অর্ণব দাস, বারাকপুর: পানিহাটির নিহত প্রাক্তন কাউন্সিলর অনুপম দত্তের স্ত্রী বর্তমান কাউন্সিলর মীনাক্ষী দত্ত নিরাপত্তা বাড়ানোর দাবি জানিয়েছিলেন। দাবি জানানোর চব্বিশ ঘণ্টা পর বুধবারই তাঁর নিরাপত্তার জন্য আরও একজন পুলিশকর্মী নিয়োগ করার কথা জানানো হল বারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের পক্ষ থেকে। একইসঙ্গে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য প্রয়াত কাউন্সিলরের স্ত্রী হেল্পলাইন নম্বরে ফোন করেন বলেও জানা গিয়েছে।
এদিন বারাকপুর কমিশনারেটের পুলিশ কমিশনার অজয় ঠাকুরের সঙ্গেও দেখা করেন মীনাক্ষী। এরপরই তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, “পুলিশ কমিশনারকে জানিয়েছি আমার স্বামী যাতে সুবিচার পায়। উনিও সবরকম সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। এছাড়াও আমার নিরাপত্তার জন্য আরও একজন পুলিশকর্মী দেওয়া হয়। আগে একজন পুলিশকর্মী সঙ্গে থাকত। এবার থেকে দু’জন পুলিশকর্মী ২৪ ঘন্টার জন্য থাকবে।” এর আগেও মীনাক্ষী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করার অনুরোধ জানিয়েছিলেন। মঙ্গলবারও তিনি এবিষয়ে সংবাদমাধ্যমের সামনে অনুরোধ করেন। এই প্রসঙ্গে এদিন তিনি বলেন, “অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য হেল্পলাইন নম্বরে ফোন করেছিলাম। সেখানে যা যা প্রশ্ন করেছে তার উত্তর দিয়ে সবটা জানিয়েছি।”
[আরও পড়ুন: অসুস্থতার যুক্তি খারিজ, ফের ১৪ দিনের জেল হেফাজতে পার্থ-অর্পিতা]
প্রসঙ্গত, চলতি বছর ১৩ মার্চ প্রকাশ্যে দুষ্কৃতীর ছোঁড়া পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জের গুলিতে নিহত হন পানিহাটি পুরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অনুপম দত্ত। ঘটনার রাতেই পুলিশ সুপারি কিলার অমিত পণ্ডিতকে গ্রেপ্তার করে। তারপর গ্রেপ্তার হয় অন্যতম অভিযুক্ত বাপি পণ্ডিত। প্রায় পাঁচ মাস পর সোমবার বাপি পণ্ডিত জামিন পেলে আগরপাড়া এলাকার বাসিন্দারা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। রাতে বিটি রোডের তেঁতুলতলায় টায়ার জ্বালিয়ে রাস্তা অবরোধে করে বিক্ষোভ দেখান প্রয়াত কাউন্সিরের অনুগামীরা।
অন্যদিকে, জামিনের খবর পেয়ে দুই সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে ঘরে আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা করেন প্রয়াত কাউন্সিলরের স্ত্রী মীনাক্ষী। যদিও পরিবার এবং প্রতিবেশীদের তৎপরতায় তাঁকে উদ্ধার করে সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এই ঘটনার পরে বারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের পক্ষ থেকে বাপি পণ্ডিতের জামিনের বিরোধিতায় সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানানোর ব্যাপারে পরিকল্পনা নেওয়া হয়। এই প্রসঙ্গে বারাকপুর কমিশনারেটের পুলিশ কমিশনার অজয় ঠাকুর বলেন, “একজন অভিযুক্তর হাই কোর্ট থেকে জামিন হয়েছে। জামিনের অর্ডারটা এখনও আমরা পায়নি। সেটা পাওয়ার পরই সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।” মীনাক্ষীর সঙ্গে দেখা করার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “অনুপমবাবুর স্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে। তাঁর সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”