দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: অন্য মহিলার সঙ্গে সম্পর্কের জেরে সংসারে অশান্তি। স্ত্রীকে বালিশ চাপা দিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠল স্বামীর বিরুদ্ধে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায় ভাঙড়ের পোলেরহাট এলাকায়। মৃতের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে পুলিশের কার্যত খণ্ডযুদ্ধ বেঁধে যায়। ঘটনায় গুরুতর জখম হয়েছেন এক পুলিশকর্মী। মৃতার এক পরিবারের এক সদস্যেরও আহত হয়েছেন বলে খবর।
মৃত গৃহবধূর নাম মরিয়ম বিবি। বয়স ৩৫। ১৫ বছর আগে পোলেরহাটের আরশেদ আলি মোল্লার সঙ্গে তাঁর নিকাহ হয়। দুই মেয়ে এবং এক ছেলে নিয়ে সংসার দু’জনের। অভিযোগ, কিছুদিন আগেই এক মহিলার সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। তা নিয়ে মরিয়ম বিবির সঙ্গে প্রায়ই অশান্তি হতো।
এমন পরিস্থিতিতেই শুক্রবার বাড়ির কাজ সেরে ঘুমোতে যান মরিয়াম বিবি। কিন্তু শনিবার বেলার পরও তিনি ঘুম থেকে উঠছেন না দেখে ডাকতে যায় ছেলে, মেয়েরা। মায়ের সাড়াশব্দ না পেয়ে প্রতিবেশীদের ডেকে আনে তারা। ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। স্থানীয় কাশীপুর থানায় খবর দেওয়া হয়। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ। গৃহবধূর মৃতদেহ জিরানগাছা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।
[আরও পড়ুন: আরও নিম্নমুখী দেশের কোভিড গ্রাফ, তবে নতুন করে চিন্তা বাড়াচ্ছে মৃতের সংখ্যা]
ঘটনার পর থেকেই পলাতক আরশেদ আলি মোল্লা। মরিয়াম বিবির ছেলের অভিযোগ, অন্য মহিলার সঙ্গে সংসার করবে বলেই মাকে বালিশ চাপা দিয়ে খুন করেছে তার বাবা। এদিকে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে কার্যত রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় গোটা এলাকা। মরিয়াম বিবির মৃতদেহ ময়না তদন্তের জন্য পাঠানোর ব্যবস্থা করে পুলিশ। কিন্তু তাঁর পরিবারের সদস্যরা এসে পুলিশের গাড়ি আটকে মৃতদেহ তাঁদের হাতে তুলে দেওয়ার দাবি জানান। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বচসা শুরু হয়ে যায়। তা হাতাহাতির পর্যায়ে পৌঁছে যায়।
ঘটনার জেরে এক পুলিশকর্মী ও মরিয়াম বিবির পরিবারের এক সদস্য আহত হন। আহত অবস্থায় তাঁদেরকে উদ্ধার করে জিরানগাছা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে বিশাল পুলিশ বাহিনী এসে পরিস্থিতি সামাল দেয়। আরশেদ আলি মোল্লাকে না পেয়ে তার প্রেমিকাকে অন্যতম অভিযুক্ত হিসেবে পুলিশের হাতে তুলে দেন স্থানীয় বাসিন্দারা।