অর্ণব আইচ: বাড়িতে লক্ষ্মীপুজোর আয়োজন। জ্বালানো হয়েছিল প্রদীপ। সিল্কের শাড়ি পরে গৃহকর্ত্রী ব্যস্ত ছিলেন ধনদেবীর আরাধনায়। এরই ফাঁকে প্রায় নিঃশব্দে নেমে এল মৃত্যুদূত। মহিলা বুঝতেও পারেননি, পুজোর সময় কখন তাঁর সিল্কের শাড়িতে ধরে গিয়েছে প্রদীপের আগুন। শুক্রবার রাতে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় যাদবপুরের (Jadavpur) বাসিন্দা বছর তেষট্টির দোলা মিত্রকে তড়িঘড়ি হাসপাতালে ভরতি করা হলেও শেষরক্ষা হয়নি। শনিবার সকালে মৃত্যু হয় তাঁর। এই দুর্ঘটনায় শোকস্তব্ধ যাদবপুরের ইব্রাহিম রোডের মিত্র পরিবার ও প্রতিবেশীরা। তাঁরা ভাবতেও পারছেন না যে, আনন্দময় মুহূর্তে এই ধরনের মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে গেল।
পুলিশ সূত্রে খবর, শুক্রবার রাত আটটা নাগাদ ঘটনার সূত্রপাত। যাদবপুর থানা এলাকার ইব্রাহিম রোডের মিত্র পরিবারে শুরু হয়েছিল লক্ষ্মীপুজো। প্রথা অনুযায়ী, পুজোর সময় জ্বালাতে হয় প্রদীপ। লক্ষ্মী প্রতিমার সামনে ছিল প্রসাদের থালা। বাড়ির কর্ত্রী দোলা মিত্র সিল্কের শাড়ি পরে পুজোর তদারকিতে ব্যস্ত ছিলেন। সঙ্গে ছিলেন পরিবারের অন্যরাও। পুজোর কাজ করার সময় হঠাৎই শাড়ির এক কোণায় প্রদীপের আগুন ধরে যায়। যেহেতু সিল্কের শাড়ি, তাই কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই জ্বলে যায় শাড়িটি। তার সঙ্গে আগুন গ্রাস করে দোলাদেবীর শরীরও। তিনি চিৎকার করতে থাকেন। আচমকা এই ঘটনাটি ঘটতে দেখে ঘাবড়ে যান বাড়ির অন্যরাও। পুলিশের সূত্র জানিয়েছে, প্রাণে বাঁচতে তিনি গায়ে আগুন নিয়েই বাথরুমের দিকে ছুটে যান।
[আরও পড়ুন: অমিত শাহের সঙ্গে সাক্ষাতের পরই উত্তরবঙ্গ পাড়ি দিলেন রাজ্যপাল, সফর ঘিরে জল্পনা]
পরিবারের অন্যরাও তাঁকে বাঁচানোর চেষ্টা করেন। এর মধ্যেই তাঁর শরীরে জল ঢেলে আগুন নেভানো হয়। কিন্তু ততক্ষণে দোলাদেবীর শরীরের অনেকটাই অগ্নিদগ্ধ (Burn) হয়ে গিয়েছে। খবর পেয়ে ছুটে আসেন প্রতিবেশীরাও। পরিবারের লোক ও প্রতিবেশীরা মিলে তড়িঘড়ি তাঁকে কলকাতা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ (National Medical College) হাসপাতালে নিয়ে যান। চিকিৎসকরা জানান, তাঁর শরীরের ৮৫ শতাংশই পুড়ে গিয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসা শুরু হয়। শারীরিক অবনতি দেখে ভোর সাড়ে চারটে নাগাদ নিয়ে যাওয়া হয় OCB ওয়ার্ডে। সেখানে চিকিৎসা চলাকালীন এদিন সকালে তাঁর মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় পুলিশের কাছে কেউ কোনও অভিযোগ জানাননি। পুলিশের মতে, সিল্কের শাড়ি পরার কারণে খুব তাড়াতাড়ি তাঁর শরীরে আগুন ছড়িয়ে যায়। ঘটনার তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।