সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দু'দেশের যুদ্ধ থামানোর আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছিল আমেরিকা। শান্তির পথে ফিরতে শর্তসাপেক্ষে রাজিও হয়েছিল যুযুধান দু'পক্ষ। কিন্তু সেটা যে শুধু মুখের কথা তা বারবার প্রমাণ হয়েছে। আক্রমণ পালটা আক্রমণে একে ওপরকে ঝাঁঝরা করেছে রাশিয়া-ইউক্রেন। কয়েকদিন আগেই ইউক্রেনীয় শহর সুমিতে ভয়াবহ হামলা চালিয়েছিল রুশ ফৌজ। প্রাণ হারায় বহু মানুষ। যা নিয়ে মস্কোর তীব্র নিন্দা করে ওয়াশিংটন। এবার খবর, দু'দেশের এই যুদ্ধে আর মধ্যস্থতা করতে চায় না আমেরিকা। হাল ছেড়ে দিয়ে এবার হাত তুলে নিয়ে হোয়াইট হাউস!
দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় ফিরে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ থামিয়ে দেওয়ার কথা বলেছিলেন ট্রাম্প। এমনকী রুশ নীতি বদলে একাধিক ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে দুষতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন আর জেলেনস্কির সঙ্গে কখনও নিজে ফোনে কথা কিংবা প্রতিনিধি পাঠিয়ে শান্তি চুক্তির জন্য মরিয়া চেষ্টা চালিয়েছিলেন ট্রাম্প। কিন্তু তিনি বুঝতে পারছেন এতদিন তিনি যা করেছেন তা অরণ্যে রোদন।
এই বিষয়ে শুক্রবার মার্কিন বিদেশ সচিব মার্কো রুবিও জানান, "আমরা অনেক চেষ্টা করেছিলাম রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ করার। কিন্তু প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আর মধ্যস্থতা করতে রাজি নন। আমরা আর কয়েক সপ্তাহ দেখব। তারপর অন্য কাজে মন দেব। এখন যা পরিস্থিতি তাতে ওরা শান্তিচুক্তি নিয়ে আগ্রহী নয়। আমরা আর সময় অপচয় করব না। ট্রাম্প বৃথাই এতদিন শক্তিক্ষয় করেছেন।" প্রসঙ্গত, ইউক্রেনের সঙ্গে আমেরিকা সরাসরি আলোচনায় বসার পরিকল্পনা করছিল। এর মাঝেই এহেন হুঁশিয়ারি দিলেন মার্কিন বিদেশ সচিব। ফলে আন্তর্জাতিক মহলের আশঙ্কা, আমেরিকা হয়তো এই যুদ্ধে বড় ভূমিকা নিতে পারতো। কিন্তু ট্রাম্প সরে গেলে শান্তিচুক্তির আশা ক্ষীণ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। পরিস্থিতি আরও জটিল থেকে জটিলতর হয় কিনা তা নিয়েই এখন উদ্বেগ বাড়ছে।
আগেই শান্তি চুক্তি নিয়ে আলোচনার জন্য রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত স্টিভ উইটকফ। ট্রাম্পও এই বিষয়ে পুতিনের সঙ্গে আলোচনা করেছিলেন। যুদ্ধবিরতির লক্ষ্যে আলোচনা প্রক্রিয়া যখন ধাপে ধাপে অগ্রসর হতে শুরু করেছে ঠিক সেই সময়ই সুমিতে হামলা চালাল রাশিয়া। সুমি শহরে ভয়াবহ রুশ হামলার পর ট্রাম্পকে কিয়েভে আসার আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন জেলেনস্কি। তিনি বলেন, “আমি চাই, যুদ্ধজর্জর এলাকাগুলো এসে দেখে যান ট্রাম্প। তিনি দেখুন পুতিন কী হাল করেছে। দয়া করে বোঝার চেষ্টা করুন পুতিন কী করছে, কী চায়। কোনও কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে, কোনও রকম সমঝোতার পথে হাঁটার আগে এখানে এসে নিরীহ মানুষগুলোর সঙ্গে কথা বলুন। নিজের চোখে হাসপাতাল, চার্চগুলোর দশা দেখুন। নিষ্পাপ শিশুগুলোর মুখের দিকে তাকান।” এতেই রণক্ষেত্রের ছবি ঘোরালো হয়ে ওঠে।
