সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: একদিকে বালোচ, অন্যদিকে তেহরিক ই তালিবান। এই জোড়া ফলায় বিদ্ধ পাকভূমি। পাকিস্তান থেকে আলাদা হওয়ার দাবিতে অস্ত্র ধরেছে এই দুই বিদ্রোহী সংগঠন। এই পরিস্থিতিতে বালোচিস্তানের ভাঙন ঠেকাতে কড়া হাতে বিদ্রোহ দমনের পথ ধরল পাকিস্তান সেনা। খাইবার পাখতুনখোয়া অভিযান চালিয়ে হত্যা করা হল ৯ বিদ্রোহীকে। সোমবার এই তথ্য প্রকাশ্যে এনেছে পাক সেনা।
পাক সেনার তরফে জানা গিয়েছে, রবিবার রাতে গোপন খবরের ভিত্তিতে খাইবার পাখতুনখোয়ার ডেরা ইসমাইল খান জেলার তাকওয়াড়া অঞ্চলে তল্লাশি অভিযান চালায় সেনা। সেখানেই পাক সেনার সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে মৃত্যু হয় ৯ বিদ্রোহীর। পাক সেনার তরফে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, এই শিরিন নামে এক শীর্ষ বিদ্রোহী নেতার মৃত্যু হয়েছে। পাক সেনার বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযানের জেরে নিরাপত্তাবাহিনীর হিটলিস্টে ছিলেন এই বিদ্রোহী।
প্রসঙ্গত, ১৯৪৭ সালে পাকিস্তানের জন্মের পর থেকেই আলাদা হওয়ার দাবি জানাচ্ছে বালোচিস্তান। ২০০০ সালের শুরুর দিকে এই প্রদেশকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসাবে ঘোষণা করার দাবিতে পাক সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে বিএলএ। তাদের সমর্থন জানায়, তেহরিক-ই-তালিবান নামে আর এক বিদ্রোহী সংগঠন। তারপর থেকে পাকিস্তানি শাসনের শৃঙ্খল ভেঙে ফেলতে লড়াই চালাচ্ছে বালোচ বিদ্রোহীরা। পালটা গুমখুন, হত্যা ও ধর্ষণের মতো অমানুষিক অত্যাচার চালিয়ে বিদ্রোহের আগুন নেভানোর চেষ্টা করছে ইসলামাবাদ। বিশেষ করে এই চিন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডর তৈরি হওয়ার পর থেকেই আরও অশান্ত হয়ে উঠেছে বালোচিস্তান। অভিযোগ, পেশিশক্তির জোরে তাদের বাসভূমি কেড়ে নিয়ে এই করিডর তৈরি করা হয়েছে। খনিজ সমৃদ্ধ প্রদেশটিকে কার্যত লুট করছে পাক প্রশাসন। আর লাভের গুড় খাচ্ছে চিনও। প্রতিদানে বালোচ জনতা পাচ্ছে শুধুই নির্যাতন ও দারিদ্র।
এই অবস্থায় পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে বালোচিস্তানের বিদ্রোহী সংগঠনগুলি। জাফার এক্সপ্রেস হাইজ্যাক থেকে একের পর এক হামলায় মাত্র দু’দিনে মৃত্যু হয়েছে শতাধিক পাক সেনার। পালটা বিদ্রোহী দমন করতে নৃশংস আক্রমণ চালাচ্ছে পাক সেনাও। আর সেই অভিযানে বিদ্রোহীদের পাশাপাশি হত্যা করা হচ্ছে সাধারণ নাগরিকদের। সম্প্রতি এই খাইবার পাখতুনখোয়ায় অভিযান চালিয়ে ১০ জন মেষপালককে হত্যা করে পাক সেনা। পরে অবশ্য চাপের মুখে নিজেদের ভুল স্বীকার করে তারা।