সুকুমার সরকার, ঢাকা: বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকার গড়ছে সেনা। সোমবার দুপুরে ঘোষণা করলেন সে দেশের সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামান। অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগের পরই পড়শি দেশে কার্যত সেনাশাসন ফিরল। সমস্ত হত্যার বিচার করা হবে বলেও আশ্বাস দেন তিনি। পাশাপাশি, উন্মত্ত জনতাকে শান্তি বজায় রাখার আর্জিও জানিয়েছেন সেনাপ্রধান।
এদিন সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, "রাজনৈতিক ক্রান্তিকাল চলছে। একটি অন্তবর্তী সরকার গঠন করা হবে। সব হত্যার বিচার হবে। সেনাবাহিনীর ওপর আস্থা রাখুন। আমরা রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছি।" তবে এই সরকারে আওয়ামি লিগের সদস্যরা থাকবে কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়। কারণ, দেশজুড়ে হাসিনা ও তার দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ চরমে উঠেছে। তাদের দলীয় কার্যালয় ভাঙচুর করা হচ্ছে। ফলে অন্তর্বর্তী সরকারে তাদের দলের সদস্যদের রাখা হবে কি না, তা নিয়ে জল্পনা দানা বাঁধছে।
বাংলাদেশের উন্মত্ত জনতার উদ্দেশে সেনাপ্রধানের অনুরোধ, "দেশে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখুন। আপনারা আমার উপর আস্থা রাখেন, একসঙ্গে কাজ করি। দয়া করে সাহায্য করুন। মারামারি সংঘাত করে আর কিছু পাব না। সংঘাত থেকে বিরত হন। সবাই মিলে সুন্দর দেশ গড়েছি।"
[আরও পড়ুন: ‘স্বাধীন দেশে স্বাগত’, হাসিনা বাংলাদেশ ছাড়তেই ‘নিকৃষ্ট, নিষ্ঠুরতম স্বৈরশাসক’ কটাক্ষ ফারুকীর]
কোন কোন রাজনৈতিক দল সঙ্গে বৈঠক করেছেন সেনাপ্রধান? সেই প্রশ্নের উত্তরে সেনাপ্রধান বলেন, "বিএনপি, জাতীয় পার্টি ও জামাত-ই-ইসলামির সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। অধ্যাপক আফিস নজরুল ও জোনায়েত সাকিও বৈঠকে ছিলেন।" পরবর্তী কর্মসূচি নিয়ে তিনি বলেন, "আমরা এখন বঙ্গবভনে যাব। সেখানে অন্তবর্তী সরকার গঠনের ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা হবে।" ক্ষুব্ধ ছাত্রদের শান্ত হওয়ারও পরামর্শ দেন।
বাংলাদেশ জুড়ে চলছে কারফিউ। উপেক্ষা করেই রাজপথে নেমেছেন কাতারে-কাতারে মানুষ। ঢাকার রাজপথে তাঁদের গগনভেদী প্রতিবাদী চিৎকার শেখ হাসিনাকে নিয়ে। ভাঙা হচ্ছে সোনার বাংলাদেশের জনক বঙ্গবন্ধুর মূর্তি পর্যন্ত। পদ্মাপারের ইতিহাসে এমন ‘কালো দিন’ সম্ভবত আসেনি। গোটা দেশ সেনাবাহিনীর দখলে। এমন পরিস্থিতিতে অন্তর্বতী সরকার গড়বে সেনা।