সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মাসের পর মাস, বছরের পর বছর সীমান্তে অপেক্ষা। প্রিয়জন বিচ্ছিন্ন হয়ে চলে গিয়েছে ওপারে। একলা সঙ্গী সীমান্তের কাঁটাতারের জালে আটকে পড়েছেন। এটাই পরিচিত দৃশ্য আমেরিকা-মেক্সিকোর (US-Mexico border) সীমান্তে। শরণার্থীদের প্রবেশ ঠেকাতে সেখানে পাঁচিল তোলার সিদ্ধান্তে এককাট্টা ছিলেন সদ্যপ্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald Trump)। কিন্তু বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন (Joe Biden) হোয়াইট হাউসে প্রবেশের আগেই এই সংক্রান্ত নিয়ম শিথিল করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলে। সেইমতো প্রক্রিয়া শুরু হল শুক্রবার থেকে। সীমান্তে আটকে থাকা ব্যক্তিদের মার্কিন ভূখণ্ডে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হল। এভাবেই ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত বাতিলের কাজে হাত দিলেন বাইডেন।পরবর্তীতে আদালতে নির্ধারিত হবে এই শরণার্থীদের ভবিষ্যৎ।
দু’দেশের সীমান্তবর্তী শহর টেক্সাস, এল পাসো, সান দিয়েগো থেকে প্রচুর শরণার্থী আমেরিকার শরণাপন্ন হওয়ার জন্য অপেক্ষা করছেন। সংখ্যাটা কমবেশি ২৫০০০। এছাড়া আরও কয়েকশো মানুষ শরণার্থী হিসেবে আবেদন জানাতে চান। আগামী সপ্তাহ থেকে রাষ্ট্রসংঘে সেই আবেদন গৃহীত হবে। সে যাই হোক, শুক্রবারের দিনটা যে ট্রাম্প পরবর্তী আমেরিকার এক বিশেষ দিন, তেমনটা মনে করছেন আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা। কাঁটাতার খুলে সকলে মার্কিন ভূখণ্ডে প্রবেশের অনুমতি পেলেন। ঠিক হয়েছে, সীমান্তেই এঁদের সকলের কোভিড-১৯ পরীক্ষা হবে। যাঁদের রিপোর্ট পজিটিভ হবে, তাঁরা অন্তত ১০ দিন ওই সীমান্তেই কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। তারপরই আমেরিকায় প্রবেশাধিকার মিলবে।
[আরও পড়ুন: মায়ানমারে পুলিশের গুলিতে তরুণীর মৃত্যু, আরও বাড়ল আন্দোলনের আঁচ]
আসলে মেক্সিকো থেকে আমেরিকায় ঢুকে পড়ার প্রবণতা শরণার্থীদের বহু পুরনো। এভাবে বহু মেক্সিকান মার্কিন ছত্রছায়ায় নিজেদের জীবনে খানিকটা উন্নতি করেছেন। তবে ২০১৯ থেকে এ নিয়ে কড়া সিদ্ধান্ত নেন তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মেক্সিকো থেকে অনুপ্রবেশ রুখতে সীমান্তের পাঁচিল তোলা সংক্রান্ত বিলে সই করায় সেখানেই আটকে পড়েন বহু মানুষ।এমনও দেখা গিয়েছে, শিশুর থেকে মা, বাবাকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে। এভাবে ২ জনের মৃত্যুও হয়েছে। তবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারেই ডেমোক্র্যাট শিবিরের প্রার্থী জো বাইডেন এসবের বিরোধিতা করেছিলেন। ভোটে জিতে পদে বসে তিনি ট্রাম্পের সই করা সেই বিল ধাপে ধাপে বাতিলের পথেই হাঁটছেন। শুক্রবার থেকে মেক্সিকো সীমান্তে অপেক্ষারত শরণার্থীদের জন্য আমেরিকার দুয়ার খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তই তার প্রমাণ। শরণার্থীদের সকলের আশা, আমেরিকার মাটিতে তাঁদের আশ্রয় মিলবেই।