সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কাচ্চাতিভু দ্বীপ ভারতের হাতে ফেরানোর জোরালো দাবির মধ্যেই শ্রীলঙ্কা সফরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। যদিও প্রাথমিকভাবে কাচ্চাতিভু নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শ্রীলঙ্কার উপর চাপ বাড়ানোর কৌশল নেননি। আপাতত প্রধানমন্ত্রীর নজর ভারতীয় মৎস্যজীবীদের ফেরানোয়। শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট অনুরা কুমার দিশানায়েকের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক চলাকালীন মৎস্যজীবীদের ফেরানো নিয়ে জোরালো সওয়াল করলেন প্রধানমন্ত্রী। দিশানায়াকেকে উদ্দেশ্য করে মোদি বললেন, মৎস্যজীবীদের ফেরানোর বিষয়টি মানবিকভাবে ভাবা উচিত শ্রীলঙ্কা সরকারের।
আসলে অধুনা যে কাচ্চাতিভু দ্বীপটি শ্রীলঙ্কার জলসীমায় পড়ছে, সেটি একসময় তামিলনাড়ুর অংশ ছিল। ১৯৭৪ সালে ইন্দিরা গান্ধীর নেতৃত্বে ভারত সরকার ওই দ্বীপটি শ্রীলঙ্কার হাতে ‘মৈত্রীর উপহার’ হিসাবে তুলে দেয়। যদিও কাচ্চাতিভু-তে সেই সময় কেউ বাস করতেন না, কিন্তু কৌশলগত দিক থেকে এই দ্বীপটি ভীষণ জরুরি। ভারতীয় মৎস্যজীবীদের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। ভারতীয় মৎস্যজীবীরা বহুবার এই দ্বীপ সংলগ্ন এলাকায় মাছ ধরতে গিয়ে বিপাকে পড়েছেন।' হিসাব বলছে, গত ২০ বছরে ৬ হাজারের বেশি ভারতীয় মৎস্যজীবী শ্রীলঙ্কায় আটক হয়েছেন। এই সময়ের মধ্যে হাজারের বেশি ভারতীয় মাছ ধরার নৌকা বাজেয়াপ্ত করেছে শ্রীলঙ্কা প্রশাসন। এই মৎস্যজীবীদের দেশে ফেরানোর দাবিতে বহুবার সরকারের দ্বারস্থও হয়েছে তাঁদের পরিবার। এবার শ্রীলঙ্কা সফরে গিয়ে মোদি সেই ইস্যুটি ছুঁয়ে গেলেন।
দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বললেন, "ভারত মৎস্যজীবীদের এবং বাজেয়াপ্ত হওয়া নৌকাগুলি ফেশে ফেরানোয় বদ্ধপরিকর। এই বিষয়টি মানবিক দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখার বিষয়ে দুপক্ষই একমত।" তবে কাচ্চাতিভু ফেরানো নিয়ে এদিনের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে কোনও আলোচনা হয়নি বলেই প্রাথমিকভাবে খবর।
বস্তুত, পাঁচ দশক বাদে কাচ্চাতিভু ইস্যু উসকে দিয়ে খানিক চাপেই পড়ে গিয়েছে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকার। ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের আগে যে ইস্যুকে তামিল মনজয়ের হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করতে চেয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদি, সেই ইস্যুকেই এবার তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবহার করছে তামিলনাড়ুর ডিএমকে সরকার। দিন দুই আগে কাচ্চাতিভু ফেরানোর দাবিতে সর্বসম্মতিক্রমে প্রস্তাব পাশ হয়েছে তামিলনাড়ু বিধানসভায়। ডিএমকে এই ইস্যুকে সামনে রেখে আন্দোলনে নামারও হুঁশিয়ারি দিয়েছে। শেষ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী শ্রীলঙ্কার প্রশাসনের উপর এ নিয়ে চাপ তৈরির চেষ্টা করেন, নাকি নীরব থাকেন সেটাই দেখার।