সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: শ্বশুরবাড়ি থেকে বধূর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারের ঘটনায় চাঞ্চল্য। বধূর বাপের বাড়ির লোকজনের অভিযোগ, শ্বশুরবাড়ির লোকজনের পণের চাপে তরুণী আত্মঘাতী হয়েছেন। এই ঘটনায় মৃতার স্বামী ও শ্বশুরকে গ্রেপ্তার করেছে বজবজ থানার পুলিশ।
মৃতা বজবজ থানার চিংড়িপোতা গ্রাম পঞ্চায়েতের পশ্চিম রামেশ্বরপুরের বাসিন্দা জগদীশ দলুইয়ের মেয়ে বছর উনিশের কোয়েল দলুই মণ্ডল। বুইতা গ্রাম পঞ্চায়েতের চকগোপালের বাসিন্দা সমরেশ মণ্ডলের ছেলে সুমনের সঙ্গে সোশাল মিডিয়ায় প্রথমে আলাপ। ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয় মাত্র কয়েকদিনেই। তার পরই বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন দুজনে। কোয়েলের পরিবারের অভিযোগ, বিয়ের মাসতিনেক পর থেকেই বাপের বাড়ি থেকে টাকা আনার জন্য চাপ দেওয়া হত তরুণীকে। শারীরিক অত্যাচারও করা হয়। কোয়েলের স্বামী সুমন একটি মশলা প্রস্তুতকারক সংস্থায় কর্মরত। অন্য এক মহিলার সঙ্গে তিনি পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন বলেও দাবি কোয়েলের পরিবারের। তাতে অশান্তি আরও বাড়তে থাকে।
[আরও পড়ুন: নকল লটারির টিকিট নিয়ে পুরস্কার আনতে গিয়ে বিপত্তি! ২ যুবককে ‘গণধোলাই’ উত্তেজিত জনতার]
বছরখানেক আগে পারিবারিক অশান্তির জেরে কোয়েল তার বাপের বাড়ি চলে যান। সেখানেই বেশ কিছুদিন ছিল। ইতিমধ্যে তরুণী স্থানীয় এক বিউটি পার্লারে চাকরি করতেও শুরু করেন। অভিযোগ, মাস তিন-চারেক আগে সুমন তাঁর স্ত্রীর বাপের বাড়িতে আসেন। কোয়েলের পরিবারের কাছে ক্ষমা চেয়ে নেন। কোয়েলকে নিয়ে নিজের বাড়িতেও ফিরে যান সঞ্জয়। বৃহস্পতিবার রাতে সুমনের পাড়ার লোকজনেরা কোয়েলের বাড়িতে ফোন করেন। তাঁরাই তরুণীর মৃত্যুসংবাদ কোয়েলের বাপের বাড়িতে জানান। বজবজ থানায় পৌঁছন কোয়েলের পরিবারের লোকজন। তাঁরা জানতে পারেন, গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন কোয়েল।
গৃহবধূর বাবা পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। তাঁর অভিযোগ, পণের দাবিতে তাঁর মেয়ের উপর লাগাতার শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাতেন স্বামী শ্বশুর-শাশুড়ি। গত বুধবারও কোয়েলকে মারধর করা হয় বলে তার অভিযোগ। অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করেছেন তাঁর মেয়ে। অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ মৃতার স্বামী ও শ্বশুরকে গ্রেপ্তার করেছে। আলিপুর আদালতে তোলা হলে অভিযুক্ত দুজনের পাঁচদিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেয় আদালত।