বিপ্লবচন্দ্র দত্ত, কৃষ্ণনগর: স্বামীর শ্রাদ্ধানুষ্ঠানের দিন মৃত্যু হল স্ত্রীর। এমনই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে নদিয়ার (Nadia) রানাঘাটে (Ranaghat)। মাত্র কয়েকদিনের ব্যবধানে বাবা-মাকে একসঙ্গে হারিয়ে মানসিক দিক দিয়ে ভেঙে পড়েছেন মৃত তীর্থঙ্কর তরফদার ও লিলি তরফদারের ছেলে, মেয়ে এবং পরিবারের অন্য সদস্যরা।
জানা গিয়েছে, ওই দম্পতির মধ্যে বয়সের ফারাক ছিল মাত্র ৬ বছরের। একসঙ্গে সংসার করেছেন ৪০ বছরের বেশি সময় ধরে। অনেক ঘাত-প্রতিঘাত,সুখ- দুঃখের মধ্যে দিয়ে কেটেছে জীবন। আর তাই স্বামীর মৃত্যুতে প্রচণ্ড ভেঙে পড়েছিলেন স্ত্রী লিলি। রানাঘাট পুরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ষষ্ঠীতলা পাড়ার বাসিন্দা ছিলেন তীর্থঙ্কর তরফদার। গত ১০ নভেম্বর বার্ধক্যজনিত কারণে রোগে ভুগে মৃত্যু হয় ৭৬ বছরের ওই বৃদ্ধের। তিনি ছিলেন রানাঘাট কলেজের অবসরপ্রাপ্ত একজন করনিক।
[আরও পড়ুন: মেসিকে ব্যঙ্গ করে রোনাল্ডোর আদলে সেলিব্রেশন! সৌদি সমর্থকদের ভিডিও ভাইরাল]
২২ নভেম্বর মঙ্গলবার নিজের বাড়িতেই তীর্থঙ্করবাবুর শ্রাদ্ধের আয়োজন করেন পুত্র তিষাম্পতি তরফদার। শ্রাদ্ধের অনুষ্ঠান শুরুর আগে মায়ের কাছে অনুমতি চাইতে যান তিনি। সেই অনুমতি দেওয়ার আগেই অসুস্থ হয়ে পড়েন লিলিদেবী। তড়িঘড়ি তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালে। যদিও চিকিৎসকরা দেখেই তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েই তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
স্বাভাবিক ভাবেই এমন মর্মান্তিক ঘটনায় পরিবারে নেমে এসেছে শোকের গভীর ছায়া। স্থগিত করে দেওয়া হয়েছে শ্রাদ্ধের অনুষ্ঠান। শ্রাদ্ধের কাজে নিযুক্ত পুরোহিত জানিয়েছেন, চারদিন পরে স্বামী-স্ত্রীর শ্রাদ্ধানুষ্ঠান একই সঙ্গে হবে। তিষাম্পতি জানাচ্ছেন, ‘বাবা-মায়ের শ্রাদ্ধানুষ্ঠান একসঙ্গে করতে হবে, এ আমি কল্পনাও করতে পারিনি। অথচ মায়ের আগে তেমন কোনও রোগই ধরা পড়েনি। সম্ভবত বাবার চলে যাওয়াটা মা কোনও ভাবেই মেনে নিতে পারেননি। তাই বাবার শ্রাদ্ধানুষ্ঠানে হাজির হওয়া মাত্র উত্তেজনায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েন। সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর।’