সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আন্তর্জাতিক মঞ্চে আবারও রাশিয়ার (Russia) পাশেই দাঁড়াল ভারত। রবিবার ইউক্রেন ইস্যুতে রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ সভার একটি বিশেষ অধিবেশন ডাকার জন্য প্রস্তাব পেশ হয়। সেই প্রস্তাবে ভোটদান থেকে বিরত থাকে নয়াদিল্লি।
[আরও পড়ুন: ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের জেরে সংকটে ভদকা! পুতিনের দেশের মদ ফেলা হচ্ছে নর্দমায়!]
প্রায় পাঁচদিন ধরে চলা ইউক্রেন ও রাশিয়ার যুদ্ধ থামার নাম নেই। ন্যাটো ও মস্কোর হুঙ্কারে পরিস্থিতি ক্রমে পারমাণবিক সংঘাতের দিকে এগোচ্ছে। এহেন পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ সভার একটি বিশেষ অধিবেশন ডাকার জন্য প্রস্তাব পেশ হয় নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে। সেই প্রস্তাবের পক্ষে ভোট পড়ে ১১টি। বিপক্ষে ভোট দেয় রাশিয়া। ভোটদানে বিরত থাকে ভারত, চিন ও সংযুক্ত আরব আমিরশাহী। বলে রাখা ভাল, যেহেতু এই প্রস্তাব বা রেজোলিউশন পদ্ধতিগত তাই নিয়ম মতো এই প্রস্তাব আটকাতে ভেটো প্রয়োগ করতে পারে না নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচটি স্থায়ী সদস্য দেশ–আমেরিকা, রাশিয়া, চিন, ব্রিটেন ও ফ্রান্স।
এদিন রাষ্ট্রসংঘে নিযুক্ত ভারতের রাষ্ট্রদূত টি এস তিরুমূর্তি আবারও আলোচনার মাধ্যমে আহনটি ফেরানোর পক্ষে সওয়াল করেন, এবং ইউক্রেনে আটকে থাকা ভারতীয়দের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন। এদিকে, নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে ইউক্রেনের রাষ্ট্রদূত সের্গেই কিসলিৎসয়া বলেন, “ফেব্রুয়ারির ২৭ তারিখ পর্যন্ত যুদ্ধে ৪ হাজার ৩০০ জন রুশ সৈনিকের মৃত্যু হয়েছে। ২০০ জনকে বন্দি করা হয়েছে। নিখোঁজ রুশ সৈনিকদের পরিবারের জন্য একটি হটলাইন খুলেছে ইউক্রেন। প্রথমদিনই সেখানে অন্তত ১০০ জন মহিলার ফোন এসেছে। নিজের সন্তানের কথা জানতে চাইছেন তাঁরা। এছাড়া, রাশিয়ার বোমায় ইউক্রেনের ১৬টি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। ৩ লক্ষ ৫০ হাজার পড়ুয়া স্কুলে যাওয়ার সুযোগ হারিয়েছেন।” পালটা, রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত দাবি করেছেন, সমস্ত অভিযোগ মিথ্যা। আমজনতার উপর হামলা চালায় না রুশ সেনা। এদিকে আজই ইউক্রেন নিয়ে বিশেষ অধিবেশন ডেকেছে রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ সভা।
উল্লেখ্য, শুক্রবার রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ইউক্রেন নিয়ে রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব পেশ করে আমেরিকা। সেই প্রস্তাবে ভোট না দিয়ে কার্যত রাশিয়ার পাশেই দাঁড়িয়েছে ভারত। নিরাপত্তা পরিষদে ভারতের ভোটদান থেকে বিরত থাকার পক্ষে রাষ্ট্রসংঘে নিযুক্ত ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি টি এস তিরুমূর্তি (TS Tirumurthi) যুক্তি দেন “ইউক্রেনের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে ভারত উদ্বিগ্ন৷ আমরা আরজি জানাচ্ছি, এখনই হিংসা এবং শত্রুতা বন্ধ করতে সব রকম ব্যবস্থা নেওয়া হোক৷ এই মুহূর্তে আলোচনায় বসার মতো অবস্থা না থাকলেও, সেটাই একমাত্র সমাধান৷ সকলেরই কূটনৈতিক পথে ফেরা উচিত৷ এই সবদিক ভেবে ভারত এই নিন্দা প্রস্তাবে ভোট দেওয়া থেকে দূরে রইল।” তারপরই নয়াদিল্লির প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়ে ওঠে মস্কো।