ওয়েস্ট ইন্ডিজ – ১৭১/২ (ব্রেন্ডন কিং – ৮৫* , নিকোলাস পুরান- ৪৭)
ভারত – ১৬৫/৯ ( সূর্য – ৬১, রোমারিও শেফার্ড – ৪/৩১)
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৮ উইকেটে জয়ী
৩-২ ব্যবধানে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতল ওয়েস্ট ইন্ডিজ
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ঠিক যেন চতুর্থ টি-টোয়েন্টি ম্যাচের রিপ্লেকা! গত ম্যাচে যশস্বী জসওয়াল (Yashasvi Jaiswal) ও শুভমান গিলের (Shubman Gil) উপর ভর করে ৯ উইকেটে জিতে সিরিজে সমতা ফিরিয়েছিল ভারত। বৃষ্টিবিঘ্নিত পঞ্চম ম্যাচে সেই একই ভূমিকা পালন করে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে (West Indies) টি-টোয়েন্টি সিরিজ জেতালেন ব্রেন্ডন কিং (Brendon King) ও নিকোলাস পুরান (Nicholas Pooran)। দুই ক্যারিবিয়ান ব্যাটারের দাপটে দাঁড়াতেই পারল না হার্দিক পাণ্ডিয়ার (Hardik Pandya) দল। ফলে টিম ইন্ডিয়াকে (Team India) পাল্টা দিয়ে ৮ উইকেটে জিতে ৩-২ ব্যবধানে টি-টোয়েন্টি সিরিজে নাম লেখাল ক্যারিবিয়ানরা। ১৮ ওভারে মাত্র ২ উইকেটে ১৭১ রান তুলে ম্যাচ ও সিরিজ জিতে নেয় ক্যারিবিয়ানরা।
যেভাবে চতুর্থ ম্যাচে ক্যারিবিয়ানদের ৯ উইকেটে ভারত হারিয়েছিল, ঠিক সেভাবেই এবার বাজিমাত করল ব্রায়ান লারার দেশ। কাইল মায়ার্সকে দ্রুত অর্শদীপ সিং ফেরালেও, লাভ হয়নি। কারণ দ্বিতীয় উইকেটে মারকুটে মেজাজে রান তুলে ম্যাচ ঘুরিয়ে দেন কিং ও পুরান। তাঁদের ১০৭ রানের জুটি ভারতকে হারিয়ে দিল। তবে বৃষ্টির পর ফের খেলা শুরু হতেই তিলক বর্মার বলে হার্দিককে ক্যাচ দিয়ে আউট হন নিকোলাস পুরান। এই বাঁহাতি ৩৫ বলে ৪৭ রান করেন। তাঁর ইনিংসে ছিল ১টি চার ও ৪টি ছক্কা। পুরান ফিরে যাওয়ার পর ক্রিজে আসেন সাই হোপ। তাঁকে সঙ্গে নিয়ে ম্যাচ জেতার বাকি কাজ অনায়াসে সেরে ফেলেন ব্রেন্ডন কিং। ব্রেন্ডন কিং ৫৫ বলে ৮৫ রানে অপরাজিত থাকেন। তাঁর ইনিংস ৫টি চার ও ৬টি ছক্কা দিয়ে সাজানো ছিল। অন্যদিকে সাই হোপ ১৩ বলে ২২ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন।
মাত্র কয়েক ঘন্টা আগের কথা। দুই তরুণ ওপেনার যশস্বী ও শুভমানের মারকুটে ওপেনিং জুটির উপর ভর করে সমতা ফিরিয়েছিল ভারতীয় দল। কিন্তু কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ছবিটা একেবারে বদলে যাবে সেটা কে জানত! ক্রিকেট ঘোর অনিশ্চতার খেলা। কে কখন বাজিমাত করে আগেভাবে বলে দেওয়া যায় না। আর তাই হয়তো এদিন টসে জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিলেও, সেটা বুমেরাং হল। একমাত্র সূর্য কুমার যাদব ছাড়া আর কেউ ক্যারিবিয়ান বোলারদের সামনে টিকতেই পারলেন না। ফলে নির্ণায়ক ম্যাচে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে মাত্র ১৬৫ রানে আটকে গেল ভারত। ‘স্কাই’ দ্যুতি ছড়িয়ে ৬১ রান না করলে ভারতীয় ব্যাটিংয়ের কঙ্কালসার চেহাড়া আরও করুণভাবে ধরা দিত।
[আরও পড়ুন: Rohit Sharma: এশিয়া কাপের আগে তিরুপতি মন্দিরে সপরিবারে ‘হিটম্যান’, ভিডিও হল ভাইরাল]
বিপক্ষের জোরে বোলার আকিল হোসেইন শুরুতেই যশস্বী (৫) ও শুভমানকে (৪) ফিরিয়ে জোড়া ধাক্কা দিয়েছিলেন। ১৭ রানে ২ উইকেট হারিয়ে বেশ চাপে পড়ে যায় ভারত। সেখান থেকে দলকে টেনে তুলে ধরার চেষ্টা করেছিলেন তিলক বর্মা ও সূর্য। কিন্তু ফর্মে থাকা তিলক ব্যক্তিগত ২৭ রানে ফিরতেই, ভারতের মিডল অর্ডারে ধস নামে। সূর্য একদিক থেকে দ্রুত রান তোলার চেষ্টা করলেও, রোমারিও শেফার্ড ও জেশন হোল্ডারে জোরে বোলিংয়ের দাপটে একে একে ফিরতে থাকেন সঞ্জু স্যামসন, হার্দিক ও অক্ষর প্যাটেল। মাত্র দুই ওভারে ৪ উইকেটে হারায় টিম ইন্ডিয়া। তবুও এমন ভঙ্গুর ব্যাটিংয়ের মধ্যেও ৪৫ বলে ৬১ রান করে দলের রানকে ১৬৫-তে নিয়ে যান সূর্য। রোমারিও শেফার্ড ৩১ রানে ৪ ও আকিল হোসেইন ২৪ রানে ২ উইকেট নিলেন। ৩৬ রানে ২ উইকেট নিয়ে মাঠে ছাড়েন হোল্ডার।
ফর্মে থাকা কিং ও পুরানের সামনে এই রান চেজ করা একেবারেই চাপের ছিল না। মাথা ঠাণ্ডা রেখে ভারতের বোলারদের বুঝে নিয়ে দলকে সিরিজ জেতালেন। এবং এই সিরিজ হারতেই ফের একবার হার্দিকের অধিনায়কত্ব নিয়ে উঠে গেল একাধিক প্রশ্ন। এখন জসপ্রীত বুমরাহের নেতৃত্বে আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে তরুণ ‘মেন ইন ব্লু’ ব্রিগেড কেমন পারফরম্যান্স করে সেটাই দেখার।