অভিষেক চৌধুরী, কালনা: মেয়ে আর বোঝা নয়। কন্যারত্ন। কন্যাশ্রী। একসঙ্গে তিন কন্যাসন্তানের জন্মের পর এমনই উপলব্ধি হুগলির বলাগড় থানার দক্ষিণ গোপালপুরের এক দম্পতির। পরিবারে নতুন তিন সদস্যের আগমনে খুশির হাওয়া।
সুমনা বায়েন নামের বছর তিরিশের ওই গৃহবধূ বিয়ে হয়েছে বেশ কয়েক বছর আগে। প্রথমবার কন্যাসন্তানের জন্ম দেন তিনি। সম্প্রতি দ্বিতীয়বার অন্তঃসত্ত্বা হন। স্বামী মাত্র আট হাজার টাকা বেতনে বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত। তাই সংসারে অভাব নিত্যসঙ্গী। সরকারি হাসপাতালেই চিকিৎসা চলছিল বধূর। শনিবার থেকে শরীর ভাল ছিল না। অভিজ্ঞ মা বুঝতে পারছিলেন নতুন অতিথির আসার সময় আসন্ন। তাই দেরি না করে রবিবার কালনা হাসপাতালে যান। সমস্যার কথা চিকিৎসককে জানান। ভরতি হয়ে যান।
[আরও পড়ুন: একের পর এক সমবায় নির্বাচনে কোণঠাসা বিরোধী জোট, তমলুকেও জয়ী তৃণমূল]
ভরতি হওয়ার মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই এল সুখবর। একসঙ্গে তিন কন্যাসন্তানের জন্ম দিলেন সুমনা। তবে কোনও অস্ত্রোপ্রচার নয়। চিকিৎসক ও নার্সদের যৌথ প্রয়াসে স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় দ্বিতীয়বার ওই মহিলা মা হয়েছেন বলেই জানান চিকিৎসক অভয়চাঁদ নাগ। দু’জনের ওজন ১ কেজি ৭০০ গ্রামের উপর। তবে একটি সন্তানের ওজন বেশ কম। মাত্র ৬৬৫ গ্রাম। তাই তাকে রাখা হয়েছে এসএনসিইউয়ে। গৃহবধূও সুস্থ রয়েছেন।
মা ও শিশুরা সকলেই সুস্থ। পরিবারে খুশির হাওয়া। তবে তাদের বড় করার চিন্তায় বিভোর গোটা পরিবার। কারণ, একটি চার বছরের কন্যাসন্তান রয়েছে দম্পতির। তার উপর আরও তিন সন্তানের জন্ম। সঙ্গে রয়েছেন বৃদ্ধ বাবা ও মা। সবমিলিয়ে পরিবারের মোট সদস্য সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৮। মাত্র আট হাজার টাকা বেতনের চাকরি করে কীভাবে আটজনের খরচখরচা সামলাবেন, তা ভেবেই পাচ্ছেন না সুমনার স্বামী অসীম। তিনি বলেন, “ওরা আমার কন্যারত্ন, কন্যাশ্রীও বটে। তবে অল্প মাইনে পাই। আট সদস্যের সংসার চালানো-সহ ওষুধ খরচও তো রয়েছে। তাই সব নিয়ে চিন্তায় আছি।”