অভিষেক চৌধুরী, কালনা: ‘গুণধর’ স্বামী। নিজের স্ত্রীকে নিয়েই পর্নোগ্রাফি তৈরি করতে চেয়েছিল। কিন্তু রাজি না হওয়ায় স্ত্রীর উপর চলত শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার। সহ্য করতে না পেরে মাস ছয়েক আগে আত্মঘাতী হয়েছিলেন তিনি। ৬ মাস কেটে গেলেও সুবিচার মেলেনি। হতাশা এবং মানসিক যন্ত্রণায় এবার আত্মহত্যা করলেন মা-ও। পুলিশের বিরুদ্ধেও হয়রানির অভিযোগ তুলেছে পরিবার। শনিবার সকালের এই ঘটনাকে ঘিরে কালনা থানার অন্তর্গত গুপ্তিপুর এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়। মৃতদেহ উদ্ধার করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি শুরু হয়ে যায় পরিবারের সদস্য এবং গ্রামবাসীদের। তাঁদের দাবি, অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করতে হবে। অবশেষে পুলিশ জোর করে দেহ উদ্ধার করে বলে অভিযোগ মৃতের পরিজনদের।
মৃতের নাম প্রতিমা চট্টোপাধ্যায়। বাড়ি কালনা থানার অন্তর্গত গুপ্তিপুর এলাকায়। মৃতার স্বামী সুশংকর চট্টোপাধ্যায় জানান, চলতি বছর জুন মাসে বাপেরবাড়ি এসে তাঁদের মেয়ে সুস্মিতা গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যা করেছিলেন। শ্বশুরবাড়ির অত্যাচার সহ্য না করতে পেরে চরম পথ বেছে নিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। সুশঙ্কর চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাঁর মেয়ের উপর শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার করত। সুস্মিতাকে দিয়ে পর্নগ্রাফি করানোর প্রচেষ্টা করেছিলেন তাঁর স্বামী সৌম্য চক্রবর্তী বলেও অভিযোগ।
[আরও পড়ুন: জগদ্ধাত্রী পুজোয় চন্দননগর যাওয়ার প্ল্যান? যাত্রীদের সুবিধায় চলবে বিশেষ ট্রেন]
আদালতের রায় মেনে শুক্রবার গুপ্তিপাড়ায় মেয়ের শ্বশুরবাড়িতে গিয়েছিলেন প্রতিমাদেবীরা। মেয়েকে দেওয়া সমস্ত জিনিস উদ্ধার করতে গিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু সেখানেও তাঁদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হয় বলে অভিযোগ। একইসঙ্গে বুলবুলিতলা ফাঁড়ির এক পুলিশকর্মীও তাঁদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে বলে দাবি। এর পরই মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন প্রতিমাদেবী। এদিন সকালে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হন। এরপরই পুলিশ দেহ উদ্ধারে গেলে এলাকার বাসিন্দা এবং পরিবারের সঙ্গে পুলিশের বচসা বাঁধে।
দেহটি ময়নাতদন্তের জন্যে কালনা মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হলেও শনিবার বিকেল চারটে পর্যন্ত পরিবারের তরফে কেউই সেখানে ছিলেন না। এ প্রসঙ্গে জেলা পুলিশের এক আধিকারিক জানান, খবর পেয়ে পুলিশ হাজির হয়েছিল। তদন্ত শুরু করেছে।