shono
Advertisement

আমেরিকার ওষুধে সাফল‌্য! করোনা রুখতে আশার আলো দেখাচ্ছে রেমডিসিভির

ওষুধটির ক্লিনিকাল ট্রায়ালের দাবি জানান ভারতীয় চিকিৎসকরা। The post আমেরিকার ওষুধে সাফল‌্য! করোনা রুখতে আশার আলো দেখাচ্ছে রেমডিসিভির appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 08:56 AM May 01, 2020Updated: 08:56 AM May 01, 2020

প্রীতিকা দত্ত: করোনার ভয়ে কাঁটা গোটা বিশ্ব। একটা ভ্যাকসিন! বা একটা ট্যাবলেটও যদি মেলে! তাহলেই রক্ষা পাবে লক্ষ লক্ষ প্রাণ। মুশকিল আসান হবে অনেকখানি। সেই লক্ষ্যেই দিনরাত এক করছেন বিজ্ঞানীরা। এমন একটা সময় করোনা-চিকিৎসায় আশার আলো দেখাচ্ছে অ্যান্টিভাইরাল ড্রাগ রেমডেসিভির (Remdesivir)। এই ওষুধ মানব শরীরে নোভেল করোনাভাইরাসের বংশবৃদ্ধি রুখতে সাহায্য করছে। বুধবার এমনটাই দাবি করেছেন ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ অ্যালার্জি অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজ’-এর প্রধান অ্যান্টনি ফাওসি। হোয়াইট হাউসে দাঁড়িয়ে এই ঘোষণার পর আন্তর্জাতিক চিকিৎসক মহলে সাড়া জাগিয়েছে।

Advertisement

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মহামারী বিশেষজ্ঞ হিসেবে অ্যান্টনি ফাওসির নামডাকও রয়েছে। আটের দশকে ফাওসির তৎপরতাতেই এইচআইভি–র অ্যান্টিভাইরাল ড্রাগের খোঁজ মিলেছিল। সেই ফাওসিই দাবি করেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কোভিড পজিটিভের শরীরে ঢালের মতো কাজ করছে রেমডেসিভির। ফাওসি জানাচ্ছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দু’লক্ষের বেশি মানুষের উপর এই অ্যান্টিভাইরাল ড্রাগ প্রয়োগ করা হয়েছে। পর্যবেক্ষণের পর জানা গিয়েছে, সাধারণ ওষুধের (প্লেসিবো) তুলনায় যে সব রোগীকে রেমডেসিভির দেওয়া হয়েছিল তাঁদের সুস্থ হতে ৩০ শতাংশ সময় কম লেগেছে। এর আগে চিন এবং দক্ষিণ কোরিয়ার কোভিড রোগীদের উপর এই ড্রাগ প্রয়োগ করা হয়েছে, সুফলও মিলেছে। চিনের মানুষের উপর করা গবেষণাপত্রটি ‘ল্যানসেট’ জার্নালে ইতিমধ্যেই প্রকাশিত হয়েছে। রেমডিসিভির নিয়ে বিশিষ্ট ভাইরোলজিস্ট ডা. অমিতাভ নন্দী বলছেন, “ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের নিজস্ব জটিলতা থাকে। করোনাভাইরাসের মতো রোগে এত কম সময়ে কোনও ওষুধ কাজ করছে বলে দেওয়াটা কতটা উচিত, আমার জানা নেই। যে কোনও ওষুধ বাজারে আনার আগে বড় মাত্রায় মাল্টিসেন্ট্রিক র‌্যানডমাইজড ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল দরকার। যেটা বিভিন্ন মহাদেশের নানা বর্ণের মানুষকে নিয়ে করতে হয়। সেই গবেষণা হবে সম্পূর্ণ পক্ষপাতমুক্ত এবং পুনর্গঠনযোগ্য। পুরোটাই কিন্তু বেশ সময়সাপেক্ষ।”

[আরও পড়ুন:করোনা আক্রান্তের দেহ সৎকার করতে গিয়ে ধুন্ধুমার, উন্মত্ত জনতার রোষের শিকার পুলিশ]

কোনও নতুন রোগের ড্রাগে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে সাধারণভাবে কোন কোন দিক দেখা হয়ে থাকে? যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মাকোলজির অধ্যাপক সন্ময় কর্মকার জানাচ্ছেন, নতুন ড্রাগের জন্য প্রিক্লিনিক্যাল এবং ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল দরকার। প্রিক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে প্রোটোকল মেনে প্রাণীর দেহে ওষুধ প্রয়োগ করা হয়। সেই কাজ সম্পূর্ণ হলে আসে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের পালা। তার জন্যও ড্রাগ কন্ট্রোল বোর্ডের আইন রয়েছে। ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল মানবশরীরে হয়। এক্ষেত্রে ট্রায়ালের আগে নির্দিষ্ট স্টাডি ডিজাইন করেন বিজ্ঞানীরা। তার পর একদলকে বলে দেওয়া হয়, আপনাকে এই ওষুধ দেওয়া হচ্ছে। আর অন্য একদলকে ওষুধের ব্যাপারে কোনও তথ্য দেওয়া হয় না। তাঁরা সাধারণ ওষুধের মতোই ওই নতুন ওষুধ খেতে শুরু করেন। ওষুধে কারও কোনও বিষক্রিয়া এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হচ্ছে কিনা সেই তথ্য পর্যালোচনা করার পর সিডিসি বা এফডিএ থেকে নতুন ড্রাগকে সবুজ সংকেত দেওয়া হয়ে থাকে।

[আরও পড়ুন:শহরজুড়ে মানা হচ্ছে লকডাউন? উত্তর ও মধ্য কলকাতা পরিদর্শন পুলিশ কমিশনারের]

ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের ক্ষেত্রে তাড়াহুড়োর কোনও জায়গা নেই। গবেষণায় ফাঁকফোকর থাকলেও চলবে না। কারণ, সেটা হলে খেসারত দিতে হবে সাধারণ মানুষকেই। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কোভিডের মতো রোগের ক্ষেত্রে টিকা ছাড়া গতি নেই। যে কোনও রোগে টিকা তৈরিতে ১৫ থাকে ১৮ মাস লাগে। কোভিডের টিকার ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু হয়েছে। তেমনই নতুন রোগের ড্রাগের ক্ষেত্রে তিন ফেজের ট্রায়াল দরকার। নাহলে ভবিষ্যতে কার কীসে সমস্যা হবে, তা জানা মুশকিল। যদিও রেমডেসিভিরের একটা ইউএসপি রয়েছে। আফ্রিকার ইবোলা মহামারীর ক্ষেত্রে এই ওষুধ জীবনদায়ী প্রমাণিত হয়েছিল। যাঁরা রেমডেসিভিরের ডোজে সুস্থ হয়েছিলেন, তাঁদের শরীরে কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। এটা আশার দিক তো বটেই। তবে সন্ময়বাবুর প্রশ্ন, সার্স–কোভ–টুয়ের বংশবৃদ্ধিতে বাধা দেয় রেমডেসিভির। কিন্তু এই ওষুধে কোভিড পজিটিভের মৃত্যুহার কমবে কি, সেটা এখনও পরীক্ষনীয়।

The post আমেরিকার ওষুধে সাফল‌্য! করোনা রুখতে আশার আলো দেখাচ্ছে রেমডিসিভির appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement