সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মৌলবাদীদের তাণ্ডবে জ্বলছে গোটা বাংলাদেশ। এখানে হিন্দুদের উপর ভয়ংকর নির্যাতন চলছে। ভয়াবহ এই পরিস্থিতিতে সতর্ক ব্রিটেন। দেশবাসীকে বাংলাদেশ সফরে না যাওয়ার পরামর্শ দিল ব্রিটেনের 'ফরেন কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট অফিস' (এফসিডিও)। যেখানে আশঙ্কা করা হয়েছে, বাংলাদেশে ভিন্নধর্মী ও বিদেশিদের উপর জঙ্গি হামলা হতে পারে।
মঙ্গলবার এই বিষয়ে নির্দেশিকা জারি করে ব্রিটেনের তরফে জানানো হয়েছে, ''বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি যথেষ্ট উদ্বেগজনক। ফলে এই সময় সেখানকার জনাকীর্ণ স্থান জনাকীর্ণ এলাকা, ধর্মীয় স্থান ও রাজনৈতিক সমাবেশের পাশাপাশি স্পর্শকাতর জায়গাগুলি এড়িয়ে যাওয়া উচিত। একইসঙ্গে জানানো হয়, বাংলাদেশের কিছু গোষ্ঠী বেছে বেছে অমুসলিমদের উপর হামলা চালাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে সে দেশে বিদেশিদের উপর জঙ্গি হামলা হতে পারে।" ফলে ব্রিটেনের নাগরিকদের বাংলাদেশ সফরে না যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নামে জনবিক্ষভের জেরে গত ৫ আগস্ট বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতে চলে আসেন শেখ হাসিনা। মুজিবকন্যাকে দেশছাড়া করার পর বাংলাদেশের শাসনভার হাতে নেন মহম্মদ ইউনুস। তাঁর নেতৃত্বে গড়ে ওঠে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এর পর থেকেই সেখানে শুরু হয় গণহত্যা। বেছে বেছে টার্গেট করা করা হয় সংখ্যালঘু হিন্দুদের। লুঠপাঠের পাশাপাশি খুন ও হিন্দু মহিলাদের উপর নির্যাতন ভয়াহব আকার নেয়। অসংখ্য মন্দিরে ভেঙে ফেলে মৌলবাদীরা। এত কিছুর পরও পরিস্থিতি সামাল দিতে কোনও উদ্যোগ নেয়নি ইউনুস সরকার। উলটে হিন্দুদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মুখ চিন্ময় প্রভুকে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়। ঘটনার জেরে দফায় দফায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বাংলাদেশ।
এদিকে বাংলাদেশে হিন্দু নিধনের বিরোধিতায় সম্প্রতি উত্তাল হতে দেখা গিয়েছে ব্রিটিশ পার্লামেন্ট। গত বৃহস্পতিবারই ব্রিটিশ সংসদে বাংলাদেশের গুরুতর পরিস্থিতি নিয়ে সরব হয়েছিলেন কনজারভেটিভ পার্টির সাংসদ বব ব্ল্যাকম্যান। তিনি বলেন, “বাংলাদেশে হিন্দুদের হত্যা করে তাঁদের বাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছে। গোটা ঘটনায় দায় রয়েছে আমাদেরও, কারণ বাংলাদেশকে স্বাধীন হতে সাহায্য করেছিল ব্রিটেন।” এর পর সোমবার ব্রিটিশ সংসদে সরব হন সেদেশের প্রাক্তন স্বরাষ্ট্র সচিব প্রীতি প্যাটেল। ভারতীয় বংশোদ্ভূত এই সাংসদ বলেন, “যেভাবে বাংলাদেশে হিংসার ঘটনা বেড়েই চলেছে, সেটা খুবই উদ্বেগজনক। বাংলাদেশের পরিস্থিতি দেখে আমরা আতঙ্কিত।” সরকারের কাছে প্রীতির প্রশ্ন করেন, লাগাতার হিংসা রুখতে কী কী পদক্ষেপ করা হয়েছে? বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারকে কী বার্তা দিয়েছে ব্রিটিশ সরকার?