দিব্যেন্দু মজুমদার, হুগলি: অশুভ শক্তির প্রভাব পড়েছে পরিবারের উপর। এই সন্দেহে পারিবারিক অশান্তি। তার পরিণতি হল ভয়ংকর। ধারালো অস্ত্র দিয়ে স্বামী ও মেয়েকে কুপিয়ে খুনের চেষ্টা করে মহিলা। জখম হয়েছে অভিযুক্তও। নৃশংস ঘটনাটি ঘটেছে হুগলির (Hooghly) পাণ্ডুয়ায়। বর্তমানে হাসপাতালে ভরতি আহত তিনজনই। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
জানা গিয়েছে, হুগলির পাণ্ডুয়ার ইটাচুনার বাসিন্দা সুবিকাশ ঘোষ। প্রাথমিক স্কুলে বহু বছর শিক্ষকতা করেছেন তিনি। বছর পাঁচেক আগে অবসর গ্রহণ করেছেন। স্ত্রী তন্দ্রা ও মেয়ে সুলগ্নার সঙ্গে ইটাচুনার বাড়িতে থাকতেন সুবিকাশ। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার সন্ধে থেকে অশান্তি চলছিল ঘোষ পরিবারে। গ্রামবাসীরা তা টের পেয়ে একাধিকবার সুবিকাশবাবুর বাড়িতে যান কী হয়েছে তা জানতে। কিন্তু দরজা খোলা হয়নি বলেই অভিযোগ।
[আরও পড়ুন: BSF নিয়ে মন্তব্যের জের! ফোনে তৃণমূল বিধায়ক উদয়ন গুহকে ‘প্রাণনাশে’র হুমকি]
এরপর রাত এগারোটা নাগাদ ঘোষ বাড়ি থেকে তীব্র আর্তনাদ শুনতে পান স্থানীয়রা। সঙ্গে সঙ্গে খবর দেওয়া হয় পাণ্ডুয়া থানায়। পুলিশ গিয়ে ডাকাডাকি করলেও দরজা খোলা হয়নি। এরপর দরজা ভাঙতেই বীভৎস দৃশ্য। পাণ্ডুয়া থানার আধিকারিকরা দেখেন, ঘর ভেসে যাচ্ছে রক্তে। ভিতরে নগ্ন অবস্থায় সুবিকাশ, সুলগ্না ও তন্দ্রা। তন্দ্রার হাতে ধারালো অস্ত্র, মেয়ের পায়ে এলোপাথাড়ি কোপ দিচ্ছে সে। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ তার হাত থেকে অস্ত্রটি কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। সেই সময় ওসিকে আক্রমণের চেষ্টা করে তন্দ্রা।
রাতেই জখম অবস্থায় তিনজনকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় ইমামবাড়া হাসপাতালে। সুলগ্নার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে কলকাতায় স্থানান্তরিত করা হয়েছে। কিন্তু কেন এই হামলা? কী নিয়ে চলছিল অশান্তি? পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ৫ বছর আগে ধর্মান্তরিত হন সুবিকাশবাবুরা। হিন্দু ধর্ম ছেড়ে খ্রিষ্টান ধর্ম গ্রহণ করেন। দিনভর প্রার্থনা নিয়েই ব্যস্ত থাকত তন্দ্রা। অশুভ শক্তির প্রভাব কাটাতে নানারকম ধর্মীয় চর্চা করত। প্রাথমিকভাবে তদন্তকারীদের ধারণা, তন্দ্রাদেবীর ধারণা হয়েছিল যে, স্বামী সুবিকাশের উপর অশুভ শক্তির প্রভাব পড়েছে। সেই ঘটনার জেরেই অশান্তির। যার ফলস্বরূপ ঘটে গেল নৃশংস ঘটনা।