সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কথায় আছে, রাখে হরি তো মারে কে! যতদিন গড়াচ্ছে ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত তুরস্ক-সিরিয়াতে যেন এই প্রবাদই সত্যি হয়ে দাঁড়াচ্ছে। নাহলে কি মৃত্যুপুরী তুরস্কে গত ১২৮ ঘণ্টা ঘরে বেঁচে থাকতে পারে মাত্র দু’মাসের এক একরত্তি। কিংবা প্রতিবেশী সিরিয়াতেও ধ্বংসস্তূপের ভিতর থেকে সশরীরে বেরিয়ে আসতে পারে এর খুদে সহ পরিবারের পাঁচ সদস্য। একের পর এক এধরনের অত্যাশ্চর্যকর ঘটনা উদ্ধারকারীদের মনে নতুন জোর এনে দিচ্ছে। লাশের পাহাড়ে দাঁড়িয়েও নতুন উদ্যমে উদ্ধার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে তারা। আশা একটাই, হয়তো আরও কারওর প্রাণ বাঁচবে। হয়তো সাহায্যের আশায় হাত বাড়িয়ে রয়েছে ধ্বংসস্তূপের নিচে থাকা কেউ।
সোমবার ভোররাতের ভয়াবহ কম্পন। তারপরের অন্তত ১০০টা আফটার শক। একধাক্কায় তুরস্ক ও সিরিয়াকে মৃত্যুপুরীতে পরিণত করেছে।দু’দেশ মিলিয়ে মৃত্য়ু হয়েছে অন্তত ২৮ হাজার মানুষের। তার মধ্যে তুরস্কে ২৪ হাজার ৬১৭ জন এবং সিরিয়ায় ৩ হাজার ৫৭৪ জন। গুঁড়িয়ে গিয়েছে অন্তত ৬ হাজার বাড়ি। এখনও অবধি হিসেব মিলেছে এতটা। কিন্তু রাষ্ট্রংসঘের আশঙ্কা মৃতের সংখ্যাটা ৫০ হাজারও হতে পারে। ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে রয়েছেন অনেকে। তাঁদের উদ্ধার করা হয়েছে মৃত্যু মিছিল হতে পারে আধ লক্ষ। রাষ্ট্রসংঘের ত্রাণ ও পুনর্বাসনের প্রধান মার্টিন গ্রিফিথস তুরস্কে এসে পৌঁছেছন। সেখানে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, মৃতের সংখ্যা এখনই নিশ্চিত করে বলা কঠিন। উদ্ধারকারীদের ধ্বংসস্তূপের তলায় পৌঁছতে হবে। আমি নিশ্চিত, তখন এই সংখ্যাটা দ্বিগুণ বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।”
[আরও পড়ুন: গ্রুপ ডি-তে বাতিলদের জায়গায় ওয়েটিং লিস্ট থেকে নিয়োগ, সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকা প্রকাশ SSC’র]
দিনরাত এক করে কাজ করে চলেছেন অন্তত ১০ হাজার উদ্ধারকারী। প্রাণের সন্ধান পেলেই ছুটে যাচ্ছেন তাঁরা। যেমন তুরস্কের হাত্যা শহরে উদ্ধার করা গেল ২ মাসের এক শিশুকে। ১২৮ ঘণ্টা ধরে ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়েছিল সে। জীবন্ত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করতেই উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়ে উপস্থিত উদ্ধারকারীরা। শুধু এই একরত্তি নয়, গত কয়েকদিনে ২ বছরের এক শিশু, ৬ মাসের এক অন্তঃসত্ত্বা ও ৭০ বছরের এক বৃদ্ধাকে উদ্ধার করা গিয়েছে। একই ছবি সিরিয়াতেও।
শনিবার সেখানকার ইদলিব প্রদেশে বহুতলের ধ্বংসস্তূপের মধ্যে থেকে এক ২ বছরের শিশু-সহ একই পরিবারের পাঁচ সদস্যকে উদ্ধার করা গিয়েছে। তাই দুই দেশের প্রবল শৈত্য, সমস্ত বাধাবিপত্তি অতিক্রম করে ক্রমাগত উদ্ধারকার্য চালিয়ে যাচ্ছে উদ্ধারকারীরা।