সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: টানা তিনদিনের বিক্ষোভ, প্রতিবাদের পর কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর কথায় অবশেষে আশ্বস্ত ভারতীয় কুস্তিগিররা। শুক্রবার গভীর রাতে আন্দোলত তুলে নিতে রাজি হন তাঁরা। জাতীয় কুস্তি ফেডারেশন সভাপতি ব্রিজভূষণ শরণ সিংয়ের বিরুদ্ধে ওঠা যৌন হেনস্তার অভিযোগ খতিয়ে দেখতে তৈরি হয়েছে তদন্ত কমিটি। সেই কমিটিতে আস্থা রেখেই আন্দোলন প্রত্যাহার করেন বজরং পুনিয়ারা। যদিও এ নিয়ে সিদ্ধান্তে পৌঁছতে কোনও তাড়াহুড়ো করতে নারাজ কমিটির সদস্যরা।
শুক্রবার কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুরের (Anurag Thakur) সঙ্গে বৈঠক করেন ভিনেশ ফোগাট, সাক্ষী মালিকরা। এরপরই জানানো হয়, যত দিন তদন্ত চলবে, ততদিন জাতীয় কুস্তি ফেডারেশনের সভাপতি পদে থাকতে পারবেন না ব্রিজভূষণ। ইন্ডিয়ান অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের (IOA) তরফে সাত সদস্যের কমিটিও গঠন করা হয়। অভিযুক্ত ফেডারেশন প্রধান ব্রিজভূষণ শরণের বিরুদ্ধে তদন্তের জন্য কমিটিতে রাখা হয়েছে মেরি কম, যোগেশ্বর দত্তের মতো অলিম্পিক পদকজয়ীদের। সঙ্গে দোলা বন্দ্যোপাধ্যায়, অলোকনন্দা অশোক, সহদেব যাদবের মতো ক্রীড়াবিদরাও রয়েছেন। সাত সদস্যের তদন্ত কমিটিতে আছেন দুই আইনজীবীও। প্রথমে জানানো হয়েছিল, চার সপ্তাহের মধ্যে এই মর্মে রিপোর্ট জমা দিতে হবে। কিন্তু পরবর্তীতে তারকা বক্সার মেরি কম জানান, ব্রিজভূষণকে নিয়ে কোনওপ্রকার সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে তাঁরা হুড়োহুড়ি করতে চান না। অর্থাৎ কোনও সময় বেঁধে দেওয়া যাবে না।
যদিও পিটি ঊষার নেতৃত্বাধীন কমিটির অন্যতম সদস্য যোগেশ্বর দত্তর দাবি, তদন্তে দুই পক্ষের যুক্তিই শোনা হবে। সবদিক বিচার করেই আগামী ৮-১০ দিনের মধ্যে ক্রীড়ামন্ত্রক, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক ও প্রধানমন্ত্রীকে রিপোর্ট জমা দেওয়া হবে। ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ মিথ্যে প্রমাণিত হলে, কেন এহেন অভিযোগ উঠেছে, তাও খতিয়ে দেখা হবে।
[আরও পড়ুন: ‘অনেকের দাবি ছিল ও নাকি শেষ’, রোনাল্ডোর দুরন্ত পারফরম্যান্সের পর নিন্দুকদের তোপ কোহলির]
এদিকে, শুক্রবার ব্রিজভূষণের সাংবাদিকদের মুখোমুখি হওয়ার কথা থাকলেও তিনি শেষমেশ তা বাতিল করে দেন। তাঁর দাবি, তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ আনা হচ্ছে। তাঁর ও বিজেপির ভাবমূর্তি নষ্ট করতেই এই ষড়যন্ত্র। পাশাপাশি তিনি সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দেবেন না বলেও স্পষ্ট জানিয়ে দেন ব্রিজভূষণ। রবিবার এই মর্মে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করবেন তিনি।
এর মাঝেই যৌন নির্যাতনের অভিযোগ এনেছেন মহিলা কুস্তিগির কবিতা দালাল। তিনি এখন ডব্লিউডব্লিউই-র প্রতিযোগী। জানিয়েছেন, নির্যাতনের কারণেই অন্য খেলায় চলে যেতে হয়েছে তাঁকে। যদিও বিতর্কের একাধিক ক্রীড়াবিদ দাবি করেছেন, যৌন হেনস্তার কোনও কথাই তাঁরা আগে কখনও শোনেননি। সব মিলিয়ে ফেডারেশন সভাপতিকে নিয়ে এখনও কাটেনি জটিলতা।