সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: "বিশ্বাসঘাতকের যুগের অবসান হল, বাংলাদেশের বিপ্লবীরা গুঁড়িয়ে দিল মুজিবর রহমানের বাড়ি।" পদ্মাপাড়ে বুধবার থেকে শুরু হওয়া নৈরাজ্যের ঘটনায় এই ভাষাতেই উল্লাস প্রকাশ করল পাকিস্তান সেনা। মুজিবরের ধানমন্ডির বাড়ি, দেশজুড়ে একাধিক জায়াগায় বঙ্গবন্ধুর মূর্তি ভাঙার ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর এক্স হ্যান্ডেলে প্রতিক্রিয়া জানায় পাক সেনা। সমাজমাধ্যমের ওই পোস্ট তুলে ধরেন বাংলাদেশি লেখিকা তসলিমা নাসরিন। সব মিলিয়ে হাসিনা সরকারের পতনের ছয় মাস পর ফের টালামাটাল রাজনৈতিক পরিস্থিতি প্রতিবেশী দেশে।
'ডিফেন্স পাকিস্তান'-এর এক্স হ্যান্ডেল পোস্টে লেখা হয়েছে---"বাংলাদেশের বিপ্লবীরা গুঁড়িয়ে দিল ৩২ ধানমন্ডির মুজিবর রহমানের বাড়ি। যেখানে ভারতের ষড়যন্ত্রে পাকিস্তান ভাঙার ছক কষা হয়েছিল। এর ফলে বাংলাদেশে মুজিবরের কিয়দংশও অবশিষ্ট রইল না।" এখানেই না থেমে পাক সেনার পোস্টে বলা হয়েছে, "ভারতের স্বার্থসিদ্ধি করতে এবং বাংলাদেশে নৈরাজ্য তৈরি করতে ভারত থেকে শেখ হাসিনা ভাষণ দেবেন, একথা জানতে পেরেই অভিযান শুরু করে বিপ্লবীরা।" পাক সেনার এই পোস্ট তুলে ধরেন লেখিকা তসলিমা নাসরিন। যদিও তিনি নিজে আলাদা করে কোনও মন্তব্য করেননি।
বুধবার রাত থেকে বাংলাদেশে শুরু হয়েছে ধ্বংসযজ্ঞ। গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে শেখ মুজিবর রহমানের ধানমন্ডির বাড়ি, জেলায় জেলায় ভাঙা হচ্ছে মুজিবের মূর্তি-সহ যাবতীয় স্মৃতি। এমনকী হাসিনার বাসভবনে সুধা সদনেও আগুন দিয়েছে উন্মত্ত জনতা। এই বুধবারই ছিল আওয়ামি লিগ সরকারের পতনের ছয় মাস। এদিন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে ফের মুখ খোলেন দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ৫৮ মিনিটের ভাষণে হাসিনা বলেন, “ইতিহাস প্রতিশোধ নেয়, বঙ্গবন্ধু হৃদয়ে। দালান ভাঙলেও ইতিহাস মুছতে পারবে না।”
দিল্লি থেকে ভিডিও বার্তায় ‘বেইমান’ ইউনুসকে রীতিমতো হুঁশিয়ারি দিয়েছেন হাসিনা। তিনি বলেন, “লাখো শহিদের রক্তের বিনিময়ে আমরা যে সংবিধান, স্বাধীনতা, পতাকা পেয়েছি— তা কয়েক জন বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দিতে পারবে না। এ শক্তি তাঁদের এখনও হয়নি। এটি তাঁদের দুর্বলতার প্রকাশ। তাঁরা দালান ভাঙতে পারে, কিন্তু ইতিহাসকে ধ্বংস করতে পারে না। ইতিহাস যে প্রতিশোধ নেয়। এ কথা তাঁদের মনে রাখতে হবে। যাঁরা এ সব করছেন, তাঁরা হীন মনের পরিচয় দিচ্ছেন। তাঁদের হয়তো বাংলাদেশের স্বাধীনতা পছন্দ নয়। পাকিস্তানিদের অধীনে থাকা এবং পদলেহন করাটাই হয়তো তাঁদের পছন্দ।” বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বস্তুত পাক সেনার পোস্টে হাসিনার বক্তব্যই প্রতিফলিত হল।
