সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দিনের পরদিন অপমান, হেনস্তা আর সইতে পারছেন না। পরিবার-সহ স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদন জানালেন নিহত গ্যাংস্টার বিকাশ দুবের (Gangster Vikas Dubey) স্ত্রী রিচা। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের (Yogi Adityanath) কাছে এই আবেদন জানিয়েছেন তিনি।
লখনউয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন রিচা (Richa Dubey)। সেখানেই পরিবার-সহ স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদন জানান। রিচার অভিযোগ, বিকাশ দুবের মৃত্যুর পর থেকেই তাঁকে এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের হেনস্তা করা হচ্ছে। আর এই কাজ করছেন কিছু সরকারি আধিকারিক। রিচা জানান, বিকাশের মৃত্যুর পর থেকেই আর্থিক অনটনে দিন কাটাচ্ছেন তাঁরা। নিজের গয়না বেচে কোনওমতে সংসার চালাচ্ছেন তিনি। সন্তানদের স্কুলে ফি বহুদিন ধরে বাকি। এমন পরিস্থিতিতেই প্রতিবেশীদের অপমান সহ্য করতে হচ্ছে। আবার সরকারি আধিকারিকদের কাছেও হেনস্তা হতে হচ্ছে।
[আরও পড়ুন: মাদ্রাজ IIT’র ক্যাম্পাসে অস্থায়ী অধ্যাপকের রহস্যমৃত্যু, উদ্ধার অর্ধদগ্ধ দেহ]
৬০ টি মামলায় অভিযুক্ত বিকাশ দুবেকে (Vikash Dubey) গত বছর জুলাইয়ে পাকড়াও করতে গিয়ে গুলিতে ঝাঁজরা হয়ে যান উত্তরপ্রদেশের ৮ পুলিশ কর্মী। তারপর গা ঢাকা দেয় বিকাশ। সেই সময় বিকাশের একের পর এক সাগরেদকে এনকাউন্টারে খতম করে যোগীর পুলিশ। শেষপর্যন্ত মধ্যপ্রদেশের উজ্জয়িনীর মহাকাল মন্দির থেকে বিকাশকে গ্রেপ্তার করা হয়। উজ্জয়িনী থেকে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ তাকে কানপুর নিয়ে আসার আগে মাঝ পথে পুলিশের গাড়ি উলটে যায় বলে দাবি করা হয়। সেই সুযোগেই নাকি পালানোর চেষ্টা করে বিকাশ। পুলিশের বন্দুক ছিনিয়ে নিয়ে পুলিশ কর্মীদের দিকেই নাকি গুলি চালাতে শুরু করে এই গ্যাংস্টার। পালটা পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয় তার। ময়না তদন্তের রিপোর্টে দাবি করা হয়, মোট ৬টি গুলি লেগেছিল বিকাশের। ফেক এনকাউন্টারে বিকাশের মৃত্যু হয়েছে, এমন অভিযোগ উঠেছিল। পরে অবশ্য সেই খারিজ করে স্পেশ্যাল ইনভেস্টিগেশন টিম জানিয়ে দেয় খুনের তথ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি। ক্লিনচিট পায় উত্তরপ্রদেশ পুলিশ (UP Police)।
রিচার অভিযোগ, স্বামীর মৃত্যুর ডেথ সার্টিফিকেট পর্যন্ত তিনি পাননি। কারণ ময়নাতদন্তের স্লিপে বিকাশের বাবার নাম ভুলভাবে লেখা ছিল। যা ফিউনারেল স্লিপেও আবার লেখা ছিল। সেই কারণে ডেথ সার্টিফিকেট দেওয়া হয়নি। ফলে বিমার টাকাও তিনি তুলতে পারেননি। রিচার বক্তব্য, তাঁর স্বামী যদি কোনও অন্যায় কাজ করে থাকেন তাহলে তার শাস্তি তিনি পেয়ে গিয়েছেন। সেই কারণে তাঁকে ও তাঁর পরিবারকে কেন বারবার হেনস্তা হতে হবে? এই প্রশ্ন তুলেই পরিবার-সহ স্বেচ্ছামৃত্যুর আরজি জানান নিহত গ্যাংস্টারের স্ত্রী।