সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হবু মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সামনে নতজানু হয়ে বসে রয়েছেন ওয়াশিংটন পোস্টের মালিক জেফ বেজোস। তাঁর সঙ্গে রয়েছেন আমেরিকার বড় বড় শিল্পপতিরা। আমেরিকার সাম্প্রতিক অবস্থা তুলে ধরে এমনই কার্টুন ছবি এঁকেছিলেন ওয়াশিংটন পোস্টের পুলিৎজারজয়ী কার্টুনিস্ট অ্যান টেলনেস। তবে সে ছবি সংবাদপত্রে ছাপা না হওয়ায় চাকরিই ছেড়ে দিলেন তিনি। এমন কাণ্ডের জেরে বিশ্বের সংবাদমাধ্যমের শিরোনামে উঠে এলেন ওই কার্টুনিস্ট।
পুলিৎজারজয়ী কার্টুনিস্ট অ্যান টেলনেস সংবাদমাধ্যমের দুনিয়ায় এক উল্লেখযোগ্য নাম। বিশ্বের তাবড় তাবড় ব্যক্তিত্বের সমালোচনা করে তাঁর আঁকা কার্টুন বিপুল প্রশংসা অর্জন করেছে বিশ্বে। সম্প্রতি আমেরিকার হবু রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের আসন্ন কার্যকাল নিয়ে কটাক্ষ করে এক কার্টুন আঁকেন তিনি। যেখানে ই-কমার্স সংস্থা অ্যামাজন তথা ওয়াশিংটন পোস্ট সংবাদমাধ্যমের প্রধান জেফ বেজোস-সহ অন্যান্য প্রভাবশালী ব্যক্তিদের দেখা যায় ডোনাল্ড ট্রাম্পের মূর্তির সামনে নতজানু হয়ে বসে রয়েছেন। তবে সেই কার্টুন সংবাদপত্রে ছাপানো হয়নি। এতেই রীতিমতো ক্ষুব্ধ হন ওই কার্টুনিস্ট। অতঃপর এই ঘটনাকে 'সংবাদপত্রের স্বাধীনতার জন্য বিপজ্জনক' আখ্যা দিয়ে চাকরি থেকে ইস্তফা দেন তিনি।
বিতর্কিত ওই কার্টুনে বেজোসের পাশাপাশি দেখা গিয়েছে, মেটার সিইও মার্ক জুকারবার্গ, ওপেন এআইয়ের স্যাম অল্টম্যানের পাশাপাশি কার্টুন চরিত্র মিকি মাউসকে। মনে করা হচ্ছে, এখানে মিকি মাউসের মাধ্যমে আর এক মার্কিন সংবাদমাধ্যম এবিসি নিউজকে কটাক্ষ করেছেন। কারণ সম্প্রতি এক মানহানি মামলায় ট্রাম্পের সঙ্গে ১৫ মিলিয়ন ডলারের মাধ্যমে নিজেদের মধ্যে সমঝোতা করেছে সংস্থাটি। উল্লেখ্য, ২০০৮ সাল থেকে ওয়াশিংটন পোস্টে চাকরি করেন টেলনেস। তিনি বলেন, সম্প্রতি আমি যে কার্টুন জমা করেছিলাম তা নিয়ে সম্পাদক দলের অন্দরে মতভেদ ছিল। তবে কে কীভাবে দেখছে তাকে গুরুত্ব না দিয়ে সর্বদা সত্য তুলে ধরেছি। এরপর এমন ঘটনা ঘটলে সেখানে আমার না থাকাই ভালো।
উল্লেখ্য, জেফ বেজোস ওয়াশিংটন পোস্ট কিনে নেওয়ার পর এই সংবাদপত্রের নীতিতে বিরাট পরিবর্তন এনেছেন। অভিযোগ, এবারের মার্কিন নির্বাচনের শুরুতে কমলা হ্যারিসকে সমর্থনের পথে হাঁটলেও হাওয়া বুঝে ট্রাম্পের পক্ষ নেয় তাঁরা। এমনকি ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমালোচনা এড়িয়ে নজিরবিহীন প্রশংসায় ভরিয়ে দেয় তাঁরা। পক্ষপাতের এমন নজিরবিহীন ঘটনা তো ছিলই এবার সাম্প্রতিক ঘটনায় টেলনেসের ইস্তফা প্রশ্ন তুলে দিল এই সংবাদপত্রের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে। প্রসঙ্গত, সম্প্রতি এই সংবাদমাধ্যমেই ভারত বিরোধী একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। যেখানে মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মুইজ্জুর সরকার ফেলতে সেখানকার বিরোধীদল ভারতের 'র' এজেন্টদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল বলে দাবি করা হয়। যদিও সেই দাবি উড়িয়ে দেয় ভারত।