সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দেখতে দেখতে পেরিয়ে গিয়েছে একসপ্তাহের বেশি সময়। মায়ানমারে ভয়াবহ কম্পনের রেশ এখনও পুরোমাত্রায় বহাল। মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে প্রায় সাড়ে তিন হাজারে। এই পরিস্থিতিতে আরও প্রতিকূলতা তৈরি করছে প্রাকৃতিক দুর্যোগ। বিশেষত সাগাইং ও মান্দালয়ে অসহায় পরিস্থিতিতে ১৭ লক্ষেরও বেশি মানুষ।
মায়ানমারের সরকারি সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, এখনও পর্যন্ত ভূমিকম্পে মৃত্যু হয়েছে ৩ হাজার ৪৭১ জনের। আহত ৪ হাজার ৬৭১। ২১৪ জনের এখনও খোঁজ নেই। বহু মানুষ গৃহহীন। কারও কারও বাড়ি এখনও টিকে থাকলেও প্রাকৃতিক রোষে তা ভঙ্গুর অবস্থায় রয়েছে। মান্দালয়ে বহু মানুষ বাড়ি থাকতেও বাড়ির মধ্যে থাকার সাহস পাচ্ছেন না। তাঁদের বাইরের টেন্টেই রাতে ঘুমোতে দেখা যাচ্ছে। বইছে তীব্র বাতাস। চলছে বৃষ্টি। যার জেরে প্রবল অসুবিধায় পড়তে দেখা যাচ্ছে তাঁদের। শনিবার অনেকেই বাধ্য হয়েছেন জীর্ণ বাড়ির ভিতরে থাকতে। জল-খাবারের অভাব রয়েছে। বিদ্যুৎহীনতায় অন্ধকারে ঢেকেছে বহু এলাকা। এদিকে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন, বৃষ্টির প্রাবল্য ও গরমের তীব্রতায় সাময়িক ভাবে শিবিরে আশ্রয় নেওয়া মানুষদের মধ্যে রোগের প্রকোপ বাড়তে পারে।
শুক্রবার সকালে তীব্র ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে মায়ানমার। রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ছিল ৭.৭। সে দেশের সাগাইং শহর থেকে ১৬ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল। ভারত, বাংলাদেশেও প্রভাব পড়ে এই ভূমিকম্পের। মায়ানমারের পাশাপাশি ভূমিকম্পে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয় থাইল্যান্ডও। সেখানেও ভেঙে পড়ে একের পর এক বহুতল, ব্রিজ। কয়েক মিনিটের ব্যবধানে ফের কম্পন অনুভূত হয়। সেই ‘আফটারশকে’র মাত্রা ছিল ৬.৭। এরপরও চলতে থাকে লাগাতার আফটারশক।
ভূবিজ্ঞানী জেস ফিনিক্স মায়ানমারকে সতর্ক করে জানিয়েছেন, ভূপৃষ্ঠের নিচে ইউরেশীয় প্লেটের সঙ্গে ভারতীয় প্লেটের সংঘর্ষ যেহেতু অব্যাহত রয়েছে, তাই আগামী কয়েক মাস ধরেই ‘আফটারশক’ চলতে থাকবে। ভূমিকম্পের তীব্রতা এতটাই ছিল যে ইরাবতী নদীর গতিপথ বদলে গিয়েছে। মায়ানমারকে ১৫ টন ত্রাণ পাঠিয়ে পাশে দাঁড়িয়েছে ভারত।