সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অফিসে অসম্ভব কাজের চাপেই মৃত্যু হয়েছে আর্নস্ট অ্যান্ড ইয়ং (ইওয়াই) ইন্ডিয়া কোম্পানির পুণের অফিসের চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট অ্যানা সেবাস্টিয়ানের পেরাইলের। এমনই অভিযোগ করেছেন ২৬ বছরের সদ্য প্রয়াত তরুণীর মা। তাঁর দাবিকে সমর্থন করে সরব হয়েছেন দেশের বিভিন্ন প্রান্তের বহুজাতিক সংস্থার কর্মীরা। সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ইস্যুতে চাপানউতোর শুরু হতেই কেন্দ্রীয় শ্রমমন্ত্রক অ্যানার মৃত্যুর ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে।
২০ জুলাই গুরুতর অসুস্থ হয়ে আচমকা মৃত্যু হয় অ্যানার। তাঁর শেষকৃত্যে ইওয়াই-এর তরফে কেউ উপস্থিতও ছিল না। সংস্থার চেয়ারম্যান রাজীব মেমানিকে একটি ই-মেল লিখে আন্নার মা অনিতা জানান, মাত্র চার মাস আগে অফিসে যোগ দিয়েছিলেন তাঁর মেয়ে। শুরু থেকেই অমানবিক চাপ দেওয়া হত। আর কোনও তরুণ-তরুণীকে যাতে তাঁর মেয়ের মতো অকালে চলে যেতে না হয়, তার জন্য অফিসে কর্মসংস্কৃতি ও নেতৃত্বকে পরিবর্তন করার আর্জি জানান তিনি।
অনিতার কথায়, “মেয়ের সিএ হওয়ার সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার জন্য গত ৬ জুলাই আমি ও আমার স্বামী পুণেতে পৌঁছই। ওর বুকে অস্বস্তি হচ্ছে শুনে হাসপাতালে নিয়ে যাই। ডাক্তাররা জানান, অ্যানার পর্যাপ্ত ঘুম হচ্ছে না। অনেক রাত করে খাওয়ার জন্য এমন হচ্ছে। পরের দিন সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যাবে বলে ওয়ার্ক ফ্রম হোম করছিল অ্যানা। সেই জন্য অনেক দেরি হয়ে যায় অনুষ্ঠানে পৌঁছতে। আমার মেয়ের স্বপ্ন ছিল ওর সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত হওয়ার জন্য নিজের টাকায় আমাদের জন্য বিমানের টিকিট কেটে দেবে। গিয়ে দেখলাম, ওর নিশ্বাস নেওয়ার ফুরসত নেই। ওর অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার ফোন করে সমানে কাজ দিয়ে যাচ্ছিল। আমার মেয়ে সহজে হেরে যাওয়ার পাত্রী ছিল না। ও নিজের সেরাটা কোম্পানিকে দিতে গিয়ে নিজেই চলে গেল।”
শ্রম মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী শোভা কারান্দলাজে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন, “অ্যানা সেবাস্টিয়ানের মৃত্যুতে দুঃখিত। অস্বাভাবিক কাজের চাপ ও অসুরক্ষিত পরিবেশ নিয়ে মেয়েটির কর্মক্ষেত্রের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে তা তদন্ত করে দেখা হবে। বিচার পাইয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিচ্ছি।” আর্নস্ট অ্যান্ড ওয়াই সংস্থার রাজীব মেমানি দাবি করেছেন, সেবাস্টিয়ানের মৃত্যু অতিরিক্ত কাজের চাপে হয়েছে সেটা আমি বিশ্বাস করি না। জানি মৃত্যুর কোনও ক্ষতিপূরণ হয় না। কিন্তু আমরা সবরকমভাবে ওই পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছি।