সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সম্প্রতি রাজ্যের বহু জেলায় অনেক বাসিন্দার আধার কার্ড (Aadhar Card) নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে। তা নিয়ে চিন্তা বেড়েছে নাগরিকদের। আধার না থাকলে সরকারি পরিষেবা পাওয়া-সহ একাধিক বিষয় সমস্যা হবে বলে আশঙ্কায় ভুগছেন তাঁরা। এই পরিস্থিতিতে ভোট নিয়ে বড় ঘোষণা করল নির্বাচন কমিশন। মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠক করে নির্বাচন কমিশনের (Election Commission) ঘোষণা, আধার না থাকলেও ভোট দিতে কোনও সমস্যা হবে না। বিকল্প পরিচয়পত্র দেখিয়ে দেওয়া যাবে ভোট। সোমবার সর্বদল বৈঠকের পর মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠক করে নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার জানান, আধার কার্ড না থাকলেও একাধিক বিকল্প পরিচয়পত্র ব্যবহার করা যাবে ভোট দেওয়ার জন্য। পাশাপাশি এদিন সাংবাদিক বৈঠকে কমিশনের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, বাংলায় অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করতে যা যা পদক্ষেপ নেওয়ার, সব করবে কমিশন।
এদিন সাংবাদিক বৈঠক থেকে নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার বলেন, ”সর্বদল বৈঠকে একাধিক রাজনৈতিক দলের কাছ থেকে আমাদের কাছে প্রস্তাব আসে, ভোট দিতে আধার কার্ডের বিকল্প ব্যবস্থা রাখার জন্য।” সে প্রসঙ্গে কমিশনার জানান, “ভোট দেওয়ার জন্য আধার কার্ডই লাগবে এমন কোনও বিষয় নেই। ভোটার স্লিপ ৫ থেকে ৬ দিন আগে পেয়ে যাবেন ভোটাররা। যদি কারও আধার কার্ড না থাকে তাহলেও তিনি ভোট দিতে পারবেন। যাঁদের ভোটার কার্ড নেই, তাঁদের কাছে আরও ১২ থেকে ১৩ রকমের ডকুমেন্ট আছে। সেই সব দেখিয়েই ভোট দেওয়া যাবে। আধার বাধ্যতামূলক নয়। যদি ভোটার স্লিপ না থাকে তাহলেও ওই একই ডকুমেন্ট দেখিয়ে ভোট দেওয়া যাবে।”
[আরও পড়ুন: পরীক্ষা দিতে যাওয়ার পথে অ্যাসিড হামলার শিকার ৩ ছাত্রী! গ্রেপ্তার এমবিএ ছাত্র]
এর পাশাপাশি আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে (Lok Sabha Election 2024) শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করতে একাধিক পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে কমিশনের তরফে। নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার জানান, ”বাংলায় অবাধ, শান্তিপূর্ণ নির্বাচনে বদ্ধপরিকর আমরা। তার জন্য প্রযুক্তির ব্যাপক ব্যবহার করা হচ্ছে এই নির্বাচনে। প্রতিটি এলাকায় অবজারভার রাখার পাশাপাশি থাকবে হেল্পলাইন। সেখানে যে কেউ কোনও রকম অবৈধ কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাতে পারবেন। এছাড়া বুথে বুথে সিসিটিভির পাশাপাশি থাকবে অ্যাপ। যেখানে অশান্তির কোনও ঘটনা ঘটলে ছবি তুলে পাঠানো যাবে। আমরা দ্রুততার সঙ্গে সেখানে পদক্ষেপ নেব। অবৈধ আর্থিক কার্যকলাপ রুখতে একটি অ্যাপ থাকছে। সেখানে থাকবে সব কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলি। প্রার্থীদের সম্পর্কে কোনও ফৌজদারি মামলা থাকলে সেটাও জানা যাবে অ্যাপের মাধ্যমে।”
[আরও পড়ুন: পবনের পর এবার বারাবাঁকির উপেন্দ্র, প্রার্থী তালিকা থেকে নাম প্রত্যাহার বিজেপি সাংসদের]
এছাড়া নির্বাচনের সময়ে অনুপ্রবেশ রুখতে কড়া হাতে ব্যবস্থা নেবে কমিশন। সীমান্তবর্তী এলাকায় কড়া নজরদারির পাশাপাশি চেকপোস্টে থাকবে বাড়তি সতর্কতা। ভুয়ো খবর ছড়ানো রুখতেও জেলায় জেলায় কন্ট্রোল রুমের ব্যবস্থা করা হবে বলে জানিয়েছে কমিশন। শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের লক্ষ্যে প্রতিটি জায়গায় পর্যাপ্ত কেন্দ্রীয় বাহিনীর ব্যবস্থা করা হবে বলেও জানানো হয়েছে। এছাড়াও কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, “অবাধ ও শান্তিপূর্ণ ভোট এবার করতেই হবে। না হলে দায় বর্তাবে জেলাশাসক, পুলিশ সুপারদের উপর। কেউ ছাড় পাবেন না।”
একইসঙ্গে বয়স্ক ও প্রতিবন্ধীদের জন্য এবার বাড়িতেই ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে কমিশনের তরফে। এদিন রাজীব কুমার জানান, প্রতিবন্ধীদের জন্য এবার প্রতিটি বুথেই হুইল চেয়ারের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। যদি কেউ ৪০ শতাংশের বেশি প্রতিবন্ধী হন সেক্ষেত্রে তিনি বাড়িতে বসেই ভোট দিতে পারবেন। পাশাপাশি ৮৫ বছরের বেশি বয়স্ক যারা তাঁরাও ভোট দিতে পারবেন বাড়ি থেকেই।