সুকুমার সরকার, ঢাকা: ফের এক নারকীয় ঘটনায় কেঁপে উঠল বাংলাদেশ। ইসলামিক স্টেটের অনুকরণে, পরকীয়ার অভিযোগে চাবুক মেরে হত্যা করা হল এক যুবতীকে।
ঘটনাটি ঘটে বাংলাদেশের ঠাকুরগাঁও জেলার হরিপুর শহরে। ডিসেম্বরের ২০ তারিখ ঘটলেও সদ্য সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ পায় এই জঘন্য কাণ্ডটি। তারপরই দেশ জুড়ে শুরু হয় প্রবল শোরগোল। একটি গণতান্ত্রিক দেশে এহেন ঘটনায় প্রশ্নের মুখে পড়ে সরকার ও প্রশাসন। জানা গিয়েছে, ২৩ বছরের নিহত যুবতীর নাম মৌসুমি আখতার। স্থানীয় লোকজন জানান, ৯ মাস আগে হরিপুরের বালিয়াপুকুর গ্রামের বাসিন্দা জাহাঙ্গীরের সঙ্গে মৌসুমির বিয়ে হয়। বিয়ের সময় যৌতুক হিসেবে নগদ ৩০ হাজার টাকা ও অন্যান্য সামগ্রী দেওয়া হয় জাহাঙ্গীরকে। কিন্তু তারপরও ১ লক্ষ টাকা দাবি করে সে। টাকা না দিলে মৌসুমিকে মারধর করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয় জাহাঙ্গীর। মৃতার দাদা জানিয়েছেন, এক লক্ষ টাকা যৌতুক দাবিতে গত ১৬ ডিসেম্বর মৌসুমীকে বাড়ি থেকে বের করে দেয় জাহাঙ্গীর। তারপর ২০ ডিসেম্বর কৌশলে মৌসুমিকে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে সালিশি সভা বসায় অভিযুক্ত।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সেদিন রাত ১১টা নাগাদ জাহাঙ্গীরের বাড়িতে সালিশি সভা বসে। সেখানে কাজি আবুল কালামের নির্দেশে ‘ইসলামি শরিয়ত মোতাবেক’ মৌসুমিকে ১০১ বার চাবুক মারা হয়। মৌসুমির চিৎকারে প্রতিবেশীরা ছুটে এলেও প্রতিবাদের সাহস দেখাতে পারেননি কেউই। অমানবিক নির্যাতন সইতে না পেরে পরদিন ২১ ডিসেম্বর ওই বাড়িতেই মৃত্যু হয় মৌসুমির। ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে মৌসুমির পরিবারকে জানানো হয় যে, সে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। তারপরই পুলিশের দ্বারস্থ হয় মৃতার পরিবার। ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয় মৌসুমির দেহ। তাঁর দেহে একাধিক আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গিয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে কাজি আবুল কালামকে। বাকি অভিযুক্তদের খোঁজ চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
প্রতীকী চিত্র
The post বাংলাদেশে পরকীয়ার অভিযোগে যুবতীকে চাবুক মেরে খুন appeared first on Sangbad Pratidin.