বিশ্বদীপ দে: প্রবাসী লেখক সিদ্ধার্থ দেবের ‘দ্য লাইট অ্যাট দ্য এন্ড অফ দ্য ওয়ার্ল্ড’ উপন্যাসটি ইতিমধ্য়েই সাড়া ফেলেছে। বৃহস্পতিবার বৃষ্টিময় কলকাতার রাসেল স্ট্রিটে আয়োজিত হল সেই উপন্যাস নিয়ে এক মনোজ্ঞ অনুষ্ঠান। নিজের উপন্যাস থেকে কিছু অংশ পড়ে শোনালেন লেখক। কথা বললেন, সঞ্চালক লেখক সন্দীপ রায়ের সঙ্গে। সবশেষে মেটালেন উপস্থিত দর্শকদের কৌতূহলও।
কলকাতা সিদ্ধার্থর জন্মভূমি নয়। শিলংয়ে জন্ম এবং বেড়ে ওঠা। ১৮ বছর বয়সে প্রথম এই শহরে আসা। স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করে ২৫ বছর বয়সে দিল্লি। পরে সেখান থেকে মার্কিন মুলুকে পাড়ি। থাকেন নিউ ইয়র্কের হার্লেমে। কখনও তাঁর লেখা আন্তর্জাতিক ডাবলিন লিটারারি অ্যাওয়ার্ডে লংলিস্টেড হয়েছে। শর্টলিস্টেড হয়েছে অরওয়েল পুরস্কারের জন্য। পেয়েছেন পেন ওপেন প্রাইজ।
[আরও পড়ুন: ‘বই লিখে কী লাভ?’ লেখালেখি থেকে অবসর নেবেন তসলিমা! পোস্ট ঘিরে জল্পনা]
সিদ্ধার্থর নতুন এই উপন্যাসে পুরনো কলকাতা বা অন্য ঐতিহাসিক প্রসঙ্গ এলেও তাঁর উপন্যাস কোনওভাবেই ঐতিহাসিক আখ্যান নয়। সিদ্ধার্থর প্রথম দুটি উপন্যাস ছিল উত্তর-পূর্ব ভারতের পটভূমিতে। কিন্তু তৃতীয় উপন্যাসে তিনি বাস্তবের ধার ঘেঁষেই তৈরি করেছেন অতিবাস্তব এক আখ্যান। সেই উপন্যাসে কখনও দেখা মেলে নোটবন্দি সময়কালের ভারতের। কখনও ৪৭-এর দাঙ্গা বিধ্বস্ত কলকাতার। আবার ১৯৮৪ সালের ভোপাল গ্যাস দুর্ঘটনা ছুঁয়ে উপন্যাস পাড়ি দেয় মহাবিদ্রোহের দুবছর পরের ভারতবর্ষে। এভাবেই বিভিন্ন সময়কাল ও নানা জঁরের মিশ্রণে তিনি ৭ বছর ধরে তিলে তিলে নির্মাণ করেছেন এই উচ্চাকাঙ্ক্ষী উপন্যাস। উপন্যাসে মিশেছে কিংবদন্তি মার্কিন সাহিত্যিক লাভক্রাফটের চিন্তন জগৎও। লেখাটিকে নির্দিষ্ট কোনও গোত্রে ফেলতে রাজি নন সিদ্ধার্থ। আসলে নিজেকে তিনি উপহার দিতে চেয়েছেন এমন এক উপন্যাস, যা তিনি পড়তে চেয়েছেন বহুদিন থেকে! কিন্তু পাননি। আর তাই নিজেই কল্পনা করে নিতে চেয়েছেন এক আশ্চর্য ভুবন। যে ভুবন, তাঁর মতে হয়তো এতদিন অদেখাই ছিল।
এমনই এক উপন্যাসের লেখক ঝটিকা সফরে ছুঁয়ে গেলেন প্রিয় শহরকে। কেমন লাগছে এখনকার শহরটাকে? উত্তরে সামান্য হেসে তিনি জানান, ‘ভিড় সামান্য বেড়েছে, গাড়ির সংখ্যাও। হয়তো বদলেছে অনেক কিছুই। তবুও আমার সেই তারুণ্যের কলকাতার মতোই রয়ে গিয়েছে শহরটা।’