অর্ণব দাস, বারাকপুর: বর্ষবরণের রাতে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে প্রস্তুত ছিল পুলিশ। তবুও কোথাও কোথাও বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটলই। যেমন বেপরোয়াভাবে বাইক চালানোর প্রতিবাদ করায় প্রাণ গেল এক যুবকের। আবার স্ত্রীকে কটুক্তির প্রতিবাদ করায় বেধড়ক মার জুটল স্বামীর কপালে। ঘটনাগুলি ঘটেছে উত্তরের শহরতলির বরানগর এবং বারাসত এলাকায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার রাতে বনহুগলির লেকভিউ পার্ক সংলগ্ন এলাকার স্থানীয় একটি ক্লাবের সদস্যরা বর্ষবরণ উদযাপন করছিলেন। সেই সময় ক্লাবের সামনের রাস্তা দিয়ে মদ্যপ অবস্থায় দ্রুতগতিতে বেপরোয়াভাবে বাইকে চালিয়ে যাচ্ছিল দুই যুবক। প্রতিবাদ করায় বাইক আরোহীদের সঙ্গে বচসায় জড়ান ক্লাবের সদস্যরা। অভিযোগ, বচসা চলাকালীন ক্লাব সদস্য মৃন্ময় বসুকে (২৭) ধাক্কা দেয় অভিযুক্ত দুই বাইক আরোহী। তখনই ওই রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিল একটি ট্রাক। আরোহীদের ধাক্কায় প্রতিবাদী যুবক মৃন্ময় ওই ট্রাকের চাকার সামনে এসে পড়েন। সঙ্গে সঙ্গেই পিষ্ট হন তিনি।
[আরও পড়ুন: COVID-19 Vaccine: নিজস্ব মোবাইল নেই, কীভাবে কোভিড টিকার রেজিস্ট্রেশন করবে ১৫ ঊর্ধ্বরা?]
তড়িঘড়ি তাঁকে উদ্ধার করে বরানগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করে। প্রতিবাদে সরব হয়েছেন মৃত যুবকের বন্ধুরা। মৃতের পরিবারের পক্ষ থেকে বরানগর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, দুজনের নামে লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
অন্যদিকে, বারাসত শেঠপুকুর সংলগ্ন শিবানন্দ পল্লির বাসিন্দা সৃজিত বর্ধন শুক্রবার রাতে তাঁর স্ত্রীকে নিয়ে ফিরছিলেন। বেলতলায় এক বন্ধুর বাড়ি গিয়েছিলেন তাঁরা। রাত ১টা নাগাদ ফিরছিলেন তাঁরা। সেইসময় এক যুবক তাঁদের মুখের উপর টর্চের আলো ফেলে। অভিযোগ, এরপর একদল যুবক সৃজিতের স্ত্রীকে কটূক্তি করে। প্রতিবাদ করায় সৃজিতকে মারধর করা হয়। এমনকী, দম্পতির দু’টি মোবাইল ভেঙে দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ। কোনওরকমে বাড়ি পৌঁছলে আবাসনের সামনেও দুই বাইক আরোহী যুবক তাঁদের হুমকি দেয় বলে দাবি দম্পতির। শনিবার বিকেলে এই বিষয়ে বারাসত থানায় লিখিত অভিযোগ জানানো হয়। এই ঘটনা ফের একবার উসকে দিল বছর দশেক আগের প্রতিবাদী যুবকের ভয়াবহ পরিণতির স্মৃতি। দিদির সম্ভ্রম রক্ষা করতে গিয়ে খুন হয়েছিল ভাই রাজীব দাস।
[আরও পড়ুন: COVID-19: কোভিড আক্রান্ত রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, মৃদু উপসর্গ নিয়ে ভরতি হাসপাতালে]
এবিষয়ে বারাসত পুরসভার পুরপ্রশাসক সুনীল মুখোপাধ্যায় বলেন, “বারাসতে এই ধরনের ঘটনা কাম্য নয়। আমি তাদের বলেছি পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাতে। পুলিশ আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে।” বিষয়টি খোঁজ নেবেন বলে জানিয়েছেন বারাসত পুলিশ জেলা সুপার।