সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দীর্ঘ সাতমাসের যুদ্ধের পরে অবশেষে রাশিয়ার দখলে গেল দোনবাস অঞ্চল। শুক্রবার ক্রেমলিন থেকে একটি ভাষণ দিয়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন (Putin) জানিয়েছেন, আরও চারটি প্রদেশ রাশিয়ার অন্তর্ভুক্ত হল। প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগেই ইউক্রেনের অধিকৃত অঞ্চলে গণভোট করিয়েছিল রাশিয়া (Russia-Ukraine War)। সেখানে বিপুল জয় পেয়েছে বলে দাবি করেছিল ক্রেমলিন। শুক্রবারে পুতিনের বক্তৃতার পরে সেই দাবিতে সিলমোহর পড়ল। তবে রাশিয়ার এই দাবিকে বেআইনি বলে ঘোষণা করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
শুক্রবার একটি দীর্ঘ বক্তৃতা দিয়েছেন পুতিন। সেখানে তিনি বলেছেন, “সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন পুনর্গঠন করা আমাদের লক্ষ্য নয়। কিন্তু মানুষের ইচ্ছা ছিল, রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত হয়ে রুশ নাগরিক হিসাবে পরিচিত হওয়া। সেই জন্যই আমরা গণভোটের মাধ্যমে ডোনেৎস্ক, লুহান্সক, খারসন, জাপরজাই-এই চারটি অঞ্চলকে রাশিয়ার অন্তর্ভুক্ত করলাম। ” পুতিনের এই বক্তৃতার পরে হাততালিতে ফেটে পড়ে উপস্থিত জনতা।
পুতিন আরও বলেছেন, “কোনওমতেই এই চারটি অঞ্চলকে রাশিয়া থেকে বিচ্ছিন্ন হতে দেওয়া যাবে না। এই অঞ্চলের মানুষ চিরকালের জন্য রাশিয়ার নাগরিক হয়ে থাকবেন।” সেই সঙ্গে পুতিন জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে কিয়েভ শাসকদের অমানুষিক অত্যাচার সহ্য করেছেন দোনবাস অঞ্চলের মানুষ। স্বেচ্ছায় তাঁরা রাশিয়ার অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। বক্তৃতায় ইউক্রেনকেও আলোচনায় বসার ডাক দিয়েছেন পুতিন। যুদ্ধ বন্ধ করতে আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
[আরও পড়ুন: তেল নেই, থমকে গিয়েছে পাকিস্তানের ট্রেন পরিষেবা!]
অন্যদিকে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের (EU) প্রধান উরুসুলা ভন দের লেয়েন রাশিয়ার এই পদক্ষেপকে বেআইনি বলে অভিহিত করেছেন। একটি টুইট করে তিনি লিখেছেন, “বেআইনিভাবে চারটি অঞ্চলকে রাশিয়ার অন্তর্ভুক্ত করেছেন পুতিন। কিন্তু তাতে কিছুই লাভ হবে না। ওই জায়গাগুলি ইউক্রেনের অংশ এবং চিরদিন সার্বভৌম ইউক্রেন (Ukraine Annexation) রাষ্ট্রেরই অন্তর্ভুক্ত থাকবে। ইউক্রেনের তরফেও বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক আইন অমান্য করেই গণভোট করিয়েছে রাশিয়া। তাই এই ভোটের ফলাফলের কোনও গ্রহণযোগ্যতা নেই। তবে চারটি অঞ্চলের দখল নিজেদের কাছে রাখতে যেভাবে মরিয়া হয়ে উঠেছে রাশিয়া, তাতে যুদ্ধের গতি আরও বাড়বে বলেই ধারণা বিশেষজ্ঞদের।
বছরখানেক ধরেই রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যে নানা বিষয় নিয়ে অশান্তি লেগেছিল। তার মধ্যে অন্যতম ছিল দোনবাস অঞ্চল নিয়ে দুই দেশের বিবাদ। ঘটনাক্রমে বিধ্বংসী যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে দুই দেশ। প্রাথমিকভাবে সমগ্র ইউক্রেন দখলের লক্ষ্যেই এগোচ্ছিল রুশ সেনা। তবে দাঁতে দাঁত চেপে লড়াই করে দেশকে রাশিয়ার অধীনে যাওয়া থেকে আটকে দেন ইউক্রেনীয় সেনারা। পিছু হঠতে বাধ্য হয় রাশিয়া। সূত্র মারফত খবর ছড়িয়ে পড়ে, কেবলমাত্র দোনবাসকে লক্ষ্য করেই এগোবে রাশিয়া। ২০১৪ সালে ক্রিমিয়ার পরে ফের রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত হল ইউক্রেনীয় ভূখণ্ড।