সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফেরত চাইলেন উপদেষ্টা সরকারের প্রধান মহম্মদ ইউনুস। অন্যদিকে, বাংলাদেশের মাটিতে হিন্দুদের উপর চলতে থাকা বেলাগাম হিংসায় ঘটনায় ইউনুসকে কড়া বার্তা দিলেন মোদিও।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরেই সাক্ষাৎ করতে চাইছিলেন ইউনুস। তবে ভারত সরকারের তরফে শুরুতে এই বিষয়ে কোনও উদ্যোগ না নেওয়া হলেও পরে ঠিক হয় ব্যাংককের 'বিমস্টেক' সম্মেলনে হবে এই দ্বিপাক্ষিক বৈঠক। দুই রাষ্ট্রপ্রধানের এই বৈঠক শেষে বিদেশমন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের প্রতি ভারতের সমর্থনের কথা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তবে সীমান্তে অনুপ্রবেশ ও সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনায় কড়া পদক্ষেপ করার প্রস্তাব দেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনায় পূর্ণাঙ্গ তদন্তেরও বার্তা দেওয়া হয়েছে।
এছাড়াও ৭ রাজ্য নিয়ে ইউনুসের মন্তব্য যে ভারত ব্যপকভাবে ক্ষুব্ধ তা স্পষ্ট বুঝিয়ে দিয়েছেন মোদি। সম্প্রতি চিন সফর থেকে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে ইউনুসকে বলতে শোনা গিয়েছিল, “ভারতের পূর্ব প্রান্তের সাতটি রাজ্য, যাদের সেভেন সিস্টার্স বলা হয়। ওই বিরাট অঞ্চল কিন্তু পাহাড় আর স্থলভাগে ঘেরা। সমুদ্রপথে যোগাযোগ করার উপায়ই নেই তাদের। বাংলাদেশই হল সমুদ্রপথের রাজা। তাই ওই এলাকায় চিনা অর্থনীতির বিস্তার ঘটতেই পারে।” এই মন্তব্যের ইঙ্গিত অত্যন্ত স্পষ্ট যে, ভারতের ৭ রাজ্য (সেভেন সিস্টার)কে ভেঙে ফেলতে চায় বাংলাদেশ। যদিও বাংলাদেশ জানিয়েছিল এই মন্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা করা হয়েছে। এই ইস্যুতে বৈঠক থেকে প্রধানমন্ত্রী স্পষ্ট বার্তা দেন, এমন কোনও মন্তব্য করা উচিত নয় যা উস্কানিমূলক। আগামী দিনে যেন বাংলাদেশ রাষ্ট্রপ্রধান এমন মন্তব্যের বিষয়ে সতর্ক থাকেন।
অন্যদিকে বাংলাদেশের তরফে জানা গিয়েছে, এই বৈঠকে সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণের দাবি জানান ইউনুস। এতদিন ধরে ভারত সরকারের কাছে লিখিতভাবে এই দাবি জানিয়ে আসছিল বাংলাদেশ সরকার। অবশেষে ভারত সরকারের কাছে সরাসরি এই দাবি জানাল বাংলাদেশ। পাশাপাশি, ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের তরফে যেভাবে বাংলাদেশ নিয়ে উস্কানিমূলক প্রচার চলছে তার বিরুদ্ধে পদক্ষেপের আর্জি জানানো হয় বাংলাদেশের তরফে। যদিও বাংলাদেশ ইস্যুতে ইউনুসের আর্জি নিয়ে ভারতের তরফে কোনও প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়নি।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে জুন বিদ্রোহের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতে চলে আসেন। বিরোধী শিবিরের সঙ্গে সর্বদল বৈঠকের পর সর্বসম্মতিতে তাঁকে এদেশে আশ্রয় দেয় মোদি সরকার। বাংলাদেশে তাঁর বিরুদ্ধে গণহত্যা-সহ বহু মামলা দায়ের হয়েছে। ইউনুস উপদ্বেষ্টা সরকারের দায়িত্বে আসার পর বন্দি প্রত্যর্পণ চুক্তিকে হাতিয়ার করে বারবার হাসিনাকে ফেরত পাঠানোর দাবি জানিয়েছে। তবে ভারত এ বিষয়ে কোনও উচ্চবাচ্য করেনি। যদিও সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, হাসিনাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হলে খুন করা হতে পারে।