সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ২০২৩ সালের শুরু থেকেই নজিরবিহীন আর্থিক সংকটে পাকিস্তান। ক্রমশই বেড়েছে ঋণের বোঝা। হাত পাততে হচ্ছে চিন-সহ একাধিক দেশের কাছে। এই পরিস্থিতিতে ইসলামাবাদের ভরসা এবার ক্রিপ্টোকারেন্সিতে। শোনা যাচ্ছে, পাকিস্তান নাকি ক্রিপ্টোমুদ্রাকে আইনি বৈধতা দিতে চলেছে শিগগিরি। বিদেশি বিনিয়োগ টানতে এবং দেশের অর্থনীতিকে আধুনিক রূপ দিতেই এই পরিকল্পনা বলে জানিয়েছেন পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রীর মুখ্য উপদেষ্টা বিলাল বিন সাকিব। তিনিই নবগঠিত পাকিস্তান ক্রিপ্টো কাউন্সিলের সিইও।

প্রসঙ্গত, পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক কিন্তু দীর্ঘদিন ধরেই ক্রিপ্টোকারেন্সির বিরোধিতা করে আসছে। উদ্বেগ প্রকাশ করেছে, এর ফলে আর্থিক দুর্নীতি, তছরুপ ও আর্থিক ঝুঁকির দিকটি আরও ভয়াবহ চেহারা পাবে। কিন্তু সাকিব বলছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের পক্ষে এই পদক্ষেপ করা ছাড়া উপায় নেই। তাঁর দাবি, ইতিমধ্যেই দেড় থেকে দু'কোটি পাকিস্তানি ডিজিটাল সম্পদে বিনিয়োগ করছেন। উদাহরণ হিসেবে তিনি তুলে ধরেছেন আমেরিকা এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহির কথাও। প্রথম বিশ্বের এই দেশগুলি ক্রিপ্টো-বান্ধব নীতি যেভাবে গ্রহণ করেছে, সেটা মাথায় রেখেই পাকিস্তানও ক্রিপ্টোকারেন্সিকে আইনি বৈধতা দিতে একটি পরিকাঠামো নির্মাণ করবে বলেও জানিয়েছেন সাকিব।
কেন ক্রিপ্টোকারেন্সির প্রতিই এতটা ভরসা রাখতে চাইছে ইসলামাবাদ? সেসম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি জানিয়েছেন, আইএমএফ তথা আন্তর্জাতিক অর্থভাণ্ডারের তরফে পাকিস্তানের কর কর্তৃপক্ষের কাছে আর্জি জানিয়েছে ক্রিপ্টোকারেন্সি চালু করার জন্য। এর ফলে ঋণ পরিশোধের দিকটি নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। পাশাপাশি এর ফলে বিদেশি বিনিয়োগ যেমন বেশি আসবে, তেমনই কর পরিশোধও করা যাবে এর সাহায্যে।
বলে রাখা ভালো, করোনা মহামারী, অপশাসন ও ঋণের ভারে পাকিস্তানের অর্থনীতি কার্যত হাঁটু গেড়ে বসে পড়েছে গত কয়েক বছরে। জোর ধাক্কা খেয়েছে পণ্য উৎপাদন ও রপ্তানি। ফলে তলানিতে ঠেকেছে বিদেশি মুদ্রা ভাণ্ডার। ফলে খাবার থেকে ওষুধ সবকিছুরই দাম ভয়ানক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এর মধ্যে সরকার বদলেছে। কিন্তু পাকিস্তানের অর্থনীতির কোনও উন্নতি হয়নি। এই পরিস্থিতিতে ক্রিপ্টো মুদ্রা তাদের 'সুদিন' দেখাবে কিনা তা সময়ই বলবে। তবে আপাতত সেই আশাতেই বুক বাঁধছে পড়শি দেশ।