সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ সভায় ভাষণ দিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এই অধিবেশনে যোগ দিতে নিউ ইয়র্ক গিয়েছিলেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মহম্মদ ইউনুস। অধিবেশনের ফাঁকে মোদির সঙ্গে বৈঠক করতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু দুজনের দেখা না হলেও আলোচনা সেরেছেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর ও অন্তর্বর্তী সরকারের বিদেশ উপদেষ্টা মহম্মদ তৌহিদ হোসেন। গত দেড় মাসে পদ্মা দিয়ে অনেক জল বয়ে গিয়েছে বাংলাদেশে। ব্যাপক গণ আন্দোলনের জেরে প্রধানমন্ত্রীর গদি হারিয়েছেন শেখ হাসিনা। আওয়ামি লিগ সরকারের পতনের পর গঠিত হয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। আর এই রাজনৈতিক পালাবদলে ধাক্কা খেয়েছে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের গভীর বন্ধুত্ব। এই পরিস্থিতিতে প্রথমবার সাক্ষাৎ হল দুদেশের বিদেশমন্ত্রীর।
রাষ্ট্রসংঘের ৭৯তম সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিয়েছিলেন মোদি ও ইউনুস। ফোনে কথা হলেও এখনও পর্যন্ত সাক্ষাৎ হয়নি তাঁদের। কিন্তু নিউ ইয়র্কের স্থানীয় সময় অনুযায়ী সোমবার সন্ধ্যায় বৈঠকে বসেন জয়শংকর ও তৌহিদ। ভারত-বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা হয় দুজনের মধ্যে। যা নিয়ে এক্স হ্যান্ডেলে জয়শংকর লেখেন, 'নিউইয়র্কে বাংলাদেশের বিদেশ উপদেষ্টা মহম্মদ তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। দুদেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে আমাদের মধ্যে। আমরা নিজেদের মতামত বিনিময় করেছি।' বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রকের তরফেও এই বিষয়টি এক্স হ্যান্ডেলে জানানো হয়। ফলে এই বৈঠকে হাসিনা কিংবা বাংলাদেশের হিন্দুদের কোনও প্রসঙ্গই ওঠেনি।
গত ৫ আগস্ট বাংলাদেশে গণ অভ্যুত্থানের জেরে হাসিনা সরকারের পতন হয়। প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে বাংলাদেশ ছেড়েছেন শেখ হাসিনা। এখন আপাতত তিনি ভারতের আশ্রয়ে রয়েছেন। দিল্লির সেফ হাউস থেকেই নাকি আওয়ামি লিগের নেতা-কর্মীদের তিনি বার্তা দিচ্ছেন। মুজিবকন্যার বিরুদ্ধে তোপ দেগে তেমনই মন্তব্য করেছিলেন ইউনুস। এই মুহূর্তে হাসিনার চুপ থাকা উচিত বলে ক্ষোভপ্রকাশ করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা। এছাড়া হাসিনা দেশ ছাড়ার পর থেকে হামলার শিকার হন হিন্দু-সহ অন্যান্য সংখ্যালঘুরা। বিশেষ করে হিন্দুদের উপর আক্রমণের খাঁড়া নেমে আসে। বহু হিন্দুমন্দির ধ্বংস করে দেওয়ার অভিযোগও ওঠে।
এই প্রসঙ্গে পিটিআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ইউনুস বলেছিলেন, “হামলাগুলোর পিছনে রাজনৈতিক কারণ রয়েছে। এর পিছনে কোনও সাম্প্রদায়িকতা নেই। ভারত এই ঘটনাগুলোই এখন ব্যাপকভাবে প্রচার করছে। আমরা কখনও বলিনি যে আমরা কোনও পদক্ষেপ করিনি। হামলা রুখতে যা যা করণীয় আমরা তা সব করা হচ্ছে।” সূত্রের খবর, তাঁর এই মন্তব্যগুলো ভালোভাবে নেয়নি দিল্লি। রাষ্ট্রসংঘের অধিবেশনের ফাঁকে মোদির সঙ্গে বৈঠকে বসতে চেয়েছিলেন ইউনুস। যা নিয়ে ভারতের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে আবেদন জানানো হয় বাংলাদেশের তরফে। তাহলে কী তার কোনও সদর্থক উত্তর দেয়নি দিল্লি? তাই সাক্ষাৎ হয়নি মোদি-ইউনুসের। উঠছে এমন প্রশ্নও।