চঞ্চল প্রধান, হলদিয়া: ব্র্যান্ডেড মোবাইল, সোনার গয়না থেকে নগদ টাকা – বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সবই নিয়েছিলেন যুবতী। হবু শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে আইবুড়ো ভাতও খেয়েছেন। কিন্তু শেষ মুহূর্তে আর বিয়ে করতে রাজি নন। এমনই অভিযোগে পুলিশের দ্বারস্থ সুতাহাটার যুবক। প্রেমিকার পাশাপাশি তাঁর বাবা-মায়ের বিরুদ্ধেও প্রতারণার অভিযোগ জানিয়েছেন তিনি।
জানা গিয়েছে, সুতাহাটার ওই নাম দেবাশিস প্রামাণিক। হলদিয়ার একটি বেসরকারি সংস্থায় নিরাপত্তারক্ষীর কাজ করেন। দেবাশিসের প্রেমিকা তমলুকের নারায়ণপুর এলাকার বাসিন্দা। এক সহকর্মীর মাধ্যমে তাঁর সঙ্গে দেবাশিসের পরিচয় হয়। অল্প সময়ের মধ্যেই প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। যুবতী নিজেকে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের কর্মী হিসেবেই পরিচয় দিয়েছিলেন বলে দাবি দেবাশিসের। তাঁর অভিযোগ, ২০১৩ সালে প্রেমিকার আবদারে তাঁকে একটি দামী মোবাইল দেন। পুজোর সময় দামী পোশাকও কিনে দিয়েছিলেন।
[আরও পড়ুন: ঝুলন্ত বাবা, বিছানা ও মেঝেয় পড়ে মা-মেয়ের দেহ, একই পরিবারের তিন সদস্যের রহস্যমৃত্যুতে চাঞ্চল্য]
দেবাশিস জানান, প্রেমিকার বাড়িতে তাঁর নিয়মিত যাতায়ত ছিল। তাঁর বাবা-মায়ের সঙ্গেও সুসম্পর্ক ছিল। বিয়ের প্রস্তাব নাকি প্রেমিকার মা-বাবাই দিয়েছিল। এদিকে প্রেমিকার দাবি সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বেড়েই চলেছিল। সেই বায়না মিটিয়ে তাঁকে সোনার হার ও গয়নাও দেন দেবাশিস। পরে আবার ফ্রিজের দাবি জানানো হয়। ধার-দেনা করে সমস্ত চাহিদা এতদিন ধরে মিটিয়েছেন বলে দাবি সুতাহাটার যুবক।
দেবাশিসের কথা অনুযায়ী, গত ৫ জানুয়ারি মহিষাদল থানার কেশবপুর গ্রামে তাঁর দিদির বাড়িতে গিয়ে আইবুড়ো ভাতও খেয়েছে ওই যুবতী। পরের দিনই বিয়ের জন্য ৮০ হাজার টাকা ধার চেয়েছিল। পরে মিটিয়ে দেওয়ার আশ্বাসও দিয়েছিল। ১১ জানুয়ারি প্রেমিকার বাড়ি কিছু কথা বলতে গিয়েছিলেন দেবাশিস। অভিযোগ, যুবতীর বাড়িতে বাইরে থেকে তালা দেওয়া ছিল। তমলুক শহরে হাসপাতাল মোড়ে জেলা পরিষদ স্টলে তাঁদের একটি দোকানও রয়েছে। যার শাটার নামানো। দেবাশিসের আক্ষেপ, গত ১০ বছর ধরে প্রেমিকার চাহিদা মেটাতে গিয়ে তিনি ঋণে জর্জরিত হয়ে গিয়েছেন। তাঁর প্রতারণা করার জন্যই প্রেমের ফাঁদ পাতা হয়েছিল। প্রথমে সুতাহাটা থানায় অভিযোগ জানাতে নিয়েছিলেন দেবাশিস। কিন্তু তখন তাঁর অভিযোগ নেওয়া হয়নি। পরে হলদিয়ার এসিজেম কোর্টের দ্বারস্থ হন। আদালতের নির্দেশে সুতাহাটা থানার পুলিশ অভিযোগ নথিভূক্ত করে তদন্ত শুরু করে। প্রতারণা-সহ মোট চারটি ধারায় মামলা হয়েছে বলে খবর।