সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জেফ্রি এপস্টেইন। কুখ্যাত এই যৌন অপরাধীর সঙ্গে সম্পর্কিত হাজার হাজার পাতার নথি প্রকাশ করল মার্কিন ন্যায় বিভাগ। সেখানে বারংবার উল্লেখিত হয়েছে প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিন্টনের নাম। ছবিও দেখা গিয়েছে। কিন্তু বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সম্পর্কে সামান্য তথ্যই পাওয়া যাচ্ছে।
যে সব ছবি প্রকাশ্যে আনা হয়েছে তার মধ্যে একটিতে তরুণ বিল ক্লিন্টনকে হট টাবে আয়েশ করতে দেখা যাচ্ছে। তবে ছবির একটা অংশ কালো আয়তাকার অংশে ঢাকা। আরেকটি ছবিতে দেখা যাচ্ছে এক মহিলার সঙ্গে সাঁতার কাটছেন ক্লিন্টন। মনে করা হচ্ছে ওই মহিলা এপস্টেইনের প্রেমিকা ম্যাক্সওয়েল। আরেকটি ছবিতে ক্লিন্টনের সঙ্গে দেখা গিয়েছে কিংবদন্তি পপ তারকা মাইকেল জ্যাকসনকেও। তাঁদের পাশেই রয়েছেন গায়িকা ডায়না রস।
তবে প্রকাশিত ছবি ও তথ্যে ট্রাম্পের প্রায়-অনুপস্থিতির দিকটিও ভাবাচ্ছে ওয়াকিবহাল মহলকে। গত শতকের নয়ের দশক ও নতুন সহস্রাব্দের প্রথম দশকে এপস্টেইনের সঙ্গে ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠতার কথা বারবারই সামনে এসেছে। কিন্তু নতুন মুক্তিপ্রাপ্ত ফাইলে একটিও ছবিতে তাঁকে দেখা যাচ্ছে না। উল্লেখও নিতান্তই সামান্য। একমাত্র একটি যোগাযোগের খাতায় ট্রাম্পের নাম রয়েছে। খাতাটি কার, সেটাও পরিষ্কার নয়।
অথচ এর আগে প্রকাশিত নথিতে ট্রাম্প ছিলেন। এমনকী, এপস্টেইনের ব্যক্তিগত বিমানে তাঁকে দেখা গিয়েছিল। এই পরিস্থিতিতে এবার ট্রাম্পের অনুপস্থিতিতে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। মনে করা হচ্ছে নিজেকে বাঁচাতেই সম্ভবত বিল ক্লিন্টনকে এগিয়ে দিতে চাইছেন বর্ষীয়ান রিপাবলিক নেতা। মাসখানেক আগেই জানা গিয়েছিল, এপস্টেইনের সঙ্গে ক্লিন্টনের কী সম্পর্ক ছিল তা নিয়ে তদন্তের আর্জি জানিয়েছেন ট্রাম্প। এবং সেই তদন্ত শুরুও হয়েছে।
বিল ক্লিন্টন শিবির ইতিমধ্যেই এই নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছে। প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্টের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, এপস্টেইনের বিষয়ে তদন্ত কেবলই বিল ক্লিন্টনের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়। তাঁর কথায়, ''ওঁরা চাইলে কুড়ি বছরেরও বেশি সময় আগের পুরনো ছবি প্রকাশ করতেই পারেন। কিন্তু ব্যাপারটা কিন্তু স্রেফ বিল ক্লিন্টনকে নিয়ে নয়। এখানে মূলত দুই ধরনের লোকই রয়েছেন। একদল যাঁরা কিছুই জানতেন না। এপস্টেইনের অপরাধের কথা প্রকাশ্যে আসার পরই যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। অন্য দলের লোকেরা এরপরও সম্পর্ক বজায় রেখেছিলেন। আমরা প্রথম দলে পড়ি। দ্বিতীয় দল যতই চেষ্টা করুক, এটা পরিবর্তন করতে পারবে না।'' নাম না করলেও তাঁরা যে ট্রাম্পরেই নিশানা করছেন তা স্পষ্ট। এই পরিস্থিতিতে এটা পরিষ্কার, ট্রাম্প যতই চেষ্টা করুন, এপস্টেইন কেলেঙ্কারির থেকে নিজের নাম সম্পূর্ণ সরিয়ে নেওয়া খুব সহজ হবে না তাঁর পক্ষে। এমনটাই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
