অর্ণব আইচ: নিজের দাদার বিরুদ্ধেই যৌন নির্যাতনের অভিযোগ করেছিলেন বোন! তরুণীর অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেপ্তারও হন দাদা। এরপরই যুবতী তাঁর আইনজীবী মারফত মামলা তুলে নেওয়ার আবেদন জানালেন নির্যাতিতা। আজ অর্থাৎ বৃহস্পতিবার ওই তরুণীর গোপন জবানবন্দি রেকর্ড করা হবে। তার উপরই নির্ভর করছে মামলার ভবিষ্যত।
মঙ্গলবার পূর্ব কলকাতার আনন্দপুর থানায় গিয়ে এক যুবতী অভিযোগ করেন, টানা পাঁচ মাস ধরে তাঁর উপর যৌন অত্যাচার চালাচ্ছেন তাঁরই নিজের দাদা। ওই যুবতীর অভিযোগ শুনে প্রথমে পুলিশ আধিকারিকরাও হতভম্ব হয়ে যান। পুলিশ ওই মোবাইলের সূত্র ধরে জানতে পারে যে উত্তর ২৪ পরগনার টিটাগড়ে রয়েছেন ওই যুবক। আনন্দপুর থানার পুলিশ টিটাগড়ে যুবকের এক আত্মীয়র বাড়ি থেকেই ধর্ষণের অভিযোগে তাঁকে গ্রেপ্তার করে। জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত যুবক পেশায় সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। তাঁর বোন একটি নামী বেসরকারি সংস্থায় উচ্চপদে কর্মরত।
বুধবার ওই যুবককে আলিপুর আদালতে তোলা হয়। সরকারি আইনজীবী সৌরীন ঘোষাল ধৃত যুবকের বোনের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ হেফাজতের আবেদন করেন। যুবতী আদালতে গোপন জবানবন্দি দেবেন বলেও জানান। এর পরই যুবতীর আইনজীবীরা আদালতে জানান, যুবতী তাঁর দাদার বিরুদ্ধে করা ধর্ষণের অভিযোগ তুলে নিতে চান। সম্পত্তিগত গোলমালের জেরেই ভুল করে তিনি দাদার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। দু’পক্ষের বক্তব্য শুনে অভিযুক্ত যুবককে এক দিনের পুলিশ হেফজাতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক। বৃহস্পতিবারই আলিপুর আদালতে ওই যুবতীর গোপন জবানবন্দি নেওয়া হবে। সেই অনুযায়ী বিচারক পরবর্তী নির্দেশ দিতে পারেন। যদিও এদিন আনন্দপুর থানায় দাঁড়িয়ে যুবতীর এক আত্মীয় দাবি করেন, এই অভিযোগ সম্পর্কে তাঁরাও সন্দিহান। যুবক পুলিশের কাছে দাবি করেছেন, তিনি কিছুই করেননি।
[আরও পড়ুন: একুশের মঞ্চে বাম-কংগ্রেসকে নিয়ে কার্যত নীরব Mamata, কী বার্তা TMC নেত্রীর?]
পুলিশ জানিয়েছে, আনন্দপুর থানা (Anandapur PS) এলাকার নোনাডাঙায় থাকেন ওই যুবক ও তাঁর বোন। ২০১৬ সালে তাঁদের মা ও বাবার মৃত্যু হয়। এরপর যুবতী চাকরি পান। দাদা চেন্নাইয়ে চাকরি করতেন। গত বছর লকডাউনের সময় কলকাতায় ফিরে ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’ শুরু করেন। যুবতীর দাবি, গত জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত তাঁর দাদা তাঁকে ধর্ষণ (Rape) করেন। কিন্তু পুলিশের সূত্র জানিয়েছে, যুবতীর বক্তব্যে বহু অসঙ্গতি আছে। গ্রেপ্তারির পর পুলিশের কাছে যুবকের দাবি, বোন প্রায়ই বেশি রাতে বাড়ি ফিরতেন। তার প্রতিবাদ জানান তিনি। তাঁর অপছন্দের এক ব্যক্তিকে বিয়েও করতে চান বোন। বিষয়টি নিয়ে বোনের সঙ্গে তাঁর ঝগড়াও হয়। এরপরই এই অভিযোগ। পুরো ঘটনাটির তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।