সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অসুবিধা কি হচ্ছে না?
হচ্ছেই তো! রোজ রোজ মাথায় সেই এক চিন্তা নিয়ে পথে নামা- এই যে একটা নোট খরচ হয়ে গেল, তার জায়গায় নতুন খুচরোর নোট আসবে কোথা থেকে? শখের কিছু দূরে থাক, খুব খিদের সময়েও চিন্তাভাবনা- থাক বরং টাকাটা, ঘরে রাখা খুচরো তাহলে আরও কিছুদিন চলবে! এরকমই আচ্ছে দিন কি চেয়েছিল ভারতবাসী?
চায়নি বলেই সম্প্রতি কোয়েম্বাতুরের এটিএম-এর সামনে জমায়েত হলেন একদল মহিলা। এবং, তার পর তাঁদের দেখা গেল এটিএম মেশিনের মৃত্যু পালন করতে! শোক করতে! তাঁদের সেই শোকের বহির্প্রকাশ দেখলে মনে হবে, ঠিক যেন কোনও নিকটাত্মীয়র মৃত্যু হয়েছে!
অবশ্য এরকম একটা কথা আছে না- এই দুনিয়ায় টাকার চেয়ে বেশি আপন আর কেউ হয় না? সে কথা কতটা সত্যি, তা নিয়ে পাতার পর পাতা বিতর্ক খাড়া করা যেতেই পারে! কিন্তু এই নিয়ে কোনও সন্দেহই নেই যে সারা দেশের এখন প্রয়োজনমতো টাকা পেতে নাজেহাল অবস্থা! দেশের সব জায়গাতেই এটিএম মেশিনে টাকার অভাব। ঠিক যেন মৃত্যুর শূন্যতা!
ফলে, সিদ্ধান্ত নিতে দেরি করেননি কোয়েম্বাতুরের এক বামপন্থী রাজনৈতিক দলের ওই মহিলা সদস্যরা। ভেবে নিলেন, প্রতিবাদ হিসেবে কোন পথ বেছে নেবেন তাঁরা! যেমন ভাবা, তেমন কাজ! নির্দিষ্ট দিনে তাই তাঁরা পৌঁছে গেলেন এক এটিএম মেশিনের সামনে। বলাই বাহুল্য, সেই এটিএম মেশিনে টাকা ছিল না।
তার পরের ঘটনা শুধু থ হয়ে দেখে যাওয়ার! মহিলারা দক্ষিণ ভারতীয় রীতি অনুসারে শুরু করলেন শেষকৃত্যের গান। ফুলের মালা রাখলেন এটিএম মেশিনে, যে ভাবে মরদেহে ফুল দেওয়া হয়। তার পর শুরু হল সমস্বরে কান্নাকাটি! নিচের ভিডিওয় ক্লিক করে দেখুন না শোকপালনের বহরটা!
যদিও শুধুই কোয়েম্বাতুর নয়। কেরলেও একই পথে এটিএম-এর মৃত্যুপালন করেছে বিরোধী রাজনৈতিক দল। সেখানে তারা ফুলের তোড়া রেখে এসেছে সিঁড়িতে। পাশাপাশি, আরও এক অভিনব ব্যাপার শুরু হয়েছে কেরলে নরেন্দ্র মোদির পুরনো নোট বাতিলের সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে। সেখানে মোদির সিদ্ধান্তের অভিঘাতে দেখা যাচ্ছে এটিএম মেশিনকে ঘিরে লুঙ্গি পরার দুরকমের কায়দা। ব্যাপারটা কী?
দক্ষিণ ভারতের রীতি অনুযায়ী কোনও সম্মানীয় স্থানে গেলে ধুতি বা লুঙ্গি গোড়ালি ঢেকে পরা উচিত! অন্য সব জায়গায় তা পরা যেতে পারে হাঁটুর উপরে তুলে! এখন দেশজুড়ে মেশিনে এই টাকার আকাল এটিএম-কে যেন বা করে তুলেছে সম্মানীয় স্থান। তাই দেখা যাচ্ছে, এটিএম-এর সামনে যাঁরা লাইন দিয়েছেন, তাঁরা সকলেই লুঙ্গি পরে আছেন গোড়ালি ঢেকে। ছবিটা দেখুন!
কী ভাবছেন? তাহলে ওই যাঁরা লুঙ্গি পরে আছেন হাঁটুর উপরে তুলে, তাঁরা কীসের জন্য লাইন দিয়েছেন?
ওটা মদের দোকানের লাইন! দুই লাইন যাতে মিশে না যায়, কেউ যাতে অন্যের আগে লাইনে ঢুকে না পড়ে, তাই এই ব্যবস্থা! তবে যাঁরা আগে এটিএম থেকে টাকা তুলছেন, তাঁরাই পরে মদের দোকানে গিয়ে লাইন দিচ্ছেন কি না, তা বলা মুশকিল!
The post টাকা না পেয়ে এটিএম-এর মৃত্যুপালন মহিলাদের! appeared first on Sangbad Pratidin.