সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তাঁর খুব শখ ছিল শান্তির নোবেল দেওয়া হোক তাঁকে। কিন্তু শেষপর্যন্ত সেই পুরস্কার জোটেনি। এবার পেন্টাগনের প্রাক্তন আধিকারিকের ফের দাবি, অবশ্যই নোবেল দেওয়া উচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে। কিন্তু তা একের পর এক যুদ্ধ থামানোর জন্য নয়। বরং ভারত ও রাশিয়াকে কাছাকাছি নিয়ে আসার জন্য। বলাই বাহুল্য, এটা ব্যাঙ্গ। আমেরিকার ভারত-নীতিরই আসলে সমালোচনা করেছেন তিনি।
সংবাদ সংস্থা এএনআইয়ের সঙ্গে কথা বলছিলেন মাইকেল রুবিন। তাঁর কথায়, ''আমি বলতে চাই, যেভাবে রাশিয়া ও ভারতকে ডোনাল্ড ট্রাম্প কাছাকাছি এনেছেন, সেই কারণেই ওঁকে নোবেল দেওয়া যেতে পারে।'' তাঁর মতে আমেরিকাজুড়ে ট্রাম্পপন্থী ও ট্রাম্পবিরোধীরা সম্পূর্ণ ভিন্নমত পোষণ করেন ভারত-রাশিয়া নৈকট্যের বিষয়ে।
রুবিন বলছেন, ''যদি আপনি ডোনাল্ড ট্রাম্প হন, তাহলে এটা 'আমি তো তাই-ই বলেছিলাম' এই দৃষ্টিকোণ থেকে দেখবেন। কিন্তু আপনি যদি বাকি ৬৫ শতাংশ মার্কিন নাগরিকের মধ্যে পড়েন, যাঁরা ট্রাম্পকে পছন্দ করেন না, তাহলে আমরা বলতেই পারি যা ঘটেছে তা ডোনাল্ড ট্রাম্পের চরম অযোগ্যতার কারণেই ঘটেছে।'' তাঁর মতে, মার্কিন-ভারত সম্পর্কটাই আগের চেয়ে বিপরীত হয়ে গিয়েছে। এবং পাকিস্তান, তুরস্ক এবং কাতারের তোষামোদ বা তথাকথিত ঘুষের প্রচেষ্টার দ্বারা প্রভাবিত হয়েই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
রুবিনের কথায় রীতিমতো ভারত-সমর্থনের সুরই শোনা গিয়েছে। তিনি বলেছেন, ''ভারত প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নরেন্দ্র মোদিকে বেছেছে। তিনিই ভারতের স্বার্থের প্রতিনিধিত্ব করছেন। ভারত সবচেয়ে জনবহুল দেশ। শিগগিরি বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত হবে। তাদের শক্তি প্রয়োজন। আমরা যদি না-ই চাই যে ভারত রাশিয়ার থেকে তেল কিনুক, তাহলে আমরা ওদের কাছে সস্তায় জ্বালানি কেনার কী প্রস্তাব রেখেছি? যদি এর কোনও উত্তর না থাকে তাহলে আমাদের একদম চুপ করে যাওয়া উচিত। এটাই স্বাভাবিক ভারত তাদের নিরাপত্তাকেই অগ্রাধিকার দেবে।''
বলে রাখা ভালো, ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য রাশিয়াকে অর্থনৈতিকভাবে ‘একঘরে’ করতে চেয়েছিল আমেরিকা। চাপানো হয়েছিল SWIFT নিষেধাজ্ঞা। সেই নিষেধাজ্ঞাকে ব্যর্থ করতে ভারতের সঙ্গে জোট বেঁধেছে রাশিয়া। ডলার নির্ভর অর্থনীতিকে দুরমুশ করতে দেশীয় মুদ্রায় ভারত-রুশ বাণিজ্যে এসেছে জোয়ার। মার্কিন চোখরাঙানিকে ফুৎকারে উড়িয়ে পুতিন জানিয়েছেন, ভারতের সঙ্গে ৯৬ শতাংশ বাণিজ্য সম্পন্ন হয়েছে রুবেল ও টাকায়। এহেন পরিস্থিতিতে নিজের দেশেই প্রবল সমালোচিত হচ্ছেন 'একগুঁয়ে' ট্রাম্প।
