অভিরূপ দাস: করোনার হানায় চলে গিয়েছেন মা। সে শোকের ধাক্কা কাটাতে না কাটাতেই ফের দুঃসংবাদ। মায়ের শ্রাদ্ধের আগের দিন চলে গেলেন বাবাও। করোনার জোড়া আঘাতে শোকে মুহ্যমান রিয়া দাস সরকার। রিয়ার বাবা আতসকুমার দাস (৬৯) মা রিক্তা দাস (৫৯) থাকতেন উত্তর ২৪ পরগনার গড়িফায়।
ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই করোনা আক্রান্ত (COVID Positive) হয়েছিলেন রিক্তাদেবী। গত ৫ ডিসেম্বর তাঁকে কল্যানীর জওহরলাল নেহেরু মেমোরিয়াল হাসপাতালে ভরতি করা হয়। শ্বাসকষ্টের জন্য ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে রাখা হয়েছিল তাঁকে। স্ত্রী অসুস্থ থাকাকালীন করোনা আক্রান্ত হন আতসকুমার দাসও। কল্যাণি জেএনএম হাসপাতালে স্ত্রীর পাশের ঘরেই চিকিৎসা শুরু হয় তাঁরও।
[আরও পড়ুন: তানজানিয়া থেকে কলকাতা আসা করোনা পজিটিভ ব্যক্তি গেলেন কোথায়? দিনভর চাপানউতোর]
এরই মধ্যে দুঃসংবাদ। ৯ ডিসেম্বর চিকিৎসকদের সমস্ত চেষ্টা ব্যর্থ করে প্রয়াত হন রিক্তাদেবী। একদিকে গুরুতর অসুস্থ বাবা। অন্যদিকে আকস্মিকভাবে মায়ের মৃত্যু। মন শক্ত রেখে লড়ে যাচ্ছিলেন রিয়া। বাবার চিকিৎসার পাশাপাশি মায়ের পারলৌকিক কাজের প্রস্তুতি শুরু করেন। ২১ ডিসেম্বর সোমবার পারলৌকিক ক্রিয়া ছিল মায়ের। সমস্ত জোগাড়যন্ত শেষ। তার সামান্য কয়েক ঘণ্টা আগেই আবারও দুঃসংবাদ। হাসপাতাল থেকে ফোন আসে। কোভিডে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন বাবা আতসকুমার দাস!
গোটা ঘটনায় শোকে পাথর হয়ে গিয়েছেন রিয়া দাস সরকার। তাঁর প্রশ্ন, ভ্যাকসিনের দুটো ডোজই নিয়েছিলেন মা-বাবা। তারপরেও এমনটা কী করে হল? ভেবে পাচ্ছেন না রিয়া। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে দুজনের সিটি ভ্যালু ছিল যথাক্রমে ২৭ এবং ২৩।
রিয়ার কথায়, “আমার যা ক্ষতি হয়েছে তা পূরণ হওয়ার নয়। জীবন দিয়ে বুঝতে পারলাম করোনা এখনও বিদায় নেয়নি। শীতের মরশুমে যাঁরা গাদাগাদি ভিড়ে বেরিয়ে পরছেন তাঁদের সাবধান করেছেন রিয়া এবং তাঁর স্বামী সন্দীপ সরকার। সন্দীপের কথায়, মাত্র ৭ দিনের ব্যবধানে কোভিড আমার শাশুড়ি ও শ্বশুরমশাইকে ছিনিয়ে নিয়েছে। যাঁরা এখনও উদাসীন হয়ে রয়েছেন, তাঁদের বলব সাবধান হোন। পরে শোক করেও আর লাভ হবে না।”