কুণাল ঘোষ ও কিংশুক প্রামাণিক (লন্ডন থেকে মুখ্যমন্ত্রীর সফরসঙ্গী): বাংলা মানে বাণিজ্য। শিল্পের গন্তব্য বাংলা। বিলেতের মাটিতেও সেই একই বার্তা দিলেন একের পর এক বাংলার শিল্পপতিরা। সকলের একটাই বক্তব্য, আজকের বাংলা বদলের বাংলা। আজকের বাংলা শিল্প বিনিয়োগের আদর্শ পরিবেশ। এখানে এলে ক্ষতির আশঙ্কা নেই, বরং লাভের পথে এগিয়ে যাওয়া যাবে কয়েকধাপ। মঙ্গলবার লন্ডনে মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে শিল্প বৈঠকে সেকথাই বারবার বললেন বাংলার শিল্পপতি সত্যম রায়চৌধুরী, হর্ষবর্ধন নেওটিয়ারা। এভাবেই লন্ডনের মাটিতে বঙ্গের বিনিয়োগ পরিবেশের সুন্দর চিত্র আঁকা হল।

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আমন্ত্রণ পেয়ে ছ'দিনের লন্ডন সফরে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee London Tour)। এবার তাঁর সফরসঙ্গী মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ, মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তরের বিশেষ সচিব গৌতম সান্যাল, শিল্প সচিব বন্দনা যাদব, ডাইরেক্টর অফ সিকিওরিটি পীযূষ পাণ্ডে। এছাড়াও রয়েছেন WBTC-এর অফিসাররা। পাশাপাশি শিল্পপতি সত্যম রায়চৌধুরী, মেহুল মোহানকা, উমেশ চৌধুরী, সন্তোষ বাঙ্গারও রয়েছেন তাঁর সঙ্গে। মুখ্যমন্ত্রী সফরসঙ্গী অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মা লতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। এছাড়া মঙ্গলবারের শিল্প সম্মেলনে লন্ডন থেকেও বহু শিল্পপতি যোগ দিয়েছেন। সেই তালিকায় রয়েছেন চন্দ্রমোহন ধানুকা (এক্সিকিউটিভ চেয়ারম্যান, ধানসিঁড়ি ভেঞ্চারস), হর্ষবর্ধন আগরওয়াল (প্রেসিডেন্ট, ফিকি, ভাইস চেয়ারম্যান, ইমামি গ্রুপস), হর্ষবর্ধন নেওটিয়া (চেয়ারম্যান, অম্বুজা নেওটিয়া গ্রুপ), কে কে বাঙ্গুর (গ্রাফাইট ইন্ডিয়া), মেহুল মোহানকা (এমডি, টেগা ইন্ডাস্ট্রিজ), প্রশান্ত বাঙ্গুর (চেয়ারম্যান, ফিকি, WBSC, ভাইস চেয়ারম্যান, শ্রী সিমেন্টস), প্রশান্ত মোদি (ভাইস চেয়ারম্যান ও এমডি, GEECL), রুদ্র চট্টোপাধ্যায় (এমডি, লক্ষ্ণী গ্রুপ, চেয়ারম্যান, OBEETEE), সঞ্জয় বুধিয়া (ম্যানেজিং ডিরেক্টর, প্যাটন ইন্টারন্যাশনাল), সত্যম রায়চৌধুরী (চ্যান্সেলর, সিস্টার নিবেদিতা বিশ্ববিদ্যালয়), শাশ্বত গোয়েঙ্কা (ভাইস চেয়ারম্যান, আরপি-সঞ্জীব গোয়েঙ্কা গ্রুপ), তরুণ ঝুনঝুনওয়ালা (প্রেসিডেন্ট, রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ), উজ্জ্বল সিনহা (এমডি, জেনেসিস অ্যাডভারটাইজিং), উমেশ চৌধুরী (ভাইস চেয়ারম্যান অ্যান্ড এমডি, টিটাগড় রেল সিস্টেমস), জ্যোতি ভিজ (ডিরেক্টর জেনারেল, ফিকি) এবং মৌসুমী ঘোষ (ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল, ফিকি)।
মমতার সঙ্গে বাংলার শিল্পপতিরা।
অম্বুজা নেওটিয়া গ্রুপের চেয়ারম্যান হর্ষবর্ধন নেওটিয়া বলেন, ''বাংলায় শিল্প বিনিয়োগের জন্য তিনটি বিষয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমত, এখানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্যে বিশ্বাসী। এখানে মানুষ অত্যন্ত নিরাপদ বোধ করেন। মুখ্যমন্ত্রী রাস্তা, বিদ্যুৎ, বন্দর, জল সরবরাহের মতো পরিষেবার অনেক উন্নতি করেছেন। কলকাতায় আসুন, বিনিয়োগ করুন। এখানকার অর্থনৈতিক পরিবেশ খুব ভালো।'' কলকাতায় দীর্ঘদিন ধরে নেওটিয়া গোষ্ঠীর একাধিক ব্যবসা রয়েছে। তার বিস্তারে রাজ্যের শিল্পবান্ধব পরিবেশ হর্ষবর্ধন নেওটিয়ার পক্ষে অনুকূল হয়েছে বলেই নিজের অভিজ্ঞতার কথা বিলেতের মাটিতে শোনালেন তিনি।
লন্ডনের শিল্প সম্মেলনে আরপি-সঞ্জীব গোয়েঙ্কা গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান শাশ্বত গোয়েঙ্কার বক্তব্য, “মুখ্যমন্ত্রী শিল্প বিস্তারে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন। যে কোনও তাঁকে দরকারে পাওয়া যায়। দ্রুত সিদ্ধান্ত নেন, এটা খুবই জরুরি। আমলা, প্রশাসনও শিল্পবান্ধব। আপনারাও আসুন বাংলায়, বুঝতে পারবেন এখানকার সুবিধা কত।” বাংলার আরেক শিল্পপতি সত্যম রায়চৌধুরীও নিজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করে বলেন, “২০১৭ সালে আমরা সিস্টার নিবেদিতা বিশ্ববিদ্যালয় তৈরির কথা ভাবি। মুখ্যমন্ত্রীকে বলি ২০২১ সালে। সে বছরের ২৯ নভেম্বর তিনি বিধানসভায় বিল পাশ করিয়ে দেন। পরের বছর জানুয়ারি মাসে নেতাজির ১৫০ তম জন্মবার্ষিকীতে আমরা স্পোর্টস বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা বলি। এখন সেটা প্রায় তৈরি। সরকারের সঙ্গে আমাদের শুধুমাত্র একটা ফোনকলের দূরত্ব। বাংলা বোঝে বাণিজ্য। মুখ্যমন্ত্রী সবসময় আমাদের সাহায্য করেন।''