রাহুল রায়: সৎ ছেলেকে টাকা না দিলে চাকরি যাবে মহিলার। ফের মানবিক রায় কলকাতা হাই কোর্টের (Calcutta High Court) বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের। বাবার মৃত্যুর পর সৎ ছেলেকে মাসের মাস টাকা পাঠাবেন। সেই শর্তেই কম্পাশেনেট গ্রাউন্ডে স্কুলের চাকরি পান মহিলা। কিন্তু গত এপ্রিল মাস থেকে সৎ ছেলেকে টাকা পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছিলেন তিনি। আদালতের নির্দেশে ওই মহিলাকে ফের টানা পাঠাতে হবে সৎ ছেলের জন্য।
উল্লেখ্য, পাশকুরার ব্র্যাডলি ব্র্যাট স্কুলের প্রাক্তন কর্মী ছিলেন নাবালক নন্দদুলালের (নাম পরিবর্তিত) নিজের মা। কিন্তু চাকরিরত অবস্থায় নন্দদুলালের মায়ের মৃত্যু হয়। মায়ের মৃত্যুর পর পর সেই চাকরি পান তাঁর বাবা। নন্দদুলালের বাবা ফের বিয়ে করেন। পরবর্তীকালে তাঁর বাবারও মৃত্যু হয়। কম্পাশেনেট গ্রাউন্ডে চাকরি পান নন্দদুলালের সৎ মা। শর্ত ছিল, মাসে ৭ হাজার টাকা করে দিতে হবে সৎ মা পিঙ্কিরানি টিংগুয়াকে। শুরুর দিকে পিঙ্কিরানি টিংগুয়া নিয়মিত বাড়িতে টাকা পাঠাতেনও। কিন্তু চলতি বছরের এপ্রিল মাস থেকে সংসারে টাকা দেওয়া বন্ধ করে দেন তিনি। ফলে অসহায় হয়ে পড়ে নাবালক নন্দদুলাল ও তাঁর বৃদ্ধ দাদু। দাদু-নাতির ঠাঁই হয় গাছ তলায়, ত্রিপল টাঙিয়ে। সংসার চালাতে বা পেরে বৃদ্ধ দয়ানাথ খোরপোশ চেয়ে আদালতের (Calcutta High Court) দারস্থ হন।
[আরও পড়ুন: অভিষেক একাই একশো, রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করতে না পরে এজেন্সি পাঠাচ্ছে বিজেপি: কুণাল ঘোষ]
গত বছর ডিসেম্বর মাসে এই সংক্রান্ত মামলায় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় সব শুনে জানতে চান নাতি ও দাদু কোথায় থাকেন? তাঁদের বাসস্থানের ছবি দেখে তিনি স্তব্ধ হয়ে যান বিচারপতি। পূর্ব মেদিনীপুরের প্রত্যন্ত গ্রাম ছত্রী এলাকায় একটি বটগাছের তলায় কোনক্রমে ত্রিপল খাটিয়ে আছেন তাঁরা। সাঁওতাল সম্প্রদায়ের বিশেষ সুবিধাটুকুও তাঁরা পান না বলে অভিযোগ। এরপরেই জেলাশাসককে ডেকে আদালত নির্দেশ দেয়, প্রকল্প অনুযায়ী বাড়ি বানিয়ে দিতে। নির্দেশের পর পাকা বাড়ি পেয়েছে ওই পরিবার।
[আরও পড়ুন: লুকআউট বিতর্কের মধ্যেই বিধানসভায় হাজির মানিক ভট্টাচার্য, ফের প্রশ্নের মুখে CBI]
এবার বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ই তাঁদের খোরপোশ ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করছেন। এদিন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দেন, পিঙ্কির বেতন ও পারিবারিক পেনশন চালু হবে। কিন্তু সৎ ছেলেকে টাকা না দিলে বেতন বন্ধ করে দেওয়া হবে ওই মহিলার। পাশাপাশি শিশু সুরক্ষা ও শিশু সুরক্ষা দপ্তরকে আদালতের সুপারিশ, সৎ ছেলেকে যাতে কংক্রিট ছাদের বাড়ি করে দেওয়া যায়। আদালতে হাজির হয়ে ওই মহিলা জানান, জানালেন স্বামীর ঋণ শোধ করতে গিয়ে ছেলের টাকা দেওয়া হয়নি। সম্প্রতি বকেয়া সব টাকা তিনি দিয়ে দিয়েছেন।