সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হয়েও হল না শাপমুক্তি। বছর দুয়েক আগে করোনা মহামারীর তাণ্ডবে যখন গোটা বিশ্ব ত্রস্ত ছিল, তখন সংক্রমণ দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছিল চিন। কিন্তু এবার পরিস্থিতি যেন ক্রমে হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে। একের পর এক শহরে দ্রুত বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। বিশেষ করে সাংহাই শহরের পরিস্থিতি শোচনীয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। সংক্রমিতদের আইসোলেশনে রাখার জন্য পর্যাপ্ত জায়গার অভাব দেখা দিয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে এবার শহরবাসীদের ঘর চেয়েছে প্রশাসন। আর এতে প্রবল ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা।
[আরও পড়ুন: শাহবাজের ‘বিদেশি সরকার’ ফেলতে প্রবাসী পাকিস্তানিদের কাছে টাকা চাইলেন ইমরান]
রয়টার্স সূত্রে খবর, সাংহাই শহরের আবাসনগুলিতে কোভিড সেন্টার তৈরি করছে প্রশাসন। এক নির্দেশিকা জারি করে স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, করোনা (Corona) আক্রান্তদের আইসোলেশনে রাখার জন্য ঘর ছাড়তে হবে বাসিন্দাদের। এই নির্দেশিকা পাওয়ার পর থেকেই ক্ষোভে ফুঁসছে সাংহাইবাসী। রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। পুলিশের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধও হয় শহরবাসীদের। বৃহস্পতিবার চিনা মেসেজিং অ্যাপ উইচ্যাটে লাইভ স্ট্রিম হওয়া একটি ভিডিও ঘিরে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। ওই ভিডিওতে দেখা গিয়েছে পিপিই কিট পরা অন্তত ৩০ জন পুলিশকর্মী এক আবাসনের বাসিন্দাদের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে পড়েন। একজনকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যেতেও দেখা যায়।
করোনা কালের সবচেয়ে কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছে চিন (China)। বাড়তে থাকা সংক্রমণকে রুখতে মরিয়া হয়ে সাংহাইয়ের (Shanghai) মতো শহরে জারি করা হয়েছে কড়া লকডাউন (Lockdown)। ফলে সম্পূর্ণ গৃহবন্দি গোটা শহর। কোনও অনুমতি নেই বাইরে বেরনোর। যার ফলে খাবার, জল ও অন্য়ান্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের অভাবে ধুঁকছে জনজীবন। পরিস্থিতি এমনই ভয়াবহ, বাধ্যত বহু বাড়ির জানলায় দাঁড়িয়ে আর্ত চিৎকার করতে দেখা গিয়েছে অনেককে। কয়েকদিন আগে ভাইরাল হওয়া সেই ভিডিও দেখে চমকে উঠছে নেটদুনিয়া।
২০২০ সালের ডিসেম্বরে ইউহান শহরেই প্রথম দেখা মিলেছিল নোভেল করোনা ভাইরাসের (Coronavirus)। কিন্তু এরপরও বাকি বিশ্বের মতো সংক্রমণের রক্তচক্ষু ততটা দেখেনি চিন। গত ২ বছরের মধ্যে সবচেয়ে কঠিন পরিস্থিতিতে পড়েছে চিন। ফলে সংক্রমণে যে করেই হোক রাশ টানতে মরিয়া প্রশাসন। আর সেই কারণেই এই লকডাউনের কড়া নির্দেশিকা। যার দৌলতে ঘর থেকে বেরতেই পারছেন না কেউ। ভাইরাল হওয়া ভিডিওয় দেখা গিয়েছে, চূড়ান্ত হতাশা ও অবসাদ থেকে জানলা কিংবা বারান্দায় বেরিয়ে এসে অনেকেই অসহায় চিৎকার করছেন। স্বাভাবিক ভাবেই তাই সংক্রমণ কমাতে মরিয়া প্রশাসন। কিন্তু সংক্রমণের রক্তচক্ষুর পাশাপাশি কড়া লকডাউনের ধাক্কাতেও বিপণ্ণ সাধারণ মানুষের জীবন।