স্টাফ রিপোর্টার, কলকাতা ও নিজস্ব সংবাদদাতা, হুগলি: সিঙ্গুর নিয়ে দ্বিচারিতা করছেন শুভেন্দু অধিকারী। এমনই অভিযোগ তুলল তৃণমূল। মঙ্গলবার সিঙ্গুরে গিয়ে শুভেন্দু দাবি করেন, ‘‘বিজেপি ক্ষমতায় এলে ফুল-মালা দিয়ে টাটাকে নিয়ে আসা হবে। সিঙ্গুরে টাটার কারখানা, শিল্প ধ্বংস করা হয়েছে।’’
শুভেন্দুর এই আক্রমণের পর পালটা কটাক্ষ করেছে তৃণমূল। বিরোধী দলনতোর দিকে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh) বলেন, ‘‘সিঙ্গুর আন্দোলনের সময় তো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) সঙ্গেই ছিলেন শুভেন্দু। যদি সিঙ্গুরে ওঁর তৃণমূলের নীতি পছন্দ না হয় তাহলে তখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জিন্দাবাদ, কৃষি জমি বাঁচাও আন্দোলন জিন্দাবাদ, এসব বলে লোকসভায় চলে গেলেন। তখন কেন কিছু বলেননি? আজ ২০২৩ সালে এসে বলছেন সেটা ভুল ছিল।’’
[আরও পড়ুন: নিয়োগ দুর্নীতির পান্ডা, জীবনের হাতেখড়ি তাঁর কাছেই, CBI জেরায় হদিশ মিলল জীবনেকৃষ্ণের ‘গুরু’র]
মঙ্গলবার সিঙ্গুরের বড়া হাওয়াখানার মাঠে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) সভা থেকে সিঙ্গুর আন্দোলনের প্রসঙ্গ তুলে রাজ্যের শাসকদলকে নিশানা করেন। তাঁর অভিযোগ, “সেই সময় কৃষি জমি ফিরিয়ে দেওয়ার উদ্দেশে আন্দোলন করা হয়নি। বড় সর্বনাশ করা হয়েছে টাটার কারখানা ধ্বংস করে। বিজেপি ক্ষমতায় এলে টাটাকে ফুলের মালা পরিয়ে রাজ্যে আনা হবে।” বিরোধী দলনেতার এই ‘দ্বিচারিতা’র জবাব দিতে দেরি করেনি শাসকদল। সেই সময় আন্দোলনে শুভেন্দু অধিকারীও ছিলেন, এখন তিনি উলটো সুরে কথা বলছেন বিজেপিতে গিয়ে। এই প্রশ্ন তুলেই কার্যত বিরোধী দলনেতাকে তুলোধনা করেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। আজ ২০২৩-এ এসে শুভেন্দু কেন বলছেন সিঙ্গুরে ভুল হয়েছে, এই প্রশ্ন তুলে কুণালের বক্তব্য, ‘‘সিঙ্গুর আন্দোলন হল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে। পরে নন্দীগ্রাম আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন মমতা। তার উপর দাঁড়িয়ে অধিকারী প্রাইভেট লিমিটেডের এক একজন এক একটা পদে বসে গেলেন। ওঁর (শুভেন্দু) বাবা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হলেন। আর শুভেন্দু সিবিআই-ইডি থেকে বাঁচতে বিজেপিতে গিয়ে এখন ২০২৩-এ বিজেপির জন্যই ঘেউ ঘেউ করছেন। সিঙ্গুরে একসময় যে মিছিলে শুভেন্দু থাকতো, কৃষকদের লড়াইয়ে বলতো আমিও আছি। আর এখন বলছে সেটা ভুল ছিল। অকৃতজ্ঞ-বেইমান না হলে কেউ একথা বলবে।’’
[আরও পড়ুন: ‘আজ বিলকিসের সঙ্গে হয়েছে, কাল আরেকজনের সঙ্গে হবে’, ফের গুজরাটকে তোপ সুপ্রিম কোর্টের]
এদিকে, শুভেন্দু এদিন দাবি করেন, ‘‘বিজেপির ৭০ জন বিধায়ক রাজ্যের সরকার ফেলে দেওয়ার পক্ষে যথেষ্ট। এর জন্য সেটিং অপজিশনের প্রয়োজন নেই।’’ শুভেন্দুর এসব বক্তব্যকে পাগলের প্রলাপ ও মস্তিষ্ক বিকৃতি বলে কটাক্ষ করেছে তৃণমূল। অন্যদিকে, শুভেন্দুর দাবি, বাংলার বিজেপি এখন স্বনির্ভর। উপর থেকে কোন নেতার প্রয়োজন নেই। বিরোধী দলনেতা যখন এই দাবি করছেন, তখন তাঁর জেলার বিজেপি সভাপতিই দলীয় বৈঠকে বলেছেন নন্দীগ্রামে বুথসশক্তিকরণ অভিযান ভাল হয়নি। নাম না করে বিরোধী দলনেতাকেই নিশানা করেছেন তিনি।