অর্ণব আইচ: বেহালার পর্ণশ্রী এলাকায় জোড়া খুন নিয়ে ছড়াল তীব্র চাঞ্চল্য। বন্ধ ঘর থেকে উদ্ধার করা হয় মা ও ছেলের গলা কাটা দেহ। ঘটনার তদন্তে নেমে একাধিক প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে পুলিশ। আপাতত ছ’জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে।
ফ্ল্যাটের দরজার ইয়েল লক বন্ধ ছিল। বারবার বেল টিপেও ভিতর থেকে স্ত্রী ও ছেলের সাড়া পাচ্ছিলেন না ব্যাংককর্মী তপন মণ্ডল। সোমবার রাত সোয়া ন’টা নাগাদ প্রতিবেশীদের সাহায্যে দরজার লক ভেঙে দেখেন, শোওয়ার ঘরের বিছানায় পড়ে রয়েছে তাঁর স্ত্রী সুস্মিতা মণ্ডল (৪৫) ও তমোজিৎ মণ্ডলের (১৩) গলাকাটা দেহ। রক্তে ভেসে যাচ্ছে বিছানা। ঘরের ভিতরটা সম্পূর্ণ লন্ডভন্ড। পর্ণশ্রীর সেনপল্লি এলাকার গোপাল মিশ্র রোডের বহুতলের ফ্ল্যাটে মা ও ছেলেকে নৃশংসভাবে খুন করে পালাল দুষ্কৃতী। ফ্ল্যাটে কোনও লুঠপাট হয়েছে কি না, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
[আরও পড়ুন: EXCLUSIVE: কলকাতার পুজোয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আরও এক মূর্তি, দেখুন ভিডিও]
সেনপল্লির একটি আবাসনের তিনতলার বাসিন্দা মণ্ডল পরিবার। সোমবার সন্ধ্যায় বাড়িতে ছাত্র তমোজিৎকে পড়াতে আসেন এক গৃহশিক্ষক। তিনি কখন বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান, তা জানা যায়নি। সন্দেহভাজন ওই ব্যক্তির খোঁজ চালাচ্ছেন গোয়েন্দারা। তমোজিৎ সেসময় অনলাইন ক্লাসেও যোগ দিয়েছিল বলে জানা গিয়েছে। কিন্তু যে স্মার্টফোন থেকে সে ক্লাব করছিল, সেটি এখনও খুঁজে পাওয়া যায়নি।
ডাকাতির জন্য এই খুন কি না, তা নিয়ে চলছে তদন্ত। শোধ তোলার জন্য এই খুন করা হতে পারে, এমন সম্ভাবনাও পুলিশ উড়িয়ে দিচ্ছে না। তবে গৃহশিক্ষক ছাড়া অন্য কেউ ওই বাড়িতে ঢুকেছিল কি না, তাও জানার চেষ্টা চলছে। রাতেই ঘটনাস্থলে যান গোয়েন্দাকর্তারা। নামানো হয় পুলিশ কুকুরও। গৃহকর্তা তপনবাবু ও প্রতিবেশীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তপন মণ্ডলের দাবি, তিনি অফিস থেকে ফিরে এসে লক ভেঙে স্ত্রী ও ছেলের গলাকাটা দেহ উদ্ধার করেন। আপাতত ছ’জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। তাঁরা অবশ্য মণ্ডল পরিবারের সদস্য নন। পুলিশ সূত্রে খবর, জোর করে বাড়ির ভিতরে ঢোকার কোনও চিহ্ন পাওয়া যায়নি। পাশাপাশি পুলিশকে বিভ্রান্ত করতে বাড়ি লন্ডভন্ড করা হয়ে থাকতে পারে বলেও মনে করা হচ্ছে।