজি নই। ছেলেরা যথাসাধ্য চেষ্টা করেছে। তবে আমাদের থেকে বিপক্ষ দল আরও ভাল পারফর্ম করেছে। সেটা মেনে নিতে অসুবিধা নেই। আর তাছাড়া এখন আমাদের লক্ষ্য ৫০ ওভারের বিশ্বকাপ। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শুরু হতে এখনও অনেক সময় বাকি। তাই এই সিরিজ হার নিয়ে বেশি ভেবে লাভ নেই।”
ঠিক যেন চতুর্থ টি-টোয়েন্টি ম্যাচের রিপ্লেকা! চতুর্থ ম্যাচে যশস্বী জসওয়াল (Yashasvi Jaiswal) ও শুভমান গিলের (Shubman Gil) উপর ভর করে ৯ উইকেটে জিতে সিরিজে সমতা ফিরিয়েছিল ভারত। ঠিক সেভাবেই এবার বাজিমাত করল ব্রায়ান লারার দেশ। কাইল মায়ার্সকে দ্রুত অর্শদীপ সিং ফেরালেও, লাভ হয়নি। কারণ দ্বিতীয় উইকেটে মারকুটে মেজাজে রান তুলে ম্যাচ ঘুরিয়ে দেন কিং ও পুরান। তাঁদের ১০৭ রানের জুটি ভারতকে হারিয়ে দিল। তবে বৃষ্টির পর ফের খেলা শুরু হতেই তিলক বর্মার বলে হার্দিককে ক্যাচ দিয়ে আউট হন নিকোলাস পুরান। এই বাঁহাতি ৩৫ বলে ৪৭ রান করেন। তাঁর ইনিংসে ছিল ১টি চার ও ৪টি ছক্কা। পুরান ফিরে যাওয়ার পর ক্রিজে আসেন সাই হোপ। তাঁকে সঙ্গে নিয়ে ম্যাচ জেতার বাকি কাজ অনায়াসে সেরে ফেলেন ব্রেন্ডন কিং। ব্রেন্ডন কিং ৫৫ বলে ৮৫ রানে অপরাজিত থাকেন। তাঁর ইনিংস ৫টি চার ও ৬টি ছক্কা দিয়ে সাজানো ছিল। অন্যদিকে সাই হোপ ১৩ বলে ২২ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন।