সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ঝড়ের প্রাক্কালে প্রকৃতি যেমন আশ্চর্যরকম শান্ত হয়ে যায়, বিশ্বব্যাপী শেয়ার বাজারের বর্তমান অবস্থা অনেকটা তেমনই। বড়সড় বিপর্যয়ের আগে সেই 'গুমোট' ভাব চলছে দালাল স্ট্রিট-সহ বিশ্বের অন্যান্য বাজারগুলিতে! 'ব্ল্যাক মানডে'র পর মঙ্গলের বাজারে খানিকটা উত্থান দেখা দিলেও ফাঁদে পা না দেওয়ার বার্তা দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। দাবি করা হচ্ছে, বিশ্ববাজারের বর্তমান যা অবস্থা তাতে আরও ২০ শতাংশ নিচে নামতে পারে শেয়ার বাজার।

সোমের রক্তক্ষরণ কাটিয়ে মঙ্গলবার বিশ্বব্যাপী উত্থান দেখা গিয়েছে শেয়ার বাজারের। ভারতের বাজারেও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। এই পরিস্থিতিতে বাজার বিশেষজ্ঞ ব্ল্যাকরক-এর সিইও ল্যারি ফ্লিঙ্ক সতর্কবার্তা দিয়ে জানান, যদি আমেরিকার বাজারে মন্দা দেখা যায় তাহলে আরও ২০ শতাংশ পতনের সম্ভাবনা রয়েছে। সোমবার ইউইয়র্ক ইকোনমিক্স ক্লাবে এক অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে ফ্লিঙ্ক বলেন, ''আমি যতজন সিইও-র সঙ্গে কথা বলেছি তাঁদের বেশিরভাগই জানিয়েছেন ক্রমশ মন্দার দিকে যাচ্ছি আমরা।'' বিশ্ববাজারের সাম্প্রতিক উত্থান প্রসঙ্গে ফ্লিঙ্ক আরও বলেন, "মঙ্গলবার বাজারের অবস্থা কিছুটা হলেও ভালো। তবে তার মানে এটা নয় যে পতন ঘটবে না। পরিস্থিতি যে পথে যাচ্ছে তাতে অন্তত ২০ শতাংশ পতন ঘটতে পারে বাজারে।" ফ্লিঙ্কের দাবি অনুযায়ী, যদি মার্কিন বাজারে এই পতন ঘটে তবে তার বড়সড় প্রভাব পড়বে ভারতের বাজারেও। বিরাট ক্ষতির মুখে পড়বে দেশের বাজার।
উল্লেখ্য, ট্রাম্পের শুল্ক নীতির জেরে গত সোমবার বিরাট ধস নেমেছিল দেশের শেয়ার বাজারে। একধাক্কায় প্রায় ৪ হাজার পয়েন্ট পড়ে গিয়েছিল সেনসেক্স। কিন্তু পরের দিনই রক্তক্ষরণ থেকে সেরে ওঠার ইঙ্গিত দেয় শেয়ার বাজার। মঙ্গলবার বাজার খোলার পরেই হাজার পয়েন্ট উত্থান হল সূচকে। উন্নতি ঘটে নিফটিতেও। কেবল ভারত নয়, এশিয়ার বহু দেশের বাজারেই উন্নতি হয়েছে মঙ্গলবার। জাপানের নিক্কেই সূচক ৫ শতাংশ বেড়েছে। ১ শতাংশ উন্নতি হয়েছে অস্ট্রেলিয়া এবং হংকংয়ের বাজারে। দক্ষিণ কোরিয়াও উন্নতি করেছে শেয়ার বাজারে। উত্থান দেখা গিয়েছে আমেরিকার বাজারেও।
তবে মঙ্গলের বাজারকে প্রত্যাবর্তন বলে ধরে নেওয়ার কোনও কারণ নেই। ভারতের বাজার বিশেষজ্ঞদের মতে, বর্তমানে গোটা বিশ্বের বাজার চরম অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। ফলে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে এখনও কোনও রকম ঝুঁকি না নিয়ে বুদ্ধিমানের কাজ হবে অপেক্ষা করা ও নজর রাখা।