ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: পাহাড় সমস্যার স্থায়ী সমাধানের আশ্বাস দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। মঙ্গলবার কার্শিয়াংয়ের প্রশাসনিক বৈঠক থেকে পাহাড়ে বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান, উন্নয়নের পাশাপাশি স্থায়ী সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। আর এই কাজে পাহাড়ের ছোট-বড় সব দলকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানালেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, “আমাকে সুযোগ দিন। পাহাড়ের স্থায়ী সমাধান করে দেব।”
বিভিন্ন সময় আলাদা রাজ্যের দাবিতে উত্তপ্ত হয়েছে পাহাড়। নষ্ট হয়েছে সরকারি সম্পত্তি। থমকে গিয়েছে পাহাড়ের উন্নয়ন। তৃণমূলের অভিযোগ, সেই অশান্তিতে বারবার ইন্ধন জোগাচ্ছে বিজেপি। পাহাড়কে আলাদা রাজ্য করারও ‘জুজু’ দেখায় কেন্দ্র। আর এই প্রস্তাব দিয়ে পাহাড়ের স্থানীয় দলগুলিকে নিজেদের দিকে টানার চেষ্টা করে তাঁরা। এবার সেই সমস্ত প্ররোচনা, রাজনৈতিক টানাপোড়েনের ইতি টানতে চাইলেন মুখ্যমন্ত্রী।
[আরও পড়ুন: দার্জিলিংয়ে ‘সোনার খনি’ আছে, কাজে লাগাতে হবে! বিপুল কর্মসংস্থানের হদিশ দিলেন মমতা]
পাহাড়ের স্থায়ী সমাধান নিয়ে মমতা বলেন, “বাইরে থেকে এসে রাজনীতি করে চলে যাচ্ছে। দার্জিলিংকে ভেঙে দিচ্ছে। সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে কাজ হবে। পাহাড়ের পার্মানেন্ট সলিউশন হবে পাহাড়ের মানুষকে নিয়েই।” উল্লেখ্য, দিন কয়েক আগে কেন্দ্রীয় সরকার পাহাড় নিয়ে একটি বৈঠক ডেকেছিল। তাতে পাহাড়ের স্থানীয় নেতা বিমল গুরুং, রোশন গিরিরা ব্রাত্য ছিলেন। এদিন তাঁদের নিয়েই সমাধানের পথে হাঁটার ইঙ্গিত দিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
মমতা এদিন প্রশ্ন তোলেন, “কাশ্মীরে কেন রক্ত ঝরবে? পাহাড়ে কেন রক্ত ঝরবে? আমি শান্তির পক্ষে। কিন্তু সরকার থাকলেই সব করতে পারে না।” মমতার আরও অভিযোগ, “এখানে বহিরাগতরা গোলমাল পাকায়। ভিতরের কেউ এসব করে না।” এ প্রসঙ্গে বলে রাখা ভাল, একদিন আগেই বিমল গুরুং স্থায়ী সমাধানের দাবি তুলেছিলেন।
[আরও পড়ুন: কাঁকড়া ধরতে গিয়ে বাঘের মুখে মৎস্যজীবী, প্রাণপণ লড়াই করেও বাঁচাতে পারলেন না সঙ্গীরা]
স্থায়ী সমাধানের জন্য একাধিক পদক্ষেপের কথাও ঘোষণা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জিটিএ নির্বাচনেরও ঘোষণা করেছেন তিনি। মমতা বলেন, “ভোটার তালিকা সংশোধন হলেই জিটিএ নির্বাচন করা হবে। তার আগে নিজেরা কথা বল। সমস্যা মেটাও। ঝগড়া কর না। একসঙ্গে কাজ কর।” ২০০১ সাল থেকে পাহাড়ে পঞ্চায়েত ভোট হয়নি। এ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “এখানে দ্বিস্তরীয় পঞ্চায়েত ব্যবস্থা রয়েছে। ত্রিস্তরীয় করা হবে।” এদিনের বৈঠকে রোশন গিরি এবং অনীত থাপা পাহাড়ের জন্য আলাদা স্কুল সার্ভিস কমিশনের দাবি করেছেন। সব সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন মমতা। শুধু তাই নয়, পাহাড়ের উন্নয়নের জন্য সব দলের প্রতিনিধি, শিল্পগোষ্ঠীদের নিয়ে স্টিয়ারিং কমিটি গঠনের নির্দেশও দিয়েছেন তিনি। ডিসেম্বর মাসে তিনি কমিটির সুপারিশ খতিয়ে দেখবেন।