সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আগামী ৪ জুলাই ব্রিটেনে সাধারণ নির্বাচন। তার আগে বুধবার একটি টিভি চ্যানেলে বিতর্কসভায় অংশ নিলেন কনজারভেটিভ দলের নেতা ঋষি সুনাক (Rishi Sunak) এবং লেবার পার্টির নেতা তথা ব্রিটিশ পার্লামেন্টে বিরোধী দলনেতা কিয়ার স্টার্মার (Keir Starmer)। বিতর্কের বিষয় ছিল আয়কর আর অভিবাসন নীতি। বিতর্কসভার উত্তেজনা চরমে পৌঁছয়। দুই নেতাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে অনুষ্ঠানের সঞ্চালিকাকে রীতিমতো বেগ পেতে হয়।
সুনাক নিজেই নির্বাচনের সময় তিন মাস এগিয়ে আনলেও গদি হারাতে পারেন, বলছে ব্রিটেনের বিভিন্ন জনমত সমীক্ষা। কনজারভেটিভদের সামগ্রিক ফল খুব খারাপ হতে চলেছে বলে আশঙ্কা। পাশাপাশি লেবার পার্টির উত্থান হতে চলেছে বলে দাবি রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের। এই ভাবনার ছাপ পড়ল দুই নেতার টিভি বিতর্কেও। সুনককেই বেশি উত্তেজিত হয়ে চেঁচাতে দেখা গিয়েছে।
[আরও পড়ুন: লোকসভার বিরোধী দলনেতা পদে রাহুলকে চাইছে দল! রাজি হবেন সোনিয়াতনয়?]
সুনাক দাবি করেন, লেবার পার্টি ক্ষমতায় এলে সাধারণ মানুষের ঘাড়ে বিপুল করের বোঝা চাপাবে। স্বভাবতই সুনাকের বক্তব্য উড়িয়ে দেন স্টার্মার। লেবার পার্টিকে দুষে সাধারণ নাগরিকের উদ্দেশে সুনাকের বার্তা, "আপনার চাকরি, আপনার গাড়ি, আপনার পেনশন। সবেতে কর চাপাবে ওরা।" পালটা স্টার্মার বলেন, প্রধানমন্ত্রী নিজে অতিরিক্ত ধনী হওয়ায় সাধারণ মানুষের সমস্যা তাঁর কানে পৌঁছয় না। গত আট বছরে কনজারভেটিভদের পাঁচ বার প্রধানমন্ত্রী বদল নিয়েও কটাক্ষ করেন তিনি।
ব্রিটেনে বসবাসকারী ১৮ বছর বয়সি কিশোর-কিশোরীদের জন্য ২৫ দিনের ‘সমাজ সেবা’ (কমিউনিটি সার্ভিস) এবং সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়া বাধ্যতামূলক করার কথা বলেছেন সুনাক। দর্শকদের অবশ্য এই প্রস্তাব পছন্দ হয়নি। স্টার্মারও সেগুলির বিরোধিতা করেছেন। কনজারভেটিভদের উদার অভিবাসন নীতির সমালোচনা করেন স্টার্মার। অবৈধ ভাবে ব্রিটেনে প্রবেশ করা শরণার্থীদের রওয়ান্ডায় পাঠিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব এনেছে সুনাক সরকার। যা নিয়ে কম বিতর্ক হয়নি। টেলিভিশনে বিতর্কসভাতেও তারই ছাপ মিলল এদিন।
[আরও পড়ুন: গেরুয়া ঝড় থামিয়ে নজরকাড়া সাফল্য, কেমন হল অভিষেক-রাহুল-অখিলেশদের মার্কশিট?]
কনজারভেটিভ সুপ্রিমো সাফ জানিয়ে দিলেন, নিজের অবস্থান থেকে এক চুলও নড়বেন না তিনি। সুনাকের কথায়, আন্তর্জাতিক আইন ও মানবাধিকার সংক্রন্ত সমস্ত বিষয় বিধি মেনেই অভিবাসন নীতি পেশ করা হয়েছে। ব্রিটেন আন্তর্জাতিক আইনকে সম্মান করে। তবে মানবাধিকারের দোহাই দিয়ে অবৈধ শরণার্থীদের ব্রিটেনে শিকড় গাড়তে দেওয়ার কোনও প্রচেষ্টা মেনে নেওয়া হবে না। প্রয়োজনে জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে ইউরোপীয়ান মানবাধিকার কমিশন (ECHR) থেকেও বেরিয়ে আসবে ডাউনিং স্ট্রিট।
‘ইউ গভ’ নামে এক সমীক্ষা সংস্থা জানাচ্ছে, মাত্র ২ শতাংশ ভোটে এবারের বিতর্ক জিতেছেন সুনক। আগামী পরশু অন্য বিষয়ে হবে পরবর্তী বিতর্ক।