সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গায়ের রং ফরসা হোক বা শ্যামবর্ণ, ত্বক মসৃণ হলে দেখতে ভাল লাগে। গায়ে রোম বা মুখে রোম সৌন্দর্যের পরিপন্থী। তাই ত্বক ও চুলের যত্ন যেমন নিয়মিত জরুরি, তেমনই নিয়ম মেনে হেয়ার রিমুভালও জরুরি। হেয়ার রিমুভাল বা ওয়াক্সিং-এ রোমকূপের একেবারে গোড়া থেকে রোম তুলে ফেলা হয়। ওয়াক্সিং করা অংশে রোম নতুন করে ফিরে আসতে সময় লাগে ৪-৬ সপ্তাহ। তবে হেয়ার গ্রোথ দ্রুত হলে আগেই উঠতে শুরু করে। ওয়াক্সিং নিয়মিত করলে হেয়ার গ্রোথ কমতে থাকে। এই প্রতিবেদনে থাকছে ওয়াক্সিং-এর সাত-সতেরো।
সফট ওয়াক্স: এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য ওয়াক্সিং-এর পদ্ধতি হল সফট ওয়াক্স। এটা সাধারণত প্যারাফিন বা বি-ওয়াক্স দিয়ে তৈরি হয়। দু’ধরনের সফট ওয়াক্স হয় হট এবং কোল্ড। হট ওয়াক্স, কোল্ড ওয়াক্স-এর থেকে তুলনামূলকভাবে হালকা এবং কম পেনফুল।
[শীতকালে ফ্যাশন ইন এই ব্যাগগুলি, দেখে নিন একনজরে]
হার্ড ওয়াক্স: হার্ড ওয়াক্স মুখের সংবেদনশীল ও ছোট্ট অংশের জন্য ব্যবহৃত হয়- যেমন, আপার লিপস, আইব্রো, আন্ডার আর্মস ইত্যাদি। এই ওয়াক্স প্রথমে গরম থাকে, তারপর ঠান্ডা করে যখন সলিড হয়ে যায় তখন অ্যাপ্লাই করা হয়। এই দুটো ওয়াক্সিং নর্মাল স্কিনের উপযোগী। যাঁদের সেনসেটিভ স্কিন, তাঁরা এই দু’ধরনের ওয়াক্স বাদ দিয়ে অন্য উপযোগী ওয়্যাক্স বেছে নিন।
ফ্রুট ওয়াক্স: ফ্রুট ওয়াক্স সেনসেটিভ স্কিনের জন্য উপযোগী। ফলের পুষ্টিগুণে ভরপুর এই ওয়াক্সে থাকে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, যা সেনসিটিভিটি কমায়। ত্বক সুরক্ষিত রাখে।
সুগার ওয়াক্স: সুগার ওয়াক্সের মূল উপাদান হিসেবে চিনি তো থাকেই, সঙ্গে লেমন ওয়াটারও থাকে। যদি ত্বক তৈলাক্ত বা সংবেদনশীল হয় বা র্যাশপ্রবণ হয়, তবে সুগার ওয়াক্স খুব উপযোগী। এটি সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক। ত্বকে কোনও টান পড়ে না এই ওয়াক্সিং পদ্ধতিতে।
চকোলেট ওয়াক্স: এখন আর ওয়াক্সিং শুধু রোম তোলার পদ্ধতি নয়, রোম তোলার পাশাপাশি ত্বক নরম, কোমল রাখা, রিজুভিনেট করা সবটাই ওয়াক্সিং-এর মাধ্যমে করা সম্ভব। চকোলেট ওয়াক্সিং শুধু হেয়ার রিমুভ করে এমন নয়, ত্বক উজ্জ্বল ও যৌবনোদ্দীপ্ত করে। এতে থাকে ময়েশ্চারাইজিং প্রপার্টি, যা ত্বককে ময়েশ্চারাইজ করে।
বিকিনি ওয়াক্স: বিকিনি ওয়াক্স মূলত পিউবিক হেয়ার রিমুভালের একটি পদ্ধতি, বিকিনি লাইন এরিয়াতেই এই ওয়াক্সিং হয়। বিকিনি ওয়াক্স করার আগে দেখে নিন পিউবিক হেয়ার লেন্থ অন্তত কোয়ার্টার ইঞ্চি লম্বা আছে কি না, নচেৎ ওয়াক্সিং প্রপার্লি হবে না। যদি আগে কখনও বিকিনি ওয়াক্সের অভিজ্ঞতা না থাকে, তাহলে এটি পেনফুল হতে পারে। কারণ পিউবিক হেয়ার নিয়মিত ট্রিম না করালে তা মোটা ও শক্ত হয়ে যায়। বিকিনি ওয়াক্সিং করতে নানা ধরনের বডি ওয়াক্স ব্যবহার করা হয়। বিশেষজ্ঞের তত্ত্বাবধানে জেনে নিয়ে তবেই করুন।
[সাবেকি না ফিউশন? জেনে নিন বিয়েবাড়িতে কোন সাজে হয়ে উঠবেন অনন্যা]
ব্রাজিলিয়ান ওয়াক্স: বিকিনি ওয়াক্সের সঙ্গে একই গোত্রের ব্রাজিলিয়ান ওয়াক্স। এক্ষেত্রে আরও নিখুঁত ভাবে পরিচ্ছন্নভাবে বিকিনি লাইনের পিউবিক হেয়ার রিমুভ করা হয়। ব্রাজিলিয়ান ওয়াক্সে ভ্যাজাইনা লিপসের হেয়ারও মসৃণভাবে রিমুভ করে দেওয়া হয়। নানা উপাদান দিয়ে তৈরি হয় ব্রাজিলিয়ান ওয়াক্স, যা শুধু হেয়ার রিমুভ করে না, বিকিনি লাইন ও ভ্যাজাইনার নরম চামড়াকে সুরক্ষিত ও কোমল রাখে।
লাইপোসলিউবল ওয়াক্স: এটি অত্যাধুনিক একটি ওয়াক্সিং পদ্ধতি। প্রতিটা ত্বক আর তার রোমের ধরন অনুযায়ী ফর্মুলেটেড হয় এই গোত্রের ওয়াক্স। অর্থাৎ যাঁর যেমন হেয়ার গ্রোথ, যেমন স্কিন, ঠিক সেই হেয়ার ও স্কিনের উপযোগী ওয়াক্স। খুব নরম ভাবে রোম ওঠে, ফলে একেবারেই কম ব্যথা বা যন্ত্রণার বোধ হয়। কোনও লালচে ভাব আসে না। যে কোনও স্কিনে নিশ্চিন্তে অ্যাপ্লাই করা যায়। লাইপোসলিউবল ওয়াক্স তৈরি হয় নানা উপাদানে- যেমন, অ্যালোভেরা, আর্গান অয়েল, বানানা, কোকোনাট, হানি, লেমন, মিল্ক, অলিভ অয়েল ইত্যাদি।
হট ওয়াক্স: যাঁদের ভীষণ সংবেদনশীল ত্বক, তাঁদের জন্য হট ওয়াক্স খুব উপযোগী। এতে থাকে টাইটানিয়াম ডাইঅক্সাইড, যা ত্বকের সেনসিটিভিটি প্রতিরোধ করে। সুদিং এফেক্ট দেয়। হট ওয়াক্স গরম করে ত্বকে দেওয়া হয়। এটি লাগানোর পর ত্বকে সেট হয়ে যায়। কাপড়ের সাহায্যে তুলে ফেলা হয়।
কোল্ড ওয়াক্স: কোল্ড ওয়াক্সেরও ধরন প্রায় এক। তবে এটা একেবারে স্ট্রিপে লাগানো অবস্থায় তৈরি হয়ে আসে, আবার সরাসরি ত্বকে লাগিয়ে কাপড়ের স্ট্রিপ দিয়ে তুলে ফেলা যায়।
ওয়াক্সিং-এর পরবর্তী যত্ন: ওয়াক্স করার ১২ থেকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কোনও হিট অ্যাপ্লাই করবেন না। যেমন, হট বাথ, স্টিম বা সনা বাথও এড়িয়ে চলুন। রোদের তাপ ২৪ ঘণ্টার মধ্যে না লাগে সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। ইউভি লাইট এক্সপোজার হয় এমন ট্রিটমেন্টও করা যাবে না ২৪ ঘণ্টার মধ্যে। ওয়াক্স করা অংশে খুব কড়া এক্সফোলিয়েটর ব্যবহার না করাই ভাল। হাই এসপিএফ যুক্ত সানব্লক ১২ থেকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ওয়াক্স করা অংশে ব্যবহার করবেন না। ভাল ফল পাওয়ার জন্য ৪ থেকে ৬ সপ্তাহ পর আবার ওয়াক্স করতে হবে।
The post ওয়াক্সিংয়ে ফিরে পান আপনার যৌবন, জেনে নিন খুঁটিনাটি appeared first on Sangbad Pratidin.