সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কুমার সঙ্গকারা বাজি ধরেছেন ইংল্যান্ডে। গৌতম গম্ভীরের আবার মন চাইছে নিউজিল্যান্ড কিন্তু মস্তিষ্ক বলছে আজ লর্ডসে লর্ড হয়ে উঠবে ইংল্যান্ডই। তবে প্রাক্তনীরা একটি বিষয়ে একমত। সুপার সানডের গ্র্যান্ড ফিনালেতে হাইভোল্টেজ ম্যাচেরই সাক্ষী থাকবে গোটা বিশ্ব। কিন্তু পরিসংখ্যান কী বলছে? বিশ্বকাপের মঞ্চে ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ডের টক্করে কে এগিয়ে? চলুন মেগা ম্যাচের আগে একবার ঘেঁটে দেখা যাক ইতিহাসের পাতা।
ওয়ানডে-তে এখনও পর্যন্ত দুই দল মুখোমুখি হয়েছে মোট ৯০ বার। যার মধ্যে ৪৩ ম্যাচে জয়ী কিউয়িরা। ৪১টি ম্যাচ পকেটে পুরেছে ইংল্যান্ড। ড্র দিয়ে শেষ হয়েছিল দুটি ম্যাচ। চারটি ম্যাচের কোনও ফলাফল হয়নি। বিশ্বকাপের মঞ্চে দুই দলের সাক্ষাৎ মোট ন’বার। যার মধ্যে সর্বশেষ লড়াই চলতি টুর্নামেন্টের গ্রুপ পর্বেই। যেখানে ১১৯ রানে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে সেমিফাইনালে জায়গা পাকা করেছিলেন ইয়ন মর্গ্যানরা। তবে পরিসংখ্যান বলছে, এখানেও এগিয়ে কিউয়িরাই। বিশ্বকাপের পাঁচটি ম্যাচে জয়ী নিউজিল্যান্ড এবং চারটিতে ইংলিশ বাহিনী।
[আরও পড়ুন: ইতিহাসের সামনে ক্রিকেটের আবিষ্কর্তা ইংল্যান্ড, উইলিয়ামসনই শক্তি কিউয়িদের]
- ১৯৭৫ বিশ্বকাপ অর্থাৎ ক্রিকেট দুনিয়ার প্রথম বিশ্বকাপে আবিষ্কর্তা ইংল্যান্ড ৮০ রানে হারিয়েছিল নিউজিল্যান্ডকে। ২৬৭ রান তাড়া করতে নেমে ১৮৬ রানেই গুটিয়ে যান কিউয়িরা।
- ১৯৭৯ বিশ্বকাপেও কিউয়িদের বিরুদ্ধে জয়ী ইংল্যান্ডই। গ্রাহাম গুচের দুর্দান্ত ইনিংসে ভর করে ইংল্যান্ড পৌঁছে যায় ২২১ রানে। জবাবে জন রাইটের নজরকাড়া ব্যাটিংয়ে জয়ের অনেকটাই কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিল নিউজিল্যান্ড। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। সেবার ন’রানে হারে তারা।
- ১৯৮৩ বিশ্বকাপে ছবিটা ছিল অন্যরকম। ভারতের হাতে যেবার প্রথম বিশ্বকাপের ট্রফি ওঠে, সেবার দুই পর্বে মুখোমুখি হয়েছিল দু’দল। প্রথম সাক্ষাতে নিউজিল্যান্ডকে হেলায় হারিয়েছিল ইংল্যান্ড। ৩২৩ রান তাড়া করতে নেমে ১০৬ রানে পরাস্ত হয় তারা। ইংল্যান্ডের জার্সি গায়ে ওয়ানডে কেরিয়ারের তৃতীয় সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছিলেন অ্যালান ল্যাম্ব।
- সেই বিশ্বকাপেই পরের সাক্ষাতে ইংল্যান্ডকে দুই উইকেটে হারিয়ে মধুর প্রতিশোধ নেয় কিউয়ি ব্রিগেড। রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে মাত্র এক বল বাকি থাকতে ম্যাচ পকেটে পোরে নিউজিল্যান্ড।
- ১১৯২ বিশ্বকাপের ফাইনালে পৌঁছে গিয়েছিল ইংল্যান্ড। তবে টুর্নামেন্টে নিউজিল্যান্ডের কাছে পরাস্ত হতে হয়েছিল ইংল্যান্ডকে। ৬০ ওভার থেকে সেবার ফর্ম্যাট হয়ে দাঁড়ায় ৫০ ওভারের। ৭ উইকেটে ম্যাচ জিতেছিলেন কিউয়িরা।
- ১৯৯৬ বিশ্বকাপেও নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে জিততে ব্যর্থ হয় ইংল্যান্ড। প্রথমে ব্যাট করে নিউজিল্যান্ড ৬ উইকেটে তোলে ২৩৯ রান। কিন্তু সে রান তুলতে পারেনি প্রতিপক্ষ। ইংল্যান্ড হারে ১১ রানে।
- ২০০৭ বিশ্বকাপেও বাজিমাত করে কিউয়িবাহিনীই। দুর্দান্ত অপরাজিত ৮৭ রানের ইনিংস খেলে একপ্রকার হারতে বসা ম্যাচ জেতান স্কট স্টাইরিস। ৫৪ বল বাকি থাকতেই ৬ উইকেটে ম্যাচ পকেটে পোরেন তাঁরা। জলে যায় কেভিন পিটারসেন, জেমস অ্যান্ডারসনদের লড়াই।
- এবারের বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডকেই ফেভরিট হিসেবে ধরা হচ্ছে। কিন্তু ২০১৫ অর্থাৎ গত বিশ্বকাপের দিকে তাকালেও কিন্তু দেখা যাবে, আধিপত্য ছিল কিউয়িদেরই। মাত্র ১২.২ ওভারে ইংল্যান্ডকে ৮ উইকেটে হারিয়েছিল তারা। ২৫ বলে চোখ ধাঁধানো ৭৭ রান করেছিলেন ব্রেনডন ম্যাকালামরা।
এবার ঘরের মাঠে পাল্লা ভারী মর্গ্যানদেরই। আন্ডারডগ হিসেবেই ধরা হচ্ছে কিউয়িদের। কিন্তু ঠান্ডা মাথার অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন বলে দিচ্ছেন, তাঁদের যে ‘ডগ’ই ভাবা হোক না কেন, তিনি ও তাঁর দল মাঠে নিজেদের সেরাটাই দেবেন। বিশ্বকাপে নেতা হিসেবে রেকর্ড গড়ার থেকে আর মাত্র এক রান দূরে তিনি। ক্যাপ্টেন হিসেবে বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ রানের মালিক শ্রীলঙ্কার মাহেলা জয়বর্ধনে। চলতি টুর্নামেন্টে সেই রান ইতিমধ্যেই ছুঁয়ে ফেলেছেন উইলিয়ামসন। আর এক রান করলেই এই তালিকার শীর্ষে পৌঁছে যাবেন তিনি। তবে ব্যক্তিগত রেকর্ড ছাপিয়েও অধিনায়কের লক্ষ্য কাপ জিতে ইতিহাস গড়ার।
[আরও পড়ুন: সেমিফাইনালে আদৌ কি নো বলে আউট ছিলেন ধোনি? জেনে নিন আসল ঘটনা]
The post নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে সত্যিই কি এগিয়ে ইংল্যান্ড? কী বলছে বিশ্বকাপের পরিসংখ্যান? appeared first on Sangbad Pratidin.