সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রত্যাশিতই ছিল। তবে বাস্তবে প্রত্যাশার কয়েকগুণ বেশি প্রতিফলন দেখা গেল। বিপুল ভোটে জিতে ফের ক্ষমতায় এল নিউজিল্যান্ডের (New Zealand) ক্ষমতাসীন সরকার লেবার পার্টি। ফলাফলের অঙ্ক বলছে, লেবার পার্টির ঝুলিতে এসেছে ৪৯ শতাংশ ভোট। বিরোধী ন্যাশনাল পার্টি পেয়েছে মাত্র ২৭ শতাংশ ভোট। দ্বিতীয়বারের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কুর্সিতে বসছেন জেসিন্ডা আর্ডের্ন (Jacinda Ardern)। খুশির জোয়ার শাসকদলে। নিজেও বেশ খুশি জেসিন্ডা, যিনি জানিয়েছিলেন যে ভোটে হারলে দলের কোনও পদেই আর থাকবেন না। সাধারণ কর্মী হয়ে কাজ করবেন।
মূলত দুটি ইস্যুকে কেন্দ্র করে এবার নির্বাচনের পথে হেঁটেছে নিউজিল্যান্ড। প্রথমত, করোনার মতো মহামারীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ। আর দ্বিতীয়ত সন্ত্রাসবাদ দমনে লড়াই। ২০১৯এর মার্চে ক্রাইস্টচার্চের মসজিদে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার (Christchurch Mosque Shooting) পর প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আর্ডের্ন যেভাবে সন্ত্রাসবাদীদের বিরুদ্ধে হুঙ্কার দিয়েছিলেন এবং দেশের মুসলিম বাসিন্দাদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন, তাতেই বোঝা গিয়েছিল তাঁর প্রকৃত স্বরূপ।
নিজে রীতিমতো বোরখা, হিজাব পরে স্বজনহারা পরিবারগুলোর সঙ্গে দেখা করেছিলেন। বুঝিয়েছিলেন, দেশের সংখ্যালঘুদের উপর এমন আঘাত নেমে এলে তিনিও নিমেষে সংখ্যালঘু হয়ে যেতে পারেন এবং সেটাই তাঁর সবচেয়ে বড় প্রতিবাদ হিসেবে দেখেছিলেন ক্রাইস্টচার্চের মুসলিম সম্প্রদায়।
[আরও পড়ুন: ইমরান খানের পদত্যাগের দাবিতে প্রবল বিক্ষোভ, উত্তাল পাকিস্তান]
২০২০’র গোড়া থেকেই করোনা ভাইরাস (Coronavirus) মহামারী হয়ে ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বজু়ড়ে। সেসময় এই দ্বীপদেশটিই তার বিরুদ্ধে সবচেয়ে ভাল লড়াই করেছিল। গোড়া থেকে সুনির্দিষ্টভাবে লকডাউনের পথে হেঁটে দীর্ঘ কয়েকমাস কোভিডের কামড় থেকে মুক্ত ছিল নিউজিল্যান্ড। এর পিছনে প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডার মস্তিষ্কপ্রসূত পরিকল্পনাই যথাযথভাবে কাজ করেছিল। যদিও এত সাফল্যের পরও শেষপর্যন্ত সম্পূর্ণ করোনামুক্ত থাকতে পারেনি দেশটি। তবে সংক্রমণের হার খুবই নগণ্য। এই পরিস্থিতির জন্য নিউজিল্যান্ডবাসীও সরকারের ভূমিকার প্রশংসা করেছেন। ফলে বোঝাই যাচ্ছিল, জনমত অনেকটাই হেলে জেসিন্ডা আর্ডের্নের লেবার পার্টির দিকে।
[আরও পড়ুন: ‘আল্লাহু আকবর’ ধ্বনি দিয়ে প্যারিসে শিক্ষকের মাথা কাটল চেচেন ‘জেহাদি’]
গত ৩ তারিখ থেকে ভোটগ্রহণ পর্ব চলছিল। শনিবার স্থানীয় সময় সকাল ৯টা থেকে ভোটবাক্স খোলা হয়, ভারতীয় সময়ে শুক্রবার রাত আটটা। টানা দশঘণ্টা গণনার পর ফলপ্রকাশ। জয় নিয়ে আত্মবিশ্বাসী থাকার পরও তীব্র টেনশন ছিল লেবার পার্টির অন্দরে। যদিও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে একটু একটু করে নিশ্চিত হচ্ছিল লেবার পার্টির জয়। চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশিত হতেই জানা গেল, ৪৯ শতাংশ ভোট পেয়ে ফের নিউজিল্যান্ডের ক্ষমতায় আসছে লেবার পার্টি। দ্বিতীয়বারের জন্য দেশের প্রশাসক পদে বসছেন ৪০ বছর বয়সি জেসিন্ডা। জয়ের পর তিনি বলছেন, ”৫০ বছর ধরে আপনারা লেবার পার্টির সমর্থনে ভোট দিয়ে চলেছেন। এই সমর্থনকে আমরা মোটেই হেলায় গ্রহণ করছি না। প্রত্যেক নিউজিল্যান্ডবাসীর সুবিধায় কাজ করবে নতুন সরকার।”